নিখোঁজের ছয় দিন পর বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর গ্রামের ধানক্ষেত থেকে বস্তায় বন্দি বগুড়ার কলেজ ছাত্রী নাজনীন আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রেম করে বগুড়ায় বিয়ে করে বরিশালের গৌরনদীর বাড়িতে এনেই নাজনিনকে হত্যা করে তার স্বামী সেনানিবাসের ঝাড়ুদার সাকিব। তারপর লাশ সেপটিট্যাংকে ফেলে দেয় বলে স্বীকারোক্তি দিলে পুলিশ আলামত পেলেও গত ছয়দিন লাশ খুঁজে পায়নি। বুধবার বেলা ১২টায় গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ ধানক্ষেত থেকে বস্তাবন্দী একটি মরদেহ উদ্ধার করে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। গৌরনদী মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, মঙ্গলবার দিনভর নিষ্ফল অভিযান শেষে বগুড়া সদর থানা পুলিশ আসামি সাকিবকে নিয়ে বগুড়ায় চলে যান। ইতিমধ্যে বুধবার সকাল ১০টায় বাটাজোর এলাকা থেকে এক ব্যক্তি মোবাইলে জানান সেখানকার একটি ধানক্ষেতে বস্তা পড়ে রয়েছে। তা থেকে মারাত্মক দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। তাদের ধারণা ছিল ওই বস্তায় মরদেহ রয়েছে। তবে কার মরদেহ তা তারা নিশ্চিত ছিল না। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখান থেকে বস্তা উদ্ধার করে তার মুখ খোলার পর বের হয়ে আসে নাজনীন আক্তারের মরদেহ। সাথে সাথে বিষয়টি বগুড়া সদর থানাকে অবহিত করা হয়। ওসি আরো জানান, মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নাজনীনের পরিবারের সদস্যদেরও খবর দেয়া হয়েছে। তারাও বগুড়া পুলিশের সাথে রওয়ানা হয়েছেন। এদিকে পালিয়ে থাকা সাকিবের পিতামাতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। কলেজছাত্রী নাজনীন আক্তার বগুড়া সদরের সাবগ্রাম (উত্তরপাড়া) এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফের মেয়ে। বগুড়ার গাবতলী সৈয়দ আহম্মেদ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। ঘাতক বগুড়া জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসের ঝাড়ুদার সাকিব হোসেন হাওলাদার। সে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার নতুনচর জাহাপুর গ্রামের বাসিন্দা ভ্যানচালক আব্দুর করিম হাওলাদারের ছেলে। বর্তমানে গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের হরহরগ্রামে ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করে সাকিবের পরিবার। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার এসআই গোলাম মোস্তফা বলেন, ঘটনার পর ২ দিন বাড়িতে অবস্থান করছিল সাকিব। ধারণা করা হচ্ছে ওই সময়ে সাকিব তার পিতামাতাকে হত্যার বিষয়টি জানিয়ে দেয়। এমনকি সেফটি ট্যাংকে মরদেহ ফেলার কথাও বলে। সাকিব বগুড়ায় চলে যাওয়ার পর পিতামাতা সেখান থেকে মরদেহ তুলে অন্যত্র সরিয়ে ফেলায় মরদেহের সন্ধান মেলেনি। তবে সেখান থেকে নাজনীনের ব্যবহৃত ওড়না, দুটি নক ও শরীরে চামড়ার অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়। তাছাড়া অভিযান চলাকালে সাকিবের পিতামাতাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তারা আগেভাগে পালিয়েছে।এখন তাদের গ্রেপ্তারের কাজ চলছে।
অবশেষে ধানক্ষেতে পাওয়া গেল বগুড়ার নাজনীনের বস্তা বন্দি লাশ
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন
একটি মন্তব্য করুন