গাজায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলা, শিশুসহ নিহত ২৯
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উপত্যকাটির রাফাহ শহরের বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবনে রাতের আঁধারে চালানো হামলায় তারা প্রাণ হারান।
নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। এছাড়া এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রাতের আঁধারে গাজা উপত্যকার মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ গাজায় রাফাহ শহরে রাতের হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি হামলায় শহরের ওই এলাকার তিনটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। হামলার পর প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ৯ জন বলে জানানো হলেও পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ জনে। মূলত ধ্বংসস্তূপ থেকে একে একে লোকদের টেনে তোলার পর মৃতের সংখ্যা ২৯ জনে পৌঁছায়।
ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মানুষ আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আল জাজিরা বলছে, গাজা উপত্যকার কেন্দ্রীয় অংশ থেকেও আরও প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দেইর আল-বালাহ, আল-মাগাজি এবং আল-বুরেজ শরণার্থী শিবিরও রয়েছে। এসব এলাকায়ও আবাসিক ভবনগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
এদিকে ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসে রাতের আঁধারে এক ফিলিস্তিনি বন্দির বাড়ি উড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ফিলিস্তিনি এই নিউজ আউটলেটটি জানিয়েছে, ওসামা বানি ফাদল নামে ওই বন্দির বাড়ি আকরাবা শহরের একটি তিনতলা ভবনে অবস্থিত ছিল। এছাড়া হেবরন, জেনিন এবং তুলকারেমেও অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
অন্যদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘে ক্রমবর্ধমান আহ্বানের সম্মুখীন হয়েছে ইসরায়েল। আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আরেক দফা বৈশ্বিক চাপের মুখোমুখি হয়েছে। নতুন কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত নতুন ভোটাভুটি হতে পারে।
যদিও এর আগে গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাব কয়েকদিন আগেই ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকে টানা প্রায় আড়াই মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি এই আগ্রাসনের নিহত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৫২ হাজারের বেশি মানুষ।