টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে আটলান্টিকে নিখোঁজ পর্যটকবাহী ডুবোযান

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে আটলান্টিকে নিখোঁজ পর্যটকবাহী ডুবোযান

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে মহাসাগরে ডুব দেওয়া পর্যটকবাহী একটি ডুবোযানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে মধ্য আটলান্টিকে

যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ডের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, টাইটান নামের ওই টুরিস্ট সাবমেরিনে পাঁচজন আরোহী রয়েছেন। রোববার ডুব দেওয়ার পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় সাবমারসিবলটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ট্যুর অপারেটর ওশানগেট বলেছে, টাইটানে থাকা পাঁচ আরোহীকে উদ্ধারের সম্ভব্য সব পথই তারা খতিয়ে দেখছে।

বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, মার্কিন ও কানাডার নৌবাহিনী এবং গভীর সমুদ্রে কাজ করা বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলো উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করছে।

- বিজ্ঞাপন -

১৯১২ সালে ইংল্যান্ডের নিউ সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে প্রথম যাত্রায় বিশাল আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল তখনকার সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিক, প্রাণ গিয়েছিল দেড় হাজার মানুষের।

দুটুকরো হয়ে যাওয়া টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষটি রয়েছে আটলান্টিকের ৩ হাজার ৮০০ মিটার নিচে। ১৯৮৫ সালে ওই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পর থেকে বহু সংস্থা এ নিয়ে গবেষণা করেছে।

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে আটলান্টিকে নিখোঁজ পর্যটকবাহী ডুবোযান
সাগরের তলদেশে বিধ্বস্ত টাইটানিক। ছবি বিবিসি

পর্যটন সংস্থা ওশানগেট টাইটানিকের ওই ধ্বংসাবশেষ দেখাতে নিয়ে যায় পর্যটকদের। সেজন্য তারা ব্যবহার করে কার্বন-ফাইবারের তৈরি ট্রাকের আকারের একটি সাবমারসিবল বা ডুবোযান, যার নাম টাইটান।

টাইটানিক দেখার এই যাত্রা ছিল আট দিনের। নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জনস থেকে যাত্রা করেন পর্যটকরা। মাথাপিছু টিকেটের দাম আড়াই লাখ ডলার। সাধারণত চার দিন চলার মত অক্সিজেন নিয়ে ডাইভ শুরু করে এই টুরিস্ট সাবমেরিন।

যুক্তরাষ্ট্র কোস্ট গার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়, তখনও ৭০ থেকে ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন টাইটানে ছিল বলে তারা ধারণা করছেন।

- বিজ্ঞাপন -

তিনি জানান, দুটি বিমান, একটি সাবমেরিন এবং সোনার বয়া দিয়ে টাইটানের খোঁজে তল্লাশি চলছে। কিন্তু স্থলভাগ থেকে দূরত্বের কারণে সাগরের ওই এলাকায় এ ধরনের তল্লাশি অভিযান খুবই কঠিন। তারপরও নিখোঁজ পর্যটকদের নিরাপদে উদ্ধারের লক্ষ্যে ‘সম্ভব সব কিছু’ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে আটলান্টিকে নিখোঁজ পর্যটকবাহী ডুবোযান
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে আটলান্টিকে নিখোঁজ পর্যটকবাহী ডুবোযান 36

নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন ৫৯ বছর বয়সী ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ও অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং। গত রোববার তিনি সোশাল মিডিয়ায় ঘোষণা দেন, অবশেষে তিনি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাচ্ছেন এবং সেজন্য তিনি গর্বিত।

পর্যটন সংস্থা ওশানগেট তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, টাইটানে চড়ে টাইটানিক দেখতে যাওয়ার এই অভিযাত্রা “দৈনন্দিন জীবনের বাইরে পা রাখার এবং সত্যিই অসাধারণ কিছু আবিষ্কার করার এক দারুণ সুযোগ।”

- বিজ্ঞাপন -

চলমান অভিযাত্রা ছাড়াও ২০২৪ সালের জুনে আরও দুটো অভিযাত্রার পরিকল্পনার কথা তাদের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছিল।

ডুবোযান টাইটানে সাধারণত একজন পাইলট, একজন ‘কনটেন্ট এক্সপার্ট’ এবং তিনজন পর্যটক থাকেন। নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জনস থেকে পর্যটকদের এবং টাইটানকে আটলান্টিকের নির্ধারিত জায়গায় নিয়ে যায় পোলার প্রিন্স নামের একটি জাহাজ।

সেখান থেকে টাইটানিক দেখানোর জন্য যাত্রী নিয়ে ডুব দেয় এই সাবমারসিবল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ডুব দিয়ে আবার উঠে আসতে সময় লাগে মোটামুটি আট ঘণ্টা।

ওশানগেটের মালিকানায় মোট তিনটি সাবমারসিবল থাকলেও কেবল টাইটানই টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষে পৌঁছানোর মত গভীরে ডুব দিতে সক্ষম।

ডুবোযানটির ওজন ১০ হাজার ৪৩২ কেজি; ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী সেটি ১৩ হাজার ১০০ ