ইসরায়েলে একই পরিবারের ৫ ফিলিস্তিনিসহ ৬ জনকে গুলি করে হত্যা
ইসরায়েলের ছয় ফিলিস্তিনি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। দুটি পৃথক গুলির ঘটনায় তারা নিহত হন। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের পাঁচ ফিলিস্তিনি সদস্যও রয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ।
নিহতদের মধ্যে নারীও রয়েছেন এবং তাদেরকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে বুধবার গুলিতে ফিলিস্তিনি একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন। পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তিন পুরুষ ও দুজন নারী এবং তাদেরকে নাজারেথের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত বাসমত তাবুন শহরে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ইসরায়েলের ইহুদি-আরব অ্যাডভোকেসি এবং মনিটরিং গ্রুপ আব্রাহাম ইনিশিয়েটিভস নিহত এই পাঁচজনকে দম্পতি এবং তাদের তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান হিসাবে চিহ্নিত করেছে। পুলিশ বলেছে, তারা ঘটনাটিকে অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করছে এবং সন্দেহভাজন হামলাকারীদের খোঁজে তল্লাশি করছে।
এর আগে বুধবার মুখোশধারী বন্দুকধারীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের আরেক ফিলিস্তিনি নাগরিককে হত্যা করে। নিহত ওই ফিলিস্তিনি নিকটবর্তী উপকূলীয় শহর হাইফাতে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, তারা তদন্ত করে দেখছে যে- এই দুটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে কোনও সম্পর্ক ছিল কিনা।
হাইফার পার্শ্ববর্তী আল-হালিসা এলাকায় বুধবার এই প্রথম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এবং সেখানকার কর্তৃপক্ষ পরে ওই এলাকার সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দেয় এবং শিক্ষার্থীদের কমপক্ষে একদিন বাড়ি থেকে পড়াশোনা করতে নির্দেশ দেয়।
আব্রাহাম ইনিশিয়েটিভস অনুসারে, বুধবারের প্রাণহানির এই ঘটনায় চলতি বছর এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহত ফিলিস্তিনি নাগরিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৮ জনে।
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলের ৯৭ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ফিলিস্তিনি নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ। তারা দীর্ঘদিন ধরে ইহুদি এই ভূখণ্ডে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সরকারের অবহেলার শিকার।
ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির গত বছরের শেষের দিকে দায়িত্ব নেওয়ার সময় ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের ‘অপরাধ’ দমনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ফিলিস্তিনি-বিরোধী উস্কানিদাতা হিসেবে পরিচিত বেন-গভির ফিলিস্তিনি শহর ও গ্রামে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আপাতদৃষ্টিতে তেমন কিছু করেননি।
এর পরিবর্তে ইসরায়েলে সহিংসতা আরও তীব্র হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বছরের একই সময়ে এই জাতীয় হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।