নাইজারে সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা থেকে কি সরে এলো ইকোয়াস?
পূর্ব আফ্রিকার দেশ নাইজারের অভ্যুত্থানকারী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? এ নিয়ে শনিবার (১২ আগস্ট) ঘানার রাজধানীতে বৈঠকে বসার কথা ছিল ১৫ দেশের আঞ্চলিক জোট ইকোয়াসের নেতাদের। তবে এ বৈঠকটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
গত ২৬ জুলাই প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে অবরুদ্ধ করে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। তাদের ক্ষমতা ছাড়তে ৬ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল ইকোয়াস। এই সময়ের মধ্যে বাজোমকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্স্থাপন না করলে সামরিক অভিযান চালানো হবে বলে হুমকি দিয়েছিল তারা। আর এই সামরিক অভিযান কী ধরনের হবে? কত সেনাকে অভিযানে যুক্ত করা হবে এ নিয়ে গতকাল বৈঠকে বসার কথা ছিল জোটের নেতাদের।
কিন্তু বৈঠকটি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো থেকে ইকোয়াস সরে এলো কিনা?
তবে নাইজারের বরখাস্তকৃত পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসুমি মাসুদো বলেছেন, ইকোয়াস যে সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল— সেটি নাইজারের মানুষের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার কোনো যুদ্ধ নয়— বরং এটি ছিল অবরুদ্ধ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে উদ্ধারের পরিকল্পনা।
গত সপ্তাহের বৈঠকে ইকোয়াস হুমকি দিয়েছিল ৬ আগস্টের সময়সীমা পার হয়ে গেলে নাইজারে তারা সামরিক অভিযান চালাবেই। তবে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
এদিকে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে বন্দি মোহাম্মদ বাজোম সেখানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বলে জানিয়েছেন তার মেয়ে জাজিয়া বাজোম। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, তার বাবা-মা ও ভাইকে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হচ্ছে না এবং প্যালেসের বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর এসব কারণে তাদের প্রত্যেকের ওজন কমে গেছে। বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাজোমের শারীরিক সুস্থতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন জোটের নেতারা।
নাইজার ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। তবে তা সত্ত্বেও দেশটিতে নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে তারা তাদের সেনা মোতায়েন করে রেখেছিল। বর্তমানে নাইজারে ফ্রান্সের দেড় হাজার সেনা মোতায়েকৃত আছে।
ফরাসি এসব সেনার উপস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষ খুশি নয়। শনিবার অসংখ্য বিক্ষোভকারী তাদের ঘাঁটির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। ‘ফ্রান্সকে বের করে দাও’ এমন স্লোগানও দিতে দেখা যায় তাদের। অপরদিকে তারা রাশিয়ার পক্ষে স্লোগান দেন। এছাড়া ইকোয়াস বিরোধী মনোভাবও তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে। নাইজারের সাধারণ মানুষ বলছেন, ইকোয়াস আর কোনো স্বাধীন জোট নেই। এটি পশ্চিমাদের স্বার্থ রক্ষার একটি জোটে পরিণত হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা