বাইডেনের বক্তৃতায় বাধা দিয়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানাল ইহুদি নারী
যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে এক প্রচারণা সমাবেশে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বক্তৃতায় বাধা দিয়ে ইহুদি এক নারী গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন।
ইহুদি ধর্মীয় আইনের শিক্ষক জেসিকা রোজেনবার্গ বাইডেনের বক্তৃতার মাঝখানে দাঁড়িয়ে বলেন, “জনাব প্রেসিডেন্ট, আপনি ইহুদি লোকজনের দিকে খেয়াল রাখেন। একজন (ইহুদি) রাব্বি হিসেবে আমি চাই, আপনি এখনই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাবেন।”
উপস্থিত অনেকে রোজেনবার্গকে থামতে ও বসে পড়তে বলেন আর বাইডেন তার দাবির জবাবে বলেন, “আমার মনে হয় একটি বিরতি দরকার।”
এ সময় রোজেনবার্গ আবার বাইডেনের কথায় বাধা দিয়ে বলেন, “বিরতি। কিসের বিরতি?”
উত্তরে বাইডেন বলেন, “বিরতির মানে বন্দিদের বের করার জন্য সময় দেওয়া।”
এরপর রোজেনবার্গকে সমাবেশস্থল থেকে জোর করে বের করে নিয়ে যাওয়া হতে থাকলে তিনি চেঁচিয়ে বলেন, “এখনই যুদ্ধবিরতি চাই।”
শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ১৯৫ জনেরও বেশি: হামাস
শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বাইডেন বলেন, “আমি এই আবেগ বুঝতে পারছি।”
শ্রোতারা হাততালি দিয়ে বাইডেনকে স্বাগত জানান এবং প্রতিবাদকারী রোজেনবার্গকে তিরস্কার করেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বাইডেনের বক্তৃতায় বাধা দিয়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি ইহুদি নারীর পরে হোয়াইট হাউজ জানায়, ‘বন্দি’ বলতে বাইডেন হামাসের হাতে বন্দি ২৪০ জন ‘জিম্মি’ কে বুঝিয়েছেন।
নিরাপত্তা কর্মীরা রোজেনবার্গকে পাহারা দিয়ে বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময়ও তিনি ‘এখনই যুদ্ধবিরতি চাই’ বলতে থাকেন।
আর বাইডেন বলেন, ইসরায়েল ও মুসলিম বিশ্ব উভয় দিকেই পরিস্থিতি ‘অবিশ্বাস্যরকম জটিল’ হয়ে আছে।
“আমি দ্বি-রাষ্ট্রিক সমাধান সমর্থন করি, অনেক আগে থেকেই। ঘটনা হচ্ছে হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। স্পষ্টতই একটি সন্ত্রাসী সংগঠন,” ইসরায়েলকে সমর্থন করে বলেন তিনি।
৭ অক্টোবর হামাসের ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা গাজার সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে সবাইকে হতবাক করে দেয়। ইসরায়েল জানিয়েছে, এই হামলায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে যাদের অধিকাংশ বেসামরিক আর হামাসের যোদ্ধারা ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রেখেছে।
এরপর থেকে হামাসকে নির্মূল করার প্রত্যয় নিয়ে গাজায় স্থল, জলপথ ও আকাশপথে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৩৬৪৮ শিশুসহ অন্তত ৮৭৯৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের প্রথম কয়েক ঘণ্টায়ও গাজা নগরীর আল-কুদস হাসপাতালের আশপাশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে। এই হাসপাতালকে সতর্ক করে এখান থেকে অবিলম্বে সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সবাইকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে গেলে রোগীদের জীবন বিপন্ন হবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।