জিম্মিদের আল-শিফা হাসপাতলে নেয়ার ভিডিও প্রকাশ ইসরায়েলের

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
5 মিনিটে পড়ুন

জিম্মিদের আল-শিফা হাসপাতলে নেয়ার ভিডিও প্রকাশ ইসরায়েলের

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে যেখানে গত সাতই অক্টোবর হামাসের হামলার পর আটক জিম্মিদের গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফায় নেয়া হয়েছে বলে তারা দাবি করছে।

সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেন, এদের মধ্যে একজন সৈনিক ছিলেন যাকে সেখানে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯ বছর বয়সী কর্পোরেল নোয়া মার্সিয়ানোকে হালকা আঘাত লাগার কারণে আল-শিফা হাসপাতালে নেয়ার পর তাকে হত্যা করা হয়।

ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, যেখানে হামাসের কমান্ড সেন্টার রয়েছে তার কাছাকাছি স্থানে একটি সুড়ঙ্গ পাওয়া গেছে। যদিও কমান্ড সেন্টারের দাবি অস্বীকার করেছে হামাস।

- বিজ্ঞাপন -

রোববার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক সংবাদ সম্মেলনে দেখানো ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।

সংবাদ সম্মেলনে আইডিএফ এর প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি সাংবাদিকদের বলেন, “আজ সকালে আমরা নোয়ার পরিবারকে আমাদের পাওয়া তথ্য সম্পর্কে জানিয়েছি। তাকে জিম্মি করার পর শিফার কাছে একটি গোপন আস্তানায় নিয়ে যায়।”

“ওই এলাকায় আইডিএফ এর বিমান হামলার সময়, নোয়াকে হামাসের সন্ত্রাসী জিম্মি করে রেখেছিল, সে মারা যায়। বিমান হামলায় নোয়াও আহত হয়, কিন্তু সেটা প্রাণঘাতী ক্ষত ছিল না। নেয়াকে শিফা হাসপাতালে নেয়া হয়, সেখানে হামাসের আরেকজন সন্ত্রাসী তাকে হত্যা করে।”

হাসপাতালে অভিযান নয়, ‘টার্গেটেড অপারেশন’ চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা: আইডিএফ
গাজার আল শিফা হাসপাতাল। ছবি আল জাজিরা

হামাস এর আগে দাবি করেছিল, মিজ মার্সিয়ানো ইসরায়েলি একটি বিমান হামলায় নিহত হয়েছে। আইডিএফ এর তথ্য অনুযায়ী, ওই বিমান হামলা গত ৯ই নভেম্বর করা হয়েছিল।

এরপর রিয়ার অ্যাডমিরাল হাগারি সিসিটিভি ফুটেজ চালিয়ে দেখান যেটি গত সাতই অক্টোবর সকালের বলে জানানো হয়। এদিনই হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল যাতে ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয় এবং ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়।

- বিজ্ঞাপন -

ভিডিওতে দেখা যায়, দুই জন জিম্মিকে গাজার সবচেয়ে বড় এবং আধুনিক হাসপাতালে আনা হয়।

সিসিটিভি ভিডিওতে অস্ত্রধারী ব্যক্তিদেরও দেখা যাচ্ছিল যেখানে তারিখ হিসেবে ৭ই অক্টোবর লেখা ছিল। এদের মধ্যে একজন জিম্মি বাধা দেয়ার চেষ্টা করছিলো এবং আরেক জনকে স্ট্রেচারে শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছিল।

গাজার উত্তরাঞ্চলে বিশাল হাসপাতাল কমপ্লেক্সের নিচে হামাসের একটি বিস্তৃত কমান্ড সেন্টার রয়েছে বলে ইসরায়েল যে দাবি করেছিলে, তার স্বপক্ষে প্রমাণ স্বরূপ তেমন কিছু হাজির করতে না পারার কারণে চাপের মধ্যে রয়েছে আইডিএফ

- বিজ্ঞাপন -

ইসরায়েলের প্রকাশিত ভিডিওর বিষয়ে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা এর সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত করতে পারছে না।

