এক জিম্মি হামাসের কাছ থেকে পালিয়ে গাজায় ৪ দিন লুকিয়ে ছিলেন
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রবেশ করে মরুভূমিতে অনুষ্ঠিত সুপারনোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে হামলা চালিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা। ওই হামলায় কয়েক শ মানুষকে হত্যার পাশাপাশি শতাধিক মানুষকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যায় যোদ্ধারা। সুপারনোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে সাউন্ড টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করছিলেন ২৫ বছর বয়সী রনি ক্রিভোই। তাঁকেও অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত রোববার যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের মধ্যে রনিও ছিলেন। তবে মুক্তি পাওয়ার আগের দিনগুলোতে হামাস যোদ্ধাদের কাছ থেকে তিনি একবার পালিয়েছেন। শুধু তাই নয়, একদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণ, অন্যদিকে হামাস যোদ্ধাদের চোখ এড়িয়ে টানা চার দিন গাজায় আত্মগোপন করেছিলেন তিনি।
রনির ফুফু ইলেনা ম্যাগিড ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলোকে জানিয়েছেন, গাজায় রনিকে একটি ভবনের ভেতর জিম্মি করে রেখেছিল হামাস যোদ্ধারা। কিন্তু ওই ভবনটি ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে যায়। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতির মধ্যেই হামাস সদস্যদের কাছ থেকে পালান রনি।
পালানোর পর গাজার সীমান্তবর্তী এলাকায় পৌঁছানোর পরিকল্পনা করেন রনি। কিন্তু তিনি জানতেন না গাজার কোথায় তাঁর অবস্থান, কোন দিকে যেতে হবে। গাজার উঁচু-নিচু ভবন আর অলিগলি রাস্তায় সব তালগোল পাকিয়ে যায় তাঁর। পরে বিধ্বস্ত বাড়িঘর এবং ইট-কংক্রিটের ফাঁকফোকরে টানা চার দিন লুকিয়ে থাকেন তিনি। একপর্যায়ে গাজার কয়েকজন সাধারণ মানুষের নজরে পড়ে যান। তাঁরাই রনিকে আবারও হামাস যোদ্ধাদের কাছে নিয়ে যান।
ইলেনা ম্যাগিড আরও জানান, জিম্মি হওয়ার আগে গত ৭ অক্টোবর ভোরে হামলার সময় সুপারনোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন রনি। তিনি একটি গর্তের ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। কিন্তু তাঁর এক বন্ধু সেদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে ফোন করে ‘রনি. . রনি’ সম্বোধন করলে ওপাশ থেকে কেউ হেসে ওঠেন এবং ফোনটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
প্রাথমিকভাবে রনির পরিবার জানতই না যে তাঁর কী হয়েছে। এক সপ্তাহ পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী রনির জিম্মি অবস্থার কথা তাঁদের জানায়।
জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে বর্তমানে ইসরায়েলে অবস্থান করছেন রনি ক্রিভোই। তাঁর মাথায় কয়েকটি সেলাই আছে। এর বাইরে তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ ও সবল রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফুফু ইলেনা।
ইসরায়েলে জন্ম নেওয়া রনির বাবা-মায়ের রুশ নাগরিকত্ব ছিল। সেই হিসেবে একজন রাশিয়ান ভেবে রনিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। গত রোববার ১৪ জনকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হয়েছে—১৩ জন ইসরায়েলি ও আরও একজন। তবে এটিতে দুঃখ পেয়েছেন রনির ফুফু ইলেনা। রনি একজন আপাদমস্তক ইসরায়েলি বলে দাবি করেন তিনি।