উত্তর গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে হামাসের তুমুল লড়াই
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইন্দোনেশিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত একটি হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলার আঘাতে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও চিকিৎসাকর্মীরা এই দাবি করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জাবালিয়া শরণার্থী শিবির ঘিরে তুমুল লড়াই চলছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে হাজারো রোগী ও বেসামরিক হাসপাতালটিতে আশ্রয় নিয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইন্দোনেশীয় হাসপাতাল ভবন ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি ট্যাংক। এগুলো থেকে ছোড়া গোলা হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় আঘাত হেনেছে। এতে অন্তত ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
হাসপাতালের পরিস্থিতি সম্পর্কে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, ৭০০ রোগীসহ হাসপাতালের কর্মীরা ইসরায়েলি বাহিনীর গুলির মুখে রয়েছেন।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা বলেছে, উত্তর-পূর্ব গাজার শহর বেইত লাহিয়ায় অবস্থিত হাসপাতালে কামানের গোলা আঘাত হেনেছে। বেসামরিকদের রক্ষার জন্য সরিয়ে নেওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা করা হচ্ছে।
হাসপাতালের কর্মীরা ভেতরে কোনও যোদ্ধাদের উপস্থিতির কথা অস্বীকার করেছেন। যদিও ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় তারা ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামোগুলোকে’ লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে এবং হামাস হাসপাতালসহ বেসামরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। গাজার শাসকগোষ্ঠী এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবির ঘিরে হামাস ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে।
জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১ লাখ মানুষের বসবাস। ইসরায়েলের দাবি, এটি হামাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি।
ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা বলেছেন, জাবালিয়াতে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে বহু বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
লড়াই চলমান থাকার মধ্যেই মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, কাতারের মধ্যস্থতায় গাজায় হামাসের হাতে থাকা কয়েকজন জিম্মিকে মুক্ত এবং লড়াইয়ে অস্থায়ী বিরতির জন্য একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন তারা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা ১৩ হাজার। এর মধ্যে ৫ হাজার ৫০০ শিশু ও ৩ হাজার ৫০০ জন নারী। আহতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া নিখোঁজের সংখ্যা ছয় হাজার, যাদের বেশিরভাগই ধসে যাওয়া ভবনের নিচে চাপা পড়েছেন।
অপরদিকে ইসরায়েল বলছে, হামাসের হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। যদিও প্রথমে নিহতের সংখ্যা ১৪০০ বলে দাবি করেছিল ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ছাড়া ২৪০ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করেছে হামাস।