ফ্রান্সের ঘাঁটির সামনে লাখো মানুষের বিক্ষোভ, সেনাদের নাইজার ছাড়ার আহ্বান
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে অবস্থিত ফ্রান্সের সেনাবাহিনীর ঘাঁটির সামনে জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে ঘাঁটির ভেতর প্রবেশের চেষ্টা করেছেন বলে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
গত ২৬ জুলাই পশ্চিমা ও ফ্রান্সপন্থি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে অবরুদ্ধ করে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। এরপরই দেশটিতে ফ্রান্স বিরোধী মনোভাব প্রকাশ পেতে থাকে। নাইজারের সামরিক বাহিনী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবার অভিযোগ, সাবেক ঔপনিবেশিক শাসক ফ্রান্স নাইজারকে শোষণ করে আসছে। আর এ কারণে দেশটিতে অবস্থানরত ফরাসি সেনাদের চলে যাওয়ার দাবি করেছেন তারা ।
আলজাজিরা জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই ফ্রান্সের ঘাঁটির সামনে বিক্ষোভ চলছিল। কিন্তু শনিবার সেখানে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও সকাল ১০টার মধ্যে হাজার হাজার মানুষ সেখানে চলে আসেন। এ বিষয়টিতে অবাক হয়ে যান সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও।
আল জাজিরার সাংবাদিক আহমেদ ইদ্রিস নাইজারের রাজধানী নিয়ামে থেকে জানিয়েছেন, অন্যদিনগুলোতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হতে দেখা যায়। কিন্তু শনিবার অনেক মানুষ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দ্বারা তৈরি নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে ঘাঁটির আরও কাছে চলে আসেন এবং অনেকে ঘাঁটির ভেতর প্রবেশের চেষ্টা করেন।
বিক্ষোভকারীরা ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সালভিন ইত্তেসহ সকল ফরাসি সেনাকে নাইজার ছাড়ার দাবি জানিয়েছেন।
সাংবাদিক আহমেদ ইদ্রিস জানিয়েছেন, শনিবারের পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে, সাধারণ মানুষ ফরাসি সেনাদের হটাতে নিজেদের হাতে সবকিছু তুলে নিচ্ছেন।
গত ২৬ আগস্ট ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নাইজার ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল সামরিক জান্তা। কিন্তু সেই নির্দেশনা তিনি মানেননি। রাষ্ট্রদূত ইত্তে নির্দেশ অমান্য করায় দেশটির সাধারণ মানুষও ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
তবে ফ্রান্সের ঘাঁটির ভেতর যেন সাধারণ মানুষ ঢুকতে না পারেন সেজন্য সেখানে সেনাবাহিনীর আরও সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। ওই ঘাঁটিতে প্রায় দেড় হাজার ফরাসি সেনা অবস্থান করছেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ শুক্রবার জানান, তিনি ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাজোমের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলেন। তিনি আরও জানান, সামরিক জান্তাকে ফ্রান্স স্বীকৃতি দেয় না এবং নাইজার নিয়ে ফ্রান্স যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেটি বাজোমের কথা অনুযায়ী নেওয়া হবে।
ম্যাক্রোঁর এমন বক্তব্যের পর সামরিক জান্তা জানায়, ফ্রান্স নাইজারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে।
সূত্র: আল জাজিরা