বন্দিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা নির্যাতন করেনি হামাস: ইসরায়েলি মিডিয়া

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

বন্দিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা নির্যাতন করেনি হামাস: ইসরায়েলি মিডিয়া

টানা দেড় মাসের সংঘাতের পর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে এখন যুদ্ধবিরতি চলছে। কয়েকদিন আগে শুরু হওয়া এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এখন পর্যন্ত ৫০ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।

তবে গাজা থেকে মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি বন্দিদের কোনও ধরনের নির্যাতন বা তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়নি। ইসরায়েলি মিডিয়াই এই তথ্য সামনে এনেছে। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা থেকে মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি বন্দিদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো দুর্ব্যবহার বা নির্যাতন করেনি বলে সোমবার ইসরায়েলি মিডিয়া জানিয়েছে।

ইসরায়েলি চ্যানেল ১২ বলেছে, তারা হামাসের কাছ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ইসরায়েলি বন্দিদের বেশ কয়েকজন আত্মীয়ের সাথে দেখা করেছে। তারা নিশ্চিত করেছে, বন্দি থাকার সময় হামাস সদস্যদের কাছ থেকে তারা কোনও ধরনের নির্যাতন বা খারাপ আচরণের সম্মুখীন হয়নি।

- বিজ্ঞাপন -

চ্যানেলটি অবশ্য বলেছে, গাজায় আটক থাকার সময় বন্দিরা সীমিত পরিমাণে খাবার পেয়েছে। চ্যানেলটি জানিয়েছে, ‘গত দুই সপ্তাহে গাজায় খাবারের আইটেম প্রায় ফুরিয়ে গিয়েছিল। তাই বন্দিদের অল্প পরিমাণে ভাত খেতে হয়েছিল এবং তারা খুবই ক্ষুধার্ত ছিল।’

বন্দিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা নির্যাতন করেনি হামাস: ইসরায়েলি মিডিয়া
পরিবারের কাছে ফিরেছে ফিলিস্তিনি বন্দী। ছবি এএফপি

আনাদোলু বলছে, ইসরায়েল এখনও মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে দিচ্ছে না। তবে গাজায় বন্দি থাকা ব্যক্তিদের কয়েকজন আত্মীয় তাদের নাম উল্লেখ না করে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন।

এছাড়া গাজার বন্দিদের ইসরায়েলি রেডিও চ্যানেল শোনার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের পরীক্ষা করা একজন ইসরায়েলি ডাক্তার বলেছেন, বন্দি থাকার সময় তারা ভাত, ছোলা, মটরশুটি ও রুটির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং এতে করে তাদের মধ্যে কয়েকজনের ওজন হ্রাস পেয়েছে।

ওই ডাক্তার বলেছেন, ‘বন্দিদের মধ্যে একজন ২০ কেজি ওজন কমিয়েছে, একজনের ৯ কেজি এবং অন্য একজনের ১২ কেজি ওজন কমেছে।’

অবশ্য এর আগে হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া ভেটন ফুমে নামে থাইল্যান্ডের এক নাগরিকও নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের শিকার না হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি কাজের উদ্দেশ্যে ইসরায়েলে গিয়েছিলেন। গত ৭ অক্টোবর হামলা চালিয়ে ভেটন ফুমেসহ বেশ কয়েকজন থাই নাগরিককে ধরে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।

- বিজ্ঞাপন -
বন্দিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা নির্যাতন করেনি হামাস: ইসরায়েলি মিডিয়া
ধ্বংসাবশেষে উপর দাড়িয়ে আছেন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি সংগৃহীত

তবে গাজায় নিয়ে গিয়ে তাদের ওপর কোনও অত্যাচার বা নির্যাতন চালানো হয়নি বলে জানান বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া ভেটন ফুমের বোন রোনগারুন ওইচানগুয়েন। তিনি জানান, তার ভাইকে কোনও ধরনের মারধর তো করা হয়ইনি; উল্টো ভালো খাবার খাওয়ানো হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, তার মনে হয়েছে- তার ভাইয়ের খুব ভালো যত্ন নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘তার চেহারা খুব হাসিখুশি ছিল এবং তাকে দেখে মনে হয়েছে সে ভালো আছে। সে জানিয়েছে- তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়নি অথবা আঘাত করা হয়নি এবং তাকে ভালো খাবার খাওয়ানো হয়েছে।’

মুক্তি পাওয়া ওই থাই বন্দির বোন আরও বলেন, ‘তার খুব ভালো যত্ন নেওয়া হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে সে যেন কোনও বাড়িতে ছিল; সুড়ঙ্গে নয়।’

- বিজ্ঞাপন -

উল্লেখ্য, গাজায় বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চলছে। দেড় মাসেরও বেশি সময় যুদ্ধ চলার পর গত শুক্রবার চারদিনের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায় হামাস ও ইসরায়েল।

বন্দিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা নির্যাতন করেনি হামাস: ইসরায়েলি মিডিয়া
ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। ছবি রয়টার্স

চুক্তি অনুযায়ী, হামাস ইতোমধ্যেই ৫০ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। অপরদিকে ইসরায়েল তাদের কারাগার থেকে ১৫০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে। সোমবার ছিল এই চুক্তির শেষ দিন।

যদিও ইসরায়েল হুমকি দিয়ে এসেছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হলেই তারা আবারও গাজায় হামলা চালানো শুরু করবে। তবে শেষমুহূর্তে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও দু’দিনের জন্য বাড়ানো হয়।

এছাড়া গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাও চার হাজার।

মূলত গাজায় এখন যুদ্ধবিরতি চললেও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আরও মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় নিহত ১৫ হাজার ছাড়াল। গাজার মিডিয়া অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, গাজার রাস্তা এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও মৃতদেহ উদ্ধারের পর অঞ্চলটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!