জিম্মিদের আল-শিফা হাসপাতলে নেয়ার ভিডিও প্রকাশ ইসরায়েলের
গত বুধবার ইসরায়েলি সেনারা জোরপূর্বক গাজার আল-শিফা হাসপাতালে প্রবেশ করে। ছবি রয়টার্স

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার করুণ পরিণতি এবং ধসে পড়ার জন্য ইসরায়েল সম্পূর্ণভাবে দায়ী।

এর আগে আইডিএফ একটি ভিডিও প্রকাশ করে যেখানে মাটির ১০ মিটার গভীরে একটি সুড়ঙ্গ দেখা যাচ্ছিলো এবং এটি ৫৫ মিটার পর্যন্ত গিয়ে একটি বন্ধ ও শক্তিশালী দরজায় ঠেকেছিল।

ইসরায়েল তখন বলেছিল, হামাস যে হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভেতরে অসংখ্য ভবনকে “নিজেদের সন্ত্রাসী অবকাঠামো এবং কর্মকাণ্ডকে আড়াল করার জন্য ব্যবহার করে” তার পক্ষে এই ভিডিও এখন “স্পষ্ট প্রমাণের” অংশে পরিণত হয়েছে।

আল-শিফা হাসপাতালের নিচে হামাসের বিস্তৃত ঘাঁটি কেমন হতে পারে তার ধারণা দিতে এর আগে আইডিএফ যে একটি কম্পিউটার উপস্থাপনা দেখিয়েছিল, এবং তার পক্ষে প্রমাণ হাজির করতে ইসরায়েল যে অঙ্গীকার করেছিল, তার অংশ হিসেবে সর্বশেষ প্রকাশিত ভিডিওকে এখনো প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্র এর আগে বলেছিলো যে, তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, হামাস আল-শিফাসহ গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোকে কমান্ড সেন্টার ও অস্ত্র গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছে।

হাসপাতাল কমপ্লেক্সে যে বড় একটি সদরদপ্তর রয়েছে সেই দাবির পক্ষে প্রমাণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যের উল্লেখ করেছে ইসরায়েল। কিন্তু আমেরিকার ভাষার ব্যবহার দেখে অবশ্য মনে হচ্ছিলো যে, একটি ছোট পরিচালনা কেন্দ্র চলছিল।

জিম্মিদের আল-শিফা হাসপাতলে নেয়ার ভিডিও প্রকাশ ইসরায়েলের
আল-শিফা হাসপাতালের সামনের একটি দৃশ্য। ছবি রয়টার্স

ইসরায়েল মনে করে তারা একটি বিশ্বাসযোগ্য ঘটনা নির্মাণ করছে এবং প্রমাণ যখন যেভাবে পাওয়া যাবে, তখন সেগুলো হাজির করা হবে।

ইসরায়েলের মিত্র দেশগুলো হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে আইডিএফ এর প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানকে সমর্থন করলেও, এর কারণে যে পরিমাণ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে তার জন্য অস্বস্তিও প্রকাশ করেছে।

হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজায় এ পর্যন্ত ১২হাজার ৩০০ মানুষ নিহত হয়েছে। আর ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় দুই হাজার মানুষ চাপা পড়েছে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

জিম্মিদের পরিবারের পক্ষ থেকে চাপের মুখে রয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার। তারা চায়, হামাসের হাতে আটকদের মুক্তির জন্য মি. নেতানিয়াহু আরো বেশি পদক্ষেপ নিন।

শনিবার বিক্ষোভকারীরা তেল আবিব থেকে জেরুজালেম পর্যন্ত পায়ে হেঁটে বিক্ষোভ করে। পরে তারা মি. নেতানিয়াহুর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করে। সেসময় তারা ইসরায়েলি সরকারকে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানায়।

তবে প্রধানমন্ত্রী তার নিজের মিশনেই অটল রয়েছে বলে মনে হয়।

তিনি বলেন, এই যুদ্ধে তার প্রথম উদ্দেশ্য হচ্ছে হামাসকে ধ্বংস করা। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং তৃতীয় উদ্দেশ্য গাজা থেকে হুমকির মূল উৎপাটন করা।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!