যুদ্ধ শেষের পরও গাজায় ইসরায়েলের উপস্থিতি সমর্থন করেন না যুক্তরাষ্ট্র
হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধ শেষের পরও গাজায় ইসরায়েলের উপস্থিতি সমর্থন করেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইসরায়েলি সেনাদের গাজা দখলে রাখা সঠিক কাজ হবে না বলে তাকে উদ্ধৃত করে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কারবি জানিয়েছেন।
হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সেখানকার নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ অনির্দিষ্টকালের জন্য ইসরায়েলের হাতে থাকবে বলে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিক্রিয়া এল।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কারবি বলেন, ‘যুদ্ধ শুরুর আগে গাজা যেমন ছিল, যুদ্ধ শেষের পর যে আর তেমন থাকবে না- এই একটি বিষয়ে আমরা অবশ্যই একমত। সেখানকার শাসনক্ষমতায় কাদের থাকা উচিত তা নির্ধারণে অবশ্যই যুদ্ধের পর সুষ্ঠু ও গঠনমূলক আলোচনা হওয়া জরুরি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ব্যাপারটি দেখছেন।’
এদিকে গত সোমবার এবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তার দেশ গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।
‘সরাসরি গাজা শাসন করা ইসরায়েলের জন্য সবচেয়ে বড় ভুল হবে’ বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মন্তব্য তুলে ধরে সাংবাদিক ডেভিড মুইর নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্যে বলেন, এবিষয়ে আপনার মত কী? যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এই অঞ্চলে কার শাসন করা উচিত?
জবাবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই ইসরায়েল এই অঞ্চল শাসন করতে পারে।’ সময়সীমার প্রশ্নে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল অনির্দিষ্টকাল গাজা শাসন করতে পারে। তবে যেসব ফিলিস্তিনি হামাসের পথ অনুসরণ করে না, তারা গাজা শাসন করতে পারে বলেও মত দেন তিনি।
ইসরায়েল যুদ্ধের পর গাজা উপত্যকা দখল করে নিজেদের সীমানা বিস্তৃত করতে পারে বলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর অনুমান করেছেন বিশ্লেষকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছিলেন, এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না ইসরায়েলের।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চলানোর পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। সেই অভিযান এখনো চলছে।
হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। এ ছাড়া হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েল থেকে অন্তত ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে গেছে হামাস। অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা সংখ্যা শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১০ হাজার ৩২৮। এই নিহতদের মধ্যে রয়েছে ৪ হাজার ২৩৭ জন শিশু।