নাইজারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হলেন অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া চিয়ানি
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান আবদুরাহমানে চিয়ানি নিজেকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি ওমর চিয়ানি নামেও পরিচিত।
শুক্রবার নাইজারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ভাষণে ওই ঘোষণা দেন চিয়ানি। তিনি বলেন, নাইজারে বেশ কিছু সমস্যার কারণে তার বাহিনী ক্ষমতা নিয়েছে। এসব সমস্যার মধ্যে অনিরাপত্তা, অর্থনৈতিক দুর্দশা ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে আছে দুর্নীতি।
গত বুধবারেই চিয়ানির বাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে উৎখাত করেছে।
টেলিভিশনের ভাষণে চিয়ানি বিশ্বে নাইজারের মিত্রদের উদ্দেশ্যেও বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, জান্তা দেশের সব আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি এবং মানবাধিকারকেও সম্মান জানাবে।
জান্তা সরকার নিয়ে নাইজারের নাগরিকদের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ বলছেন, দেশে অনিরাপত্তা এতটাও ছিল না যাতে অভ্যুত্থানের যৌক্তিকতা প্রমাণ হয়। আবার অন্যরা অভ্যুত্থানকে সমর্থন করেছেন। বেসামরিক সরকারের হাতে কবে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবেন তা ভাষণে জানাননি চিয়ানি।
বিবিসি জানায়, ২০১১ সাল থেকে চিয়ানি প্রেসিডেন্টের গার্ড বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০১৮ সালে নাইজারের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহামাদু ইসোফোর আমলে তিনি জেনারেল পদে উন্নীত হন।
২০১৫ সালেও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় চিয়ানি সম্পৃক্ত ছিলেন। তবে আদালতে সেকথা অস্বীকার করেছিলেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোম এখনও গার্ড সেনা সদস্যদের হাতে বন্দি। তবে তিনি সুস্থ আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ২৬ জুলাই রাজধানী নিয়ামের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বাজোমকে বন্দি করেন প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের সদস্যরা। এরপর দেশের সংবিধান স্থগিত করা হয়। প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের সেনা সদস্যদের শুরু করা এ অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী সমর্থন জানায়।
২০২১ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচত হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন বাজোম। নাইজারের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি পশ্চিমাদের মিত্র হিসাবেই পরিচিত।
একসময় নাইজারে উপনিবেশ স্থাপন করা ফ্রান্স বাজোমকে সমর্থন করে। জেনারেল চিয়ানির ভাষণের পর ফ্রান্স বলেছে, তারা অভ্যুত্থানের কোনও নেতাকে স্বীকৃতি দেবে না। কেবল বাজোমকেই নাইজারের রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে তারা স্বীকৃতি দেবে।
আফ্রিকান ইউনিয়ন, পশ্চিম আফ্রিকান আঞ্চলিক ব্লক (ইকোওয়াস), ইইউ এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নাইজারে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে।
তবে রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারের নেতা বারবারই অভ্যুত্থানের প্রশংসা করেছেন। একে বিজয় বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।