অগ্নিমিত্র ছিলেন প্রাচীন ভারতের শুঙ্গরাজ বংশের দ্বিতীয় রাজা। অগ্নিমিত্রের পিতা ছিলেন শুঙ্গ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা পুষ্যমিত্র। রাজা পুষ্যমিত্রের সময় সংঘটিত দুটি বড় যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে তিনি জয়লাভ করেন। এর একটি ছিল বিদর্ভ যুদ্ধ, অপরটি গ্রিক আক্রমণ।
পুষ্যমিত্র সিংহাসন অধিকারের পর, বিদর্ভরাজ্যের শাসনকর্তা যজ্ঞসেন নিজেকে রাজা ঘোষণা করে। এই সময় অগ্নিমিত্র বিদিশার শাসনকর্তা ছিলেন। যজ্ঞসেনের মাধবসেন নামক এক আত্মীয় অগ্নিমিত্রের সাহায্য পাওয়ার আশায় বিদিশার পথে যাত্রা করেন। পথে যজ্ঞসেনের চরদের হাতে ধরা পড়েন। এরপর অগ্নিমিত্র তাঁর মুক্তির জন্য যজ্ঞসেনের কাছে বার্তা পাঠান। যজ্ঞসেন এতে অসম্মত হলে অগ্নিমিত্র বিদর্ভ আক্রমণ করেন। যুদ্ধে যজ্ঞসেন পরাজিত হলে, অগ্নিমিত্র যজ্ঞসেনের রাজ্য তাঁর দুই আত্মীয়ের ভিতর বণ্টন করে দেন।
খ্রিষ্টপূর্ব ১৮০ অব্দের দিকে গ্রিকো-ব্যাকট্রীয় রাজা ডিমেট্রিয়াস প্রথম (Demetrius I) তাঁর রাজ্য আক্রমণ করে, কিছু জায়গা দখল করেন এবং একটি ইন্দো-গ্রিক রাজ্য স্থাপন করতে সক্ষম হন। খ্রিষ্টপূর্ব ১৬৫ অব্দ পর্যন্ত বর্তমান পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলকে তিনি তাঁর এই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। পরবর্তী দুই শতাব্দী ধরে একাদিক্রমে ৩০ জনেরও বেশি গ্রিক রাজারা এই অঞ্চল শাসন করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০ অব্দে এই রাজ্যের মিনান্দর। শুঙ্গরাজ্যের অনেকাংশ দখল করে নেয়। এই সময় এর অযোধ্যা এবং চিতরের নিকটবর্তী মধ্যমিকা পর্যন্ত অগ্রসর হয়। পরে যুবরাজ অগ্নিমিত্র গ্রিকবাহিনীকে পরাজিত করে, রাজ্য রক্ষা করেছিলেন।
খ্রিষ্টপূর্ব ১৪৯ অব্দে পুষ্যমিত্রের মৃত্যুর পর তিনি রাজা হন। তাঁর রাজত্বকালে বড় ধরনের কোনো যুদ্ধ বিগ্রহের খবর জানা যায় না। খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০ অব্দের দিকে অগ্নিমিত্র মৃত্যুবরণ করলে, রাজা হন তাঁর পুত্র সুজ্যেস্থ।
তথ্যসূত্র:
- বাংলাদেশের ইতিহাস (আদিপর্ব)/রমেশচন্দ্র মজুমদার।
- ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।