ভারতের মণিপুরে নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুট, পুলিশ নিহত
ভারতের মণিপুর রাজ্যে অন্তত দু’টি নিরাপত্তা ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে স্বয়ংক্রিয় বন্দুকসহ অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করেছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা, আরেক ঘটনায় গোলাগুলিতে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাজ্যটির পশ্চিম ইম্ফল ও বিষ্ণুপুর জেলায় এসব ঘটনা ঘটেছে।
মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, নারী ও পুরুষসহ একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা বিষ্ণুপুরে মণিপুর আর্মড পুলিশের দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়নের কিরেনফাবি পুলিশ ফাঁড়ি ও থাঙ্গালাওয়াই পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে তছনছ করে এবং অস্ত্রশস্ত্রগুলো লুট করে।
উচ্ছৃঙ্খল জনতা পূর্ব ইম্ফলের হেইনগাং ও সিংজামেই থানা থেকেও অস্ত্রশস্ত্র লুটপাটের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী তাদের হামলা প্রতিরোধ করে।
সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম ইম্ফলের কৌত্রুক, হারাওথেল, সেঞ্জাম চিরাং এলাকায় সশস্ত্র হামলাকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। এতে এক নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ দুইজন আহত হয়েছেন।
সেঞ্জাম চিরাংয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মণিপুর পুলিশের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। কোনো একজন লক্ষ্যভেদী তাকে গুলি করেছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে।
সন্দেহভাজন বিদ্রোহীরা কৌত্রুক ও সেঞ্জাম চিরাংয়ে নিকটবর্তী পাহাড়শ্রেণি থেকে গুলিবর্ষণ করলে গোলাগুলি শুরু হয়। এতে স্থানীয় গ্রামের এক স্বেচ্ছাসেবক আহত হন।
বিষ্ণুপুর ও চূড়াচাঁদপুর জেলার সীমান্তে ফুগাকচাও ইখাই এলাকায় পাঁচ থেকে ছয়শ মানুষ জড়ো হয়ে আছেন বলে জানা গেছে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এখানে প্রায় ২৫ জন জখম হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টা ধরে মণিপুরে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিক্ষিপ্ত গোলাগুলি ও বিভিন্ন স্থানে উচ্ছৃঙ্খল জনতা বেআইনিভাবে জড়ো হচ্ছে বলে পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মণিপুরের পাহাড়ি ও উপত্যকার জেলাগুলোতে মোট ১২৯টি চেকপয়েন্ট বসানো হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রায় ১০৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এ রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী মেইতেইরা সম্প্রতি জনজাতি সম্প্রদায়ের মর্যাদা দাবি করেছে। এই নিয়ে সংখ্যালঘু জনজাতি সম্প্রদায় কুকিদের সঙ্গে তাদের জাতিগত দাঙ্গা শুরু হয়। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এসব দাঙ্গা ও সহিংসতার ঘটনায় কয়েকশ মানুষ নিহত ও কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সূত্র: এনডিটিভি