ইন্টারনেটে অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগী এক মহিলার কাছ থেকে প্রায় ১৪ লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জাহিদুল শেখ নামের এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
শাহজাদপুরের পোতাজিয়া ইউনিয়ন নুকালী গ্রামে থেকে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাতে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত মো: জাহিদুল শেখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জাহিদুল শেখ নুকালী গ্রামের নাজিম শেখের ছেলে। এসময় প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত ০১ টি বাটন মোবাইল ও দুইটি সীম উদ্ধারপুর্বক জব্দ করে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত জাহিদুলক শাহজাদপুর আমলী আদালতে পাঠানো হলে ঘটনার দায় স্বীকার করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট গোলাম রব্বানীর নিকট ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
জবানবন্দি শেষে আসামি জাহিদুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান জানান, শাহজাদপুর থানা এলাকার জনৈকা এক মহিলার ২০১৭ সালে স্বামী মারা যায়। এরপর তিনি তার ৪ সন্তান নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই থাকেন এবং স্বামীর ব্যবসা দেখা শুনা করেন’। এই বছর এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে এক ব্যক্তি নিজেকে শাকিল পরিচয় দিয়ে তার মৃত স্বামীর মোবাইলে কল দিয়ে তাহার সাথে কথা বলে। এক পর্যায়ে সে নিজেকে এতিম বলে পরিচয় দেয় এবং তার সাথে বোনের সম্পর্ক তৈরি করে। এরপর সে কৌশলে উক্ত মহিলার বাড়িতে বেড়াতে আসে।
মহিলা তাকে নিজ ভাইয়ের মতই আপ্যায়ন করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। এরপরে সেই দিনই বিকেলে সে চলে যায়। এর ২/৩ দিন পরে সে বাসায় গিয়ে উক্ত মহিলাকে ফোন দিয়ে বলে যে, তার কাছে থাকা তার ছবি দিয়ে সে অশ্লীল ভিডিও বানাইছে এবং সে তা ইন্টারনেটে ছাড়িয়ে দিবে। এরপর সে মহিলার কাছ থেকে প্রায় ১৪ লাখ টাকা বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। সে নিজেকে উক্ত অসহায় মহিলার সামনে বিভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে। সে মাঝে মাঝে নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে এবং মাঝে মাঝে পুলিশ হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেয়। এভাবে সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে উক্ত অসহায় মহিলার কাছ থেকে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এরপর সে আরও টাকা চাইলে মহিলার কাছে টাকা না থাকায় সে দিতে ব্যর্থ হলে আবার ভিডিও ছাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। নিরুপায় হয়ে উক্ত মহিলা আত্নহত্যার চেষ্টা করে। উক্ত খবর পাওয়ার পরে শাহজাদপুর থানা পুলিশ উক্ত মহিলার সাথে যোগাযোগ করে এবং তার সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে আত্নহত্যা করার সিদ্ধান্ত পাল্টায়। পরে উক্ত মহিলা থানায় অভিযোগ দিলে শাহজাদপুর থানায় মামলা রুজু হয়।
তিনি আরো জানান, আসামী জাহিদুলের সুনির্দিষ্ট কোন পেশা নাই। প্রতারণা করাটাই তার মুল কাজ। সে ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। সে নারী এবং পুরুষ উভয় কন্ঠে কথা বলতে পারাসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কন্ঠ নকল করতে পারে।