Religion [রিলিজন] n. শাস্ত্রবিশ্বাস, বিবেকের বিষয়, আশ্রমজীবন (ব্যাপ) যার যার সাম্প্রদায়িক ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস। একটি অলৌকিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস করা ও তার পূজা করা। বিশেষ করে প্রত্যেকের একেকজন ব্যক্তিগত ঈশ্বর বা দেবতায় বিশ্বাস করা {ই.}
ইংরেজি Religion পরিভাষাটির অর্থ ছিল “একটি অলৌকিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস করা ও তার পূজা করা। বিশেষ করে প্রত্যেকের একেকজন ব্যক্তিগত ঈশ্বর বা দেবতায় বিশ্বাস করা।” অর্থাৎ; প্রাইভেট লর্ড বা পারসোনাল লর্ড। যেমন; মেয়ের ঈশ্বর তার বয়ফ্রেন্ড, ছেলের ঈশ্বর তার গার্ল ফ্রেণ্ড, বাবার ঈশ্বর টাকা, মায়ের ঈশ্বর সংসার ইত্যাদি। তবে; বর্তমানকালে Religion অর্থ ধর্ম না ভেবে উপায় নেই। কারণ; বর্তমানকালের সাম্প্রদায়িক ঠাক-পুরুৎ, মোল্লা-মুন্সি, বৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকরা স্বস্ব পুস্তক-পুস্তিকায় ধর্ম পরিভাষাটির ইংরেজি Religion এবং Religion পরিভাষাটির বাংলা ধর্ম লিখে সব লেজে গোবরে করে ফেলেছে।
[তখনো পর্যন্ত বৌদ্ধ বা জৈন মতবাদ কোনো পৃথক মতবাদ রূপে গড়ে ওঠে নি। এমনকি; আজকের ধারনায় যা ধর্মীয় মতবাদ, ঠিক তেমনিভাবে ব্রাহ্মণ্য মতবাদকেও ধর্মীয় মতবাদ বলা যেত না। পাঠকগণ বিভ্রান্ত হতে পারেন; তাই পরিস্কার করে বলা প্রয়োজন। আজ আমরা ধর্মীয় মতবাদের ইংরেজি বলতে Religionকে বুঝি। কিন্তু সেযুগে Religion সম্বন্ধে কোনো ধারনাই ভারতীয় মানসে ছিল না। Religion হলো একটি আব্রাহামিক ধারনা। বর্তমানকালে যার প্রতিশব্দ বলছি ধর্ম। কিন্তু সে সময় জীবনযাপনের জন্য মানুষের প্রয়োজনীয় আদর্শকেই মতবাদ বলা হতো। সুতরাং; আমরা একথা বলতেই পারি যে; হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও অন্যান্য ভারতীয় মতবাদগুলো Religion-ই নয়। বরঞ্চ এগুলো Religion-এর থেকে অবশ্যই অধিক কিছু। way of life… (তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট) (নাগরিক)।
এছাড়াও; Religion এর বর্তমানকালের অর্থ হচ্ছে ধর্ম, ধর্মাচরণ, আস্তিকতা, সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস। Religion এর আদি অর্থ ও বর্তমানকালের প্রচলিত অর্থ দ্বারাও বহুঈশ্বর, নিরিশ্বর ও সর্বেশ্বরবাদী মতবাদগুলোকে Religion বলা যায় না। কারণ; Religion অর্থ একক ঈশ্বরে বিশ্বাস করা। অর্থাৎ; স্বস্ব বা ব্যক্তিগত ঈশ্বরে বিশ্বাস করা। যার যার ব্যক্তিগত ঈশ্বরে বিশ্বাস করা।
অর্থাৎ; কারো ঈশ্বর বিবাহিত ও সন্তানাদি আছে (হিন্দু মতবাদ; নারায়ণ ও মনু ব্রহ্মার মানসপুত্র এবং লক্ষ্মী মানসী কন্যা), কারো ঈশ্বর অবিবাহিত ও সন্তানাদি নেই (ইসলামী মতবাদ; আল্লাহ)। আবার কারো ঈশ্বর ক্ষেত্রজপুত্র উৎপাদন করেছেন। যেমন; খ্রিস্টানদের একাংশের মতে ইসা ঈশ্বরের পুত্র। কারো ঈশ্বর মানুষের রূপধারণ করে (Non semitism). আবার কারো ঈশ্বর মানুষের রূপধারণ করে না (Semitism)। কোনো মতবাদে একাধিক ঈশ্বর। একে বলা হয় বহুঈশ্বরবাদ। আবার; কোনো মতবাদে সবকিছুই ঈশ্বর। একে বলা হয় সর্বেশ্বরবাদ। আবার; কোনো মতবাদে একক কোনো ঈশ্বরই নেই। একে বলা হয় নিরিশ্বরবাদ। এত জানা বুঝার পর; একজন অন্যজনের ভুয়া ঈশ্বরতন্ত্র মান্য করবেইবা কেনো? আর একেকজনের ভুয়া ঈশ্বর অন্যজন না মানলেই সে নাস্তিক, যবন ও কাফির হবেইবা কেনো? যারা ভুয়া ঈশ্বরতন্ত্র মানবে তারাই হবে আস্তিক। এমন হতেই পারে না। তাই; আজ আমাদেরকে প্রকৃত ধর্ম সম্পর্কে জানতে হবে। যেমন, মতবাদকে ধর্ম বলা যাবে না।
তেমনিভাবে ধর্মকেও মতবাদ বলা যাবে না। কারণ, ধর্ম হলো পদার্থবিজ্ঞানের একটি পরিভাষা। পদার্থবিজ্ঞানে পদার্থ বা বস্তুর বৈশিষ্ট্যকে ধর্ম বলা হয়। যেমন, আগুনের ধর্ম পুড়ানো, চুম্বকের ধর্ম লোহাজাতীয় বস্তুকে আকর্ষণ করা ইত্যাদি। সেজন্য, ধর্ম হচ্ছে পদার্থের গুণাগুণ। ধর্ম হচ্ছে পদার্থের বৈশিষ্ট্য। ধর্ম হচ্ছে আদি, অনন্ত, চিরন্তন, অপরিবর্তনীয়। কিন্তু বর্তমানকালে যাকে ধর্ম বলা হচ্ছে। তা কখনোই ধর্ম নয়। বরং তা হলো মতবাদ বা সাম্প্রদায়িক মতবাদ। আর মতবাদ বা সাম্প্রদায়িক মতবাদ চির আপেক্ষিক, চির পরিবর্তনশীল, সদা বিবর্তনশীল ও সংযোজন-বিয়োজনশীল। তাই মতবাদ বা সাম্প্রদায়িক মতবাদকে কোনক্রমেই ধর্ম রূপে গ্রহণ করা যাবে না। আবার, মতবাদকে বা সাম্প্রদায়িক মতবাদকে ঘৃণা করতে গিয়ে ধর্মকে ঘৃণা করা যাবে না। ঠিক তেমনিভাবে মতবাদকে বা সাম্প্রদায়িক মতবাদকে গালি দিতে গিয়ে ধর্মকে গালি দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ, ধর্মকে ঘৃণা করার অর্থই হলো চিরসত্যকে বা চিরন্তনাতকে ঘৃণা করা। তেমনিভাবে, ধর্মকে গালি দেওয়া অর্থই হচ্ছে চিরসত্যকে বা চিরন্তনাতকে গালি দেওয়া। অর্থাৎ, চির সত্যকে ঘৃণা করা বা চিরসত্যকে অস্বীকার করা।