“হ্যাঁ… হ্যাঁ, ওই চুরি করেছে” চিৎকার করে বলে উঠলেন মালিক-গিন্নি।
“তুই শেষে চুরি করলি” হতাশার সুর মালিকের কন্ঠে। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পাশে রাখা ভাঙা চেয়ারে বসে পড়লেন।
ছেলেটি ঘাড় নেড়ে না বলল।
“ও মিথ্যে কথা বলছে” মালিক-গিন্নি কর্কশ কন্ঠে বলল।
“না” ছেলেটি চোখে চোখ রেখে দৃঢ়ভাবে বলল।
দেখছো কেমন চোখ দেখাচ্ছে। চুরি করে আবার গলা বাজি করছে।” আঙুল উঁচিয়ে মালিক গিন্নি বলল।
মালিক বললেন, এ অশান্তি আর ভালো লাগে না। বল বাবা… নিয়ে থাকলে দিয়ে দে… সকালে কত কাজ থাকে… একটু পরেই খদ্দের আসা শুরু হবে।” কোমল গলায় মালিক বলল।
“আমি নিই নি” ছেলেটি আবার বলল।
মালিক-গিন্নি ছেলেটির গালে সজোরে একটা চড় কষাতেই ছিটকে পড়ে গেল ছেলেটা। টেবিলের কানায় কেটে গেল তার কপাল।
ছুটে গেলেন মালিক, “আহা কী করছো… কী করছো। বাচ্চা তো।”
“বাচ্চা নয়? ও একটা চোর। আমার নতুন সোনার আংটি ওই চুরি করেছে।” হাত নাড়তে নাড়তে বলল মালিক-গিন্নি।
কাটা জায়গাতে একটু চুন লাগিয়ে দিয়ে মালিক বললেন, “সত্যি কথাটা বলে দে বাবা।”
“না আমি নিই নি।” ছেলেটি চোখ মুছতে মুছতে বলল।
“ও বলবে না। দেখো কোথায় বিক্রি করে দিয়েছে।” দাঁতে দাঁত চেপে বলল মালিক-গিন্নি।
“আহা… থামো না। আমি তো কথা বলছি” বিরক্ত হয়ে মালিক বললেন।
“বলে দে বাবা। খামোকা অশান্তি ভাল্ লাগে না” মালিক নরম গলায় বললেন।
ছেলেটি নিজের মাথায় হাত রেখে বলল, “দিব্যি কেটে বলচি আমি নিই নি।”
“ও বলবে না। সোজা আঙুলে কি আর ঘি ওঠে। দূর হ”, কথাটা বলেই মালিক-গিন্নি সজোরে ঠেলে দিল ছেলেটিকে। ছেলেটি গিয়ে পড়ল একেবারে রাস্তার মাঝখানে। নিমেষে পিষে গেল চলন্ত ট্রাকের চাকায়। আশেপাশে লোকজন ছুটে গেল। মালিক কপালে হাত দিয়ে বসে পড়লেন। মালিক-গিন্নি নির্বাক।
“মা… মা… কী… কী হয়েছে? ওখানে এত লোক কেন?” বই-এর ব্যাগটা রাখতে রাখতে মেয়েটি প্রশ্ন করল। মেয়ের ডাকে সম্বিত ফিরে পেয়ে মালিক-গিন্নি দেখলেন তার মেয়ের অনামিকায় জ্বল জ্বল করছে সেই সোনার আংটিটি।
✍️এই নিবন্ধটি সাময়িকীর সুন্দর এবং সহজ জমা ফর্ম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। আপনার লেখা জমাদিন!