বিজয়
পাঞ্চজন্য, দেবদত্ত, অনন্তবিজয়
বেজে উঠল,
ওই বুঝি যুদ্ধ ঘোষণা হল তবে
নিশি ডাকে, আজও নিশি ডাকে
পরকীয়া পরাক্রম,
অঙ্গুলিহেলনে দামামার সুর
ওই দূর হতে ভেসে আসে
আততায়ী আপনজন,
জ্ঞাতি, কৃষ্ণ, ত্রিভুবন
কুলক্ষয় হলে যদি পাপ হয়
হাত থেকে ধনু পড়ে খসে
আমি বিপরীত লক্ষণ দেখেছি
হে আত্মীয়গণ—
ক্যাকটাস
আমি সবকিছু অমান্য করব,
আমি সবকিছু অমান্য করে
চলে যাব তোমার কাছে,
আমি তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে
বলতে পারি,
চুম্বনের কাছে পরাজিত হতেও রাজি,
বাইরে বৃষ্টি পড়ছে বলে উচ্ছাস কোরো না
আমি তো বৃষ্টি দেখেছি
তোমার না বলা কথায়
পরন্তু উপরন্তু সব উপেক্ষা করো,
উপেক্ষা করো সমস্ত ক্যাকটাস্,
আর তিতিরের বাসা,
আমি চলে যেতে চাই সমস্তটা
অমান্য করেই-
রাম রাজ্য
সাবধান!! আমরা রাম রাজ্যে প্রবেশ করলাম। অচিরেই বনবাস নেব,
অগ্নিপরীক্ষা আর পাতালপ্রবেশ আইনে বলবৎ।
পুরুষশ্রেষ্ঠ, ধর্মভীরু রাম তুমি কার?
বিস্মিত নিম্নবর্ণ জানে না উত্তর…
উচ্ছ্বাসের রঙ্গমঞ্চ, রাম তুমি কার?
অবাক মনুষ্যকূল জানে না উত্তর—
পাতাল প্রবেশে প্রশ্ন, রাম তুমি কার?
পতিব্রতা নারী, সেও জানে না উত্তর—
তবু রাম রাজ্যে প্রবেশ অনিবার্য হোল।
বেশরম প্রেমিকের সাথে অলক্ত চন্দন নিষিদ্ধ হল,
বল্গাহীন ঘোড়া আর
ঘাতক সেপাই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিল
শস্য শস্য খেলা,
রাবণ যদি রাজপুরোহিত হয়
তবে আগ্রাসী নীতির জয় নিশ্চিত
আর
কাল্পনিক ওঠাপড়ায় নিষিদ্ধ হয় মাটি—
তুমি কি পাশে আছ?
নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি একটু একটু করে
মাঝ রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে ঘর গেরস্থালী
আর লাশ
পঙক্তিতে বসে রয়েছে রঙিন পোকা
শস্যদানা খাওয়ার আছিলায়
তুমি কি পাশে আছ ?
আমি যে সামাল দিতে পারছি না
উলঙ্গ হাতিয়ার,
কলমের ধার শুনেছি অনেক হয় ?
কালি ফুরোচ্ছে,
পঙ্গপালের দল তোলপাড় করেছে
গোলাপী শহর
তোমার বাগানের মায়াবী আলো
প্রচ্ছদ আঁকে,
মৃত্তিকা টলোমলো হয়,
টলোমলো হয় অচ্ছুত আকাশ,
আমরা এসে দাঁড়িয়েছি
নিঃসঙ্গ জমিতে…
মিছিলের দেবতা
মিছিলের ফেনা উথলে উঠেছে কবি
এবার তোমার গর্জে ওঠার দিন
বারুদের স্তুপে অমীমাংসিত খেলা
হাতের তালুতে ভেজা শব্দের ঋণ।
অচেনা বিন্দু গলিপথ খুঁজে থামে
মেটে না তো ভুখ কৃষকের জলসায়
বদ্ধ মিছিলে ওরা বিলুপ্ত পাখি
ক্ষেতের গোপনে হাহাকার সংশয়।
কালো রাত আর হাত জানে মশগুল
তীক্ষ্ণ ফলায় আশাবরী, আরিফা
বেয়াদব জানে রক্তের স্বাদ কত
রক্ত ছিটলে বেপরোয়া হয় মাপা।
তুমি আছ আজ সশব্দদের দলে
তুমি আছ তাই কলরব ঝলসায়
তুমি আছ তাই ভ্রুণের হয়নি মৃত্যু
তুমি আছ তাই চাষা পাত পেড়ে খায়।
তুমি আছ বলে কন্যা বুনছে বাড়ি
তোবড়ানো গালও ধর্ষিতা হতে বাঁচে
তুমি আছ বলে ল্যাংটো ছেলের দল
আজও ভাত ফেলে, বেয়নট কাঁধে সাজে।
প্রতি রোমকূপে তোমার সৃষ্টি গাঁথা
জন্ম নিচ্ছে রণচণ্ডীর দল
জন্ম নিলেই এক মালিকানা পশু
শুকনো খোঁয়াড়ে অবাঞ্ছিতের ফল।
তোমার সৃষ্টি তোমার সৃষ্টি কালো
কালো জমিতেই চাষ হবে একদিন
কালো জমিতেই উপচে পড়বে ভাষা
ভাষা হারালেই দেবতা অর্থহীন।
পেরনো চৌকাঠ
একটা ছোট দেওয়াল জুড়ে
নকশিকাঁথার মাঠ
পেরিয়ে যাচ্ছে একটা মেয়ে
পেরচ্ছে চৌকাঠ ।
চৌকাঠ নয়, ওটাই মেয়ের
হারিয়ে ফেলা দিন
খেলাচ্ছলে কখন যেন
তিন এক্কে তিন।
তিন তিন তিন নয় পেরলেই
গর্জে ওঠে ঝোপ
বিষাক্ত এক ছোবল
মেয়ের নিঃশ্বাসে ছোপ-ছোপ ।
নিঃশ্বাস তার উপচে উঠেই
তলিয়ে গেল ঘাট
পেরিয়ে যাচ্ছে অনেক মেয়ে
পেরচ্ছে চৌকাঠ ।