রাজনীতির বাতিঘর পঙ্কজ ভট্টাচার্যের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
বরিশাল নগরীর কালিবাড়ি রোডের খেয়ালি মিলনায়তনে মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকেল চারটায় সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির উদ্যোগে গত শতকের ষাটের দশকের অন্যতম ছাত্রনেতা, রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্যের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির আয়োজিত এই সভায় আলোচনা, স্মৃতিচারণা, আর পুষ্পাঞ্জলিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় পঙ্কজ ভট্টাচার্যের প্রতি।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে মঞ্চে রাখা পঙ্কজ ভট্টাচার্যের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেনে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যাক্তিগত ভাবেও অনেকেই। এ সময় তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এরপর পঙ্কজ ভট্টাচার্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আলোচনা ও স্মৃতিচারণা পর্বে বক্তব্য দেন,। এতে সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি নারীনেত্রী লেখক প্রভাষক টুনু কর্মকারের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে। তিনি বলেন, কিছু কিছু মানুষ জন্মগ্রহণ করেন যাঁরা মানুষকে দেওয়ার জন্যই এই পৃথিবীতে আসেন, কিছু পাওয়ার জন্য নয়। পঙ্কজ ভট্টাচার্য ছিলেন তেমনি একজন। তাঁর মতো রাজনীতিক আজকের দিনে বিরল।
আলোচনা পর্বে তাঁর বক্তব্য দেন সামাজিক আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহম্মেদ এবং ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনীক সম্মাদক সামসুল অলম জুলফিকার, বিশিষ্টজন আনোয়ার জাহিদ, বরিশাল মহিলা পরিষদের সভাপতি রাবেয়া খাতুন, নারীনেত্রী শাহ সাজেদা, প্রফেসর অধ্যক্ষ ইমানুল হাকিম, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সেলিম, সনাক সভাপতি অধ্যক্ষ গাজী জাহিদ হোসেন, এডভোকেট হিরনকুমার দাস মিঠু, অধ্যাপক নজরুল হক নিলু, অধ্যাপিকা দীপ্তি রানী ঘোষ, সংস্কৃতিক সমন্বয় পরিষদের সম্পাদক স্নেহাংসু বিশ্বাস, এডভোকেট একে আজাদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
“পঙ্কজ ভট্টাচার্য ছিলেন রাজনীতির বাতিঘর। তিনি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি। তাঁর আদর্শ ছিল উদার অসাম্প্রদায়িক মানবিক গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ করাই ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম লক্ষ্য। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি নির্ভীকভাবে অবস্থান নিয়েছেন। ভয় দেখিয়ে বা লোভ দেখিয়ে তাঁকে আদর্শ থেকে বিচ্যুত করা যায়নি।”
তাঁকে নিয়ে এসব কথাই বলেছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা। সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির সম্পাদক এনায়েত হোসেন শিবলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়।
পঙ্কজ ভট্টাচার্যের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন কিশের কুমার বালা। এতে বলা হয়, পঙ্কজ ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৩৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায়। তিনি দেশব্রতী পরিবারে বড় হয়েছেন। জাগতিক মোহ বিবর্জিত হয়ে তিনি দেশ ও সমাজের কল্যাণে কাজ করেছেন। পঙ্কজ ভট্টাচার্য ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। জেল-জুলুম সহ্য করে কাজ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল তিনি জীবনের শেষদিন অবধি আদর্শে অটল থেকেছেন।