বিমান বিধ্বস্ত: প্রিগোজিনসহ ১০ জনের মৃতদেহ ও ফ্লাইট রেকর্ডার উদ্ধার
ওয়াগনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোজিন ছিলেন বলে ধারণা করা বিধ্বস্ত বিমানটির ১০ আরোহীর মৃতদেহ ও ফ্লাইট রেকর্ডার দুটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে রাশিয়া জানিয়েছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মৃতদেহগুলো শনাক্ত করতে জেনেটিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বুধবার মস্কোর উত্তরে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে, এমন জল্পনা ডালপালা মেলেছে।
কিন্তু ক্রেমলিন প্রিগোজিনকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল, এমন দাবী ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ।
এক সময় পুতিনের খুবই ঘনিষ্ঠজনদের একজন ছিলেন প্রিগোজিন। তার ডাক নাম ছিল ‘পুতিনস শেফ’।
বছরের পর বছর ধরে প্রিগোজিনের সেবা পেয়েছেন পুতিন। কিন্তু তাদের সেই সম্পর্ক টুটে যায় গত জুনে প্রিগোজিনের নেতৃত্বে কয়েক হাজার ওয়াগনার যোদ্ধার বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন মাত্র ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী ওই বিদ্রোহকে বর্ণনা করেন ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে। মস্কোতে প্রিগোজিনের সুদিন যে শেষ হয়ে গেছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল সেদিনই।
এই বিদ্রোহ শেষ হয়েছিল একটি চুক্তির মাধ্যমে। চুক্তিতে ওয়াগনারের ভাড়াটে যোদ্ধাদের রাশিয়ার নিয়মিত সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অথবা মস্কোর মিত্র বেলারুশে চলে যাওয়ার মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বলা হয়েছিল। ‘বেলারুশে চলে যাওয়া’ বেছে নিয়েছিলেন প্রিগোজিন।
কিন্তু তখনই অনেক পর্যবেক্ষক প্রিগোজিনকে (৬২) ‘মৃত মানুষ’ বলে অভিহিত করেছিলেন; তাদের যুক্তি ছিল, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কখনোই ওয়াগনারের প্রধানকে ক্ষমা করবেন না।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রেমলিনের মুখপাত্র পেশকভ বিবিসিকে বলেন, বুধবার তিভিয়ের অঞ্চলে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১০ আরোহীর সবার ‘শোচনীয়’ মৃত্যু নিয়ে ‘নানা অনুমান’ ছড়িয়েছে।
“আর পশ্চিমাদের ক্ষেত্রে এ সমস্ত জল্পনা অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিকোণ থেকেই হচ্ছে। এগুলো সবই পুরোপুরি মিথ্যা। আমরা যখন এ বিষয়ে কথা বলছি, তখন অবশ্যই আমাদের প্রকৃত ঘটনাটাই বলা উচিত।
“আসলেই কী ঘটেছে সে সম্পর্কে আমরা বেশিকিছু জানি না। সরকারি তদন্তের মধ্য দিয়ে প্রকৃত ঘটনাটি স্পষ্ট করে জানা দরকার, যেটি এখন চলছে,” বলেন তিনি।
এমব্রায়ার লিগ্যাসি ৬০০ জেট বিমানটির আরোহীদের মধ্যে ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন ও তার প্রধান সহচর দিমিত্রি ইউতকিনের পাশাপাশি আরও পাঁচ যাত্রী ও তিন ক্রু ছিলেন।