তাইওয়ানে অভ্যন্তরীণ সব ফ্লাইট বাতিল, হাজারও মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে
তাইওয়ানে আঘাত হানতে চলেছে শক্তিশালী টাইফুন হাইকুই। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে এই টাইফুনটি ভূখণ্ডটিতে আঘাত হানতে পারে। আর এর আগে প্রায় ৩ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া রোববারের সকল অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টাইফুন হাইকুইয়ের আঘাতের শঙ্কায় তাইওয়ানে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং প্রায় ৩ হাজার লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দ্বীপ ভূখণ্ডের দক্ষিণ এবং পূর্বে টাইফুনটি আছড়ে পড়ার সময় প্রবল বৃষ্টি ও শক্তিশালী বাতাস বয়ে আনবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রয়টার্স বলছে, টাইফুন হাইকুই রোববার বিকেলের শেষ দিকে তাইওয়ানের সুদূর দক্ষিণ-পূর্বে পাহাড়ি এবং অল্প জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে আঘাত হানবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভূখণ্ডটির পূর্ব ও দক্ষিণের বিভিন্ন কাউন্টি ও শহরগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস বাতিল করা হয়েছে এবং শ্রমিকদের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশের ইয়াং চিয়াং শহরের হাই লিং দ্বীপে শনিবার দুপুরে আছড়ে পড়ে সুপার টাইফুন ‘সাওলা’। আঘাত হানার সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল প্রতি সেকেন্ডে ২৮ মিটার। অবশ্য গুয়াংডং থেকে কয়েক লাখ বাসিন্দাকে আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বন্ধ করে দেওয়া হয় মার্কেট এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মূলত ১৯৪৯ সালের পরে এটিই ছিল দক্ষিণ চীনে আছড়ে পড়া সব থেকে বড় ঘূর্ণিঝড়।
রয়টার্স বলছে, শনিবার হংকং এবং দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশে আঘাত হানা সাওলার চেয়ে হাইকুই টাইফুন অনেক দুর্বল ঝড়। ট্রপিক্যাল স্টর্ম রিস্ক অনুসারে, টাইফুন হাইকুই তাইওয়ানে যখন আঘাত হানবে তখন সেটি শুধুমাত্র ক্যাটাগরি ১ বা ২ টাইফুন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তাইওয়ানের সরকার বলেছে, টাইফুন আঘাত হানার আগে ২ হাজার ৮৬৮ জনকে ইতোমধ্যেই দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন বসতি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাইওয়ানের প্রধান দুটি অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইনস ইউএনআই এয়ার এবং ম্যান্ডারিন এয়ারলাইনস রোববার তাদের সকল ফ্লাইট বাতিল করেছে।
অন্যদিকে অফশোর দ্বীপগুলোতে ফেরি পরিষেবাও বাতিল করা হয়েছে। অবশ্য তাইওয়ানের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোতে ব্যাঘাত ঘটেছে কম। শক্তিশালী এই টাইফুনের কারণে রোববার ভূখণ্ডটিতে শুধুমাত্র ২৫টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
এছাড়া টাইফুনের আঘাতের পর বন্যা দেখা দিলে দুর্গতদের ত্রাণ ও সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টায় সহায়তার জন্য তাইওয়ানের সেনাবাহিনী সৈন্য ও সরঞ্জাম প্রস্তুত করেছে।
রয়টার্স বলছে, রোববার বিকেল নাগাদ দক্ষিণ তাইওয়ান অতিক্রম করার পরে টাইফুন হাইকুই তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করে চীনের দিকে যাবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।