ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বরিশাল ও ভোলার নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভোলার ৪০ টি চরের মধ্যে অন্তত ৩০ টি চর কোন কোন ক্ষেত্রে ৫/৬ ফুট পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০ টায় ভোলার লালমোহন উপজেলার চর ছকিনা গ্রামে গাছ চাপায় একজন রিকশা চালক মারা গেছেন।
নিহতের নাম আব তাহের (৫৫), পিতা আবদুল গফুর, সে বাড়ীর কাছেই গাছ চাপা পড়লে তাকে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে বলে নিশ্চিত করেছে ভোলা জেলা প্রান ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা মোতাহের হোসেন।
এদিকে ভোলার মনপুরা থেকে অন্তত ৫ হাজার মানুষকে সরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে বলে জানান মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো শামীম মিঞা। তিনি বলেন রাতেই কিছু মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল, এদিকে পূর্ণিমার কারনে আরও পানি বৃদ্ধির কারনে ঘূর্ণিঝড় নয় এখন আমাদের জোয়ারের পানি বৃদ্ধিই সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান মনপুরা বেড়ীবাধ সংলগ্ন হাজিরহাট-উত্তর ও দক্ষিণ সাকুচিয়া বরাবর রাস্তাটি বিভিন্ন স্থানে
ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, আমরা উদ্যোগ নিয়ে কিছু মেরামত করলেও এটি বর্তমানে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
ভোলা সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন ভোলা সদরে ৪ টি চরের মধ্যে ২ টি প্লাবিত হয়েছে, কিছু মানুষদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তুলাতলি ও দালালবাজার পয়েন্টে বাধ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হলে জিও ব্যাগ ফেলে তা দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়র প্রস্তুতি কর্মসূচী (সিপিপি) ভোলা জেলার উপ পরিচালক আবদুর রশিদ জানান, ভোলার অন্তত ৪০ টি চরের মধ্যে ৩০টি পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব চর সমূহ থেকে মানুষ উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার কার্যক্রম চলছে। এই মুহুর্তে পানিবৃদ্ধিই এখানে প্রধান সমস্যা তিনি জানান, কোন কোন এলাকায় ৬/৭ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিকে বরিশাল কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকতা প্রশান্ত কুমার রায় জানান, জেলার হিজলা উপজেলার পুরাতন হিজলা পয়েন্টে ৩০০ মিটার বাঁধ তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে, এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫ টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার মুলাদী উপজেলার কাজীর চর রাস্তাটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে। বাকেরগঞ্জের নলুয়া ইউনিয়নের বাধ ক্ষতিগ্রস্থ হলে জনগন নিজ উদ্যোগে মেরামত করে। উজিরপুর উপজেলার ৪/৫ টি ইউনিয়নের বাসিন্দারা সম্পূর্ণ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। সদরের পলাশপুর , সাগরদী, চরবাড়িয়া এলাকা পানিতে তলিয়ে গেলে অন্তত ১ হাজার মানুষ পানি বন্দী অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে বরিশাল নদী বন্দর ২ নম্বর সর্তকতা সংকেত দেখিয়ে ৬৫ ফুটের নিচের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষনা করেছে।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদল জানান, পানি বৃদ্ধি ও ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। অন্তত ৪৯১৫ টি সাইক্লোন শেল্টারে ২০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
তবে স্থানীয় উপজেলা কর্মকর্তারা জানান এখনে সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়া এখনও ব্যাপকভাবে শুরু হয় নিl বরিশালের বিষখালি, কচা, স্বরুপকাঠি, তেতুলিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ থেকে ১৫২ সেন্টিমিটার।