কপ-২৮ সম্মেলন: শুরুতেই গরিব দেশগুলোর জন্য তহবিলের প্রতিশ্রুতি
জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত গরিব দেশগুলোকে সহায়তায় নতুন ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল দিতে এবারের কপ২৮ জলবায়ু সম্মেলনে প্রতিশ্রুতিব্ধ হয়েছে প্রতিনিধিরা।
দুবাইয়ে বৃহস্পতিবারের এ সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলো ৪২ কোটি ডলার তহবিল গরিব দেশগুলোর জন্য বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
প্রথমেই যারা তহবিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাদের মধ্যে আছে- সম্মেলনের আয়োজক দেশ ইউনাইটেড আরব আমিরাত (ইউএই) ১০ কোটি ডলার, যুক্তরাজ্য ৬ কোটি পাউন্ড, যুক্তরাষ্ট্র ১ কোটি ৭৫ লাখ ডলার এবং জাপান ১ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নও ২৪ কোটি ৫৩৯ লাখ ডলার এবং জার্মানি ১০ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট সুলতান আহমেদ আল-জাবের এই অগ্রগতিকে ‘অনন্য এক মাইলফলক’ বলে প্রশংসা করেছেন। সম্মেলনের প্রথম দিনের শুরুটা খুবই চমৎকারভাবে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
জাবের বলেন, গরিব দেশগুলোকে তহবিল দেওয়ার “এ সিদ্ধান্ত বিশ্বকে এই মুহূর্তের এবং দুবাইয়ে আমাদের কাজের ইতিবাচক সংকেত দিচ্ছে।”
বিশ্বের দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরন আরও অনেক কমিয়ে আনাসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের সক্ষমতা তিনগুণ বাড়ানোরও আহ্বান জানান তিনি।
কপ২৮ সম্মেলন চলবে দুই সপ্তাহ। এর প্রথম দিনেই বিভিন্ন দেশের ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়াকে সম্মেলনের আগাম একটি অর্জন হিসাবে দেখা হচেছ।
এই তহবিল বছরের পর বছর ধরেই বিতর্কিত বিষয় হয়ে ছিল। গরিব দেশগুলো ৩০ বছর ধরে বিশ্ব ঊষ্ণায়নের কারণে তাদের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ধনী দেশগুলোকে সহায়তা দেওয়ার জন্য তাগাদা দিয়ে এসেছে।
ধনী দেশগুলোর দীর্ঘদিনের গড়িমসির মধ্যে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল গঠনের চুক্তি হয় তগবারের কপ-২৭ সম্মেলনে। এবার সেই তহবিল বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি আসার পর আগামী দিনগুলোতে অন্যান্য বিষয়ে আপোসরফা সহজ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
জার্মানির জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জেনিফার মর্গান বলেছেন, তহবিলের বিষয়টি গৃহীত হওয়ায় এখন আমরা বৈশ্বিক সংভার-গণন (স্টকটেক) এবং জীবাশ্ম জ্বালানি ধীরে ধীরে দূর করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা অর্জনের দিকে মনোনিবেশ করতে পারব।”
তবে অন্যান্য অনেকেই তহবিলের বিষয়টি নিয়ে বেশি আনন্দিত হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এখনও অমীমাংসিত অনেক বিষয় রয়ে গেছে। ভবিষ্যতে এই তহবিল কিভাবে কাজে লাগানো হবে ভেবে দেখার বিষয় সেটিও।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হওয়া কোন ক্ষতিগুলো ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ ধরা হবে সেটি এখনও নির্ধারিত নয়। কারা সেই অর্থ পাবে তা বিতর্কিত। কোন কোন দেশ দুর্যোগ ক্ষতি কাটিয়ে উঠার তহবিল দেওয়ার জন্য বিবেচ্য হবে তাও নির্ধারণ করতে হবে। এ সব বিষয় সুরাহা হতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে।