দখলকৃত পশ্চিম তীরের শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করলো ইসরায়েল
গাজায় এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান আগ্রাসনের মধ্যেই দখলকৃত পশ্চিম তীরের একটি শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে ইসরায়েল। সেখানে অবৈধ ইহুদি সেটেলারদের সহিংসতাও বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিভিন্ন স্থানে পেট্রোল পাম্প, বেকারিসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। হুয়ারা নামের শহরটি মূল মোড় এখন এটিকে পূর্ব ও পশ্চিমে বিভক্ত করেছে। হলুদ লোহার গেটে মেশিনগান হাতে পাহারায় রয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শহরটির রোড সিক্সটি অতিক্রম করতে বাসিন্দাদের ইসরায়েলি সেনাদের অনুমতি নিতে হয়। সব সময় তা পাওয়া যায় না। পাশের সড়কগুলো আটকে দেওয়া হয়েছে। এক সময় হেঁটে কয়েক মিনিটের দূরত্ব থাকলেও এখন কয়েক ঘণ্টা লাগছে।
শহরটির মেয়র মইন দিমেইদি বলেন, এটি পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মতো হয়ে গেছে। গতকাল শহরের সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অবরোধ ভেঙে দোকান পুনরায় চালু করার জন্য। কিন্তু সেনাবাহিনী বলছে যে, এগুলো খোলা থাকলে সেটেলারদের আক্রমণের পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
মেয়র আরও বলেছেন, প্রথম দশ দিন বাসিন্দাদের প্রধান সড়ক পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে দেওয়া হয়নি। উত্তেজনাপূর্ণ ও আক্রমণাত্মক আলোচনার পর এখন পূর্ব থেকে পশ্চিমে হেঁটে যাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটা যাচ্ছে না।
দিমেইদি বলেন, এমন কিছু কখনও আমি দেখিনি। আর তারা এগুলো করছে সেটেলারদের খুশি করতে।
মোবাইল ও লন্ড্রির দোকান থাকা ২৬ বছর বয়সী আওদা চেষ্টা করেছিলেন তার দোকান খুলতে। কিন্তু পারেননি। তিনি বলেছেন, দোকান খোলার ১০ মিনিটের মধ্যে সেনাবাহিনী এসে বন্ধ করতে বলে। তারা জানিয়েছে, একটি দোকান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এক সেনা গুলি করার জন্য প্রস্তুতি নেয়। এক মাস হয়ে গেছে, এখন আমরা শহরের ওপাশে যেতে পারি না।
জালাল আওদা নামের কাউন্সিলর বলেন, আমি শহরের পূর্ব পাশের বাসিন্দা। কিছু নথিতে স্বাক্ষর করতে পশ্চিমা পাশে যাওয়া আমার দরকার ছিল। যা মাত্র আট মিটার দূরে। কিন্তু আমাকে ১৪ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়েছে। এটি একেবারে অন্যায়।
এক বেকারির মালিক ৭১ বছর বয়সী মোহাম্মদ হানদান বলেন, এটি স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার উপায় নয়। শহরের উল্টোপাশে কোনও আত্মীয় থাকলে আমি তার সঙ্গে দেখা করতে পারছি না। আমার একটি সুপারমার্কেট, একটি বেকারি ও মিষ্টির দোকান রয়েছে। ৭ অক্টোবর থেকে সবগুলো বন্ধ। ১৫ জন কর্মীর মজুরি দিতে পারছি না। প্রতিদিন উপকরণ ফেলতে হচ্ছে। কারণ এগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে।