আফ্রিকা মহাদেশে তিন বছরে সাত অভ্যুত্থান
আফ্রিকার দেশ গ্যাবনে বুধবার (৩০ আগস্ট) একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে দেশটির সেনা কর্মকর্তারা। গত তিন বছরের মধ্যে অশান্ত আফ্রিকা মহাদেশে এ নিয়ে সাতটি অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটলো।
২০২৩: নাইজার
গত ২৬ জুলাই একটি অভ্যুত্থানে নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান আবদোরাহমানে চিয়ানি দেশটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।
১০ আগস্ট পশ্চিম আফ্রিকার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট (ইকোয়াস) নাইজারে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সেনা মোতায়েনের অনুমোদন দেয়। এছাড়া কূটনৈতিক সমাধানেরও প্রস্তাব দেওয়া হয় নাইজারকে।
তবে বেসামরিক সরকার গঠনে সামরিক শাসক তিন বছরের বেশি সময় নেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
২০২২: বুরকিনা ফাসো
২০২২ সালে দুইটি সামরিক অভ্যুত্থান দেখেছে বুরকিনা ফাসো। জানুয়ারিতে লেফটেন্যান্ট-কর্নেল পল-হেনরি সান্দাওগো দামিবার নেতৃত্বে বিদ্রোহী সৈন্যরা প্রেসিডেন্ট রচ মার্ক ক্রিশ্চিয়ান কাবোরকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর সেনা কর্মকর্তারা দামিবাকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন। এরপর সেনা কর্মকর্তা ইব্রাহিম ট্রাওরে নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন। তিনি ২০২৪ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন।
২০২১: সুদান
স্বৈরশাসক ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ক্ষমতা ভাগাভাগি করা সামরিক ও বেসামরিক নেতাদের মধ্যে কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনার পর সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনী ২৫ অক্টোবর অভ্যুত্থান ঘটায়।
২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল বুরহান ও তার সাবেক উপ-প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগলোর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এতে অন্তত ৫,০০০ নাগরিক নিহত হয়েছেন।
২০২১: চাদ
২০২১ সালে উত্তরে বিদ্রোহীদের সাথে যুদ্ধরত সেনাদের পরিদর্শনের সময় প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস ডেবি যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হওয়ার পরে দেশটির সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করে।
দেশটির আইন অনুযায়ী, সংসদের স্পিকারের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা ছিল। তবে সামরিক পরিষদ স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার নামে পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়।
ডেবির ছেলে জেনারেল মোহমাত ইদ্রিস ডেবিকে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি মনোনীত করা হয়। ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
ক্ষমতার অসাংবিধানিক হস্তান্তরের ফলে রাজধানী এন জামেনায় দাঙ্গা হয়, যা সামরিক বাহিনী দমন করে।
২০২১: গিনি
লেফটেন্যান্ট-কর্নেল মামাডি ডুমবুয়ার নেতৃত্বে সেপ্টেম্বরে ক্ষমতা দখল করে বিদ্রোহী সৈন্যরা। ৮৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট আলফা কন্ডেকে গ্রেপ্তার করে।
২০২৪ সালের শেষের দিকে নির্বাচিত বেসামরিক ব্যক্তিদের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সামরিক শাসক ডুমবুয়া।
২০২০, ২০২১: মালি
২০২০ সালের আগস্টে সামরিক অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বৌবাকার কেইতাকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বৌবাকার কেইতা।
২০২১ সালের মে মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক নেতারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সৈন্যদের সরিয়ে দিলে সামরিক বাহিনী আবার ক্ষমতা গ্রহণ করে।
সামরিক শাসকরা ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে অবাধ নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।