তালেবান সরকারের অধীনে ১৬০০ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা: জাতিসংঘ
তালেবান সরকারের অধীনে অন্তত ১ হাজার ৬০০ বন্দীর ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে নির্যাতন করা হয়েছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গতকাল বুধবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদন অনুসারে, এদের বেশিরভাগই পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের হাতে নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছেন।
আফগানিস্তানে নিযুক্ত জাতিসংঘের মিশনকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলে, চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত গত ১৯ মাসে কারাগারে ও পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীন মোট ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আফগানিস্তানে ২০২১ সালে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান ক্ষমতা হাতে নেয়। এরপর থেকে দেশটির পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তালেবান নিয়ন্ত্রণ করছে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের সহায়তা মিশন একটি বিবৃতিতে বলে, ‘স্বীকারোক্তি ও অন্যান্য তথ্য আদায় করতে গিয়ে বন্দীদের মারধর, বৈদ্যুতিক শক, শ্বাসরোধ, বলপূর্বক পানি পান ও চোখ বেঁধে রাখার মতো শারীরিক কষ্ট দেওয়া হতো।’
এছাড়াও গ্রেপ্তারের কারণ না জানানো, আইনজীবীর ব্য়বস্থা না করতে দেওয়া ও কারাগারে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা না দেওয়ার মতো অধিকারের লঙ্ঘনও করা হয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, সহিংসতার শিকার প্রতি দশজনের মধ্যে একজন নারী ছিলেন। এছাড়াও সহিংসতার শিকার প্রায় এক চতুর্থাংশই সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সদস্য।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের জবাবে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, প্রতিবেদনে উল্লেখিত সহিংসতার শিকারের সংখ্যা সঠিক নয়, বিশেষ করে নিহত সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সদস্যের সংখ্যা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সরকার ও বিচার ব্যবস্থা তদারকি বাড়ানো নিয়ে কাজ করছে। এছাড়াও স্বীকারোক্তি আদায়ে নির্যাতন নিষিদ্ধ করা নিয়ে তাঁদের সর্বোচ্চ নেতার আইন মান্য করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্যও তাঁরা কাজ করছে।
জাতিসংঘ বলছে, আইন ও কারাগারে তদারকি বাড়ানো ‘আশাব্যঞ্জক’ হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মিশনের প্রধান ও সেক্রেটারি জেনারেলের বিশেষ প্রতিনিধি রোজা অতুনবায়েভা বলেন, ‘ এ ঘটনাগুলো সকলের জরুরি ও দ্রুত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছে। এসব চর্চা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন।’