ওয়াগনার যোদ্ধারা বেলারুশে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে
রাশিয়ার সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলে দেওয়া ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের ওয়াগনার বাহিনী চুক্তি অনুযায়ী বেলারুশে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভাড়াটে সেনা গ্রুপটির একজন শীর্ষ কমান্ডার।
গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ইউক্রেইন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্র হয়ে উঠেছিল প্রিগোজিনের ওয়াগনার বাহিনী।
কিন্তু গত ২৩ জুন হঠাৎ করে প্রিগোজিন রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসেন এবং রাতারাতি ইউক্রেইন থেকে সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার দক্ষিণের একটি নগরী দখলের পর মস্কো অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। পরদিন দিনভর যাত্রা করে এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব অতিক্রম করে মস্কোর ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছিল বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনী।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় ওই বিদ্রোহের অবসান হয়েছে এবং বিদ্রোহীদের কোনো সাজার মুখে পড়তে হবে না বরং তাদের রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যেতে দেওয়া হবে এই শর্তে একটি চুক্তি হয়েছে।
বিদ্রোহের পর থেকে প্রিগোজিন ও তার বাহিনী ঠিক কোথায় অবস্থান করছে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পরছে না বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ওয়াগনার যোদ্ধাদের একটি অংশ বিদ্রোহে যোগ দিলেও বাকি অংশ বিদ্রোহে রাজি হয়নি বলে জানা গেছে। যারা বিদ্রোহে অংশ নেয়নি তারা চাইলে রাশিয়ার নিয়মিত সেনাবাহিনীর অংশ হতে পারবে বা বাড়ি ফিরে যেতে পারবে বলেও বিদ্রোহ নিষ্পত্তি চুক্তিতে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
তবে প্রিগোজিন এবং বিদ্রোহে অংশ নেওয়া ওয়াগনার যোদ্ধাদের রাশিয়া ছাড়তে হবে।
গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো বলেছিলেন, প্রিগোজিন এবং তার যোদ্ধারা এখনো রাশিয়ায় অবস্থান করছে। যা বিদ্রোহ চুক্তির বাস্তবায়নকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।
এরপর শনিবার ওয়াগনারের শীর্ষ কমান্ডারদের একজন অ্যান্টন ইয়েলিজারোভ টেলিগ্রাম ম্যাসেজিং অ্যাপে একটি চ্যানেলে বলেন, বেলারুশে যাওয়ার আগে প্রিগোজিনের নির্দেশে ওয়াগনার যোদ্ধারা বর্তমানে ছুটি কাটাচ্ছে। অগাস্টের শুরু পর্যন্ত তারা ছুটি কাটাবেন।
‘ইয়েভগেনি প্রিগোজিন অন টেলিগ্রাম’ চ্যানেলে তিনি আরো বলেন, ‘‘স্থানীয় সরকার এবং প্রশাসনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে আমাদের ঘাঁটি এবং প্রশিক্ষণ ক্যাম্প প্রস্তুত করতে হবে। বেলারুশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির সাথে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং রসদ সরবরাহ ব্যবস্থাও স্থাপন করতে হবে।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্স থেকে টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা এই বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
বিদ্রোহের ওই ঘটনার পর থেকে একেবারে নিশ্চুপ হয়ে আছেন প্রিগোজিন; যা তার স্বভাব বিরুদ্ধ। ২৬ জুন নিজের যোদ্ধাদের বিদ্রোহের প্রতি সমর্থন জানানোর পর থেকে তার আর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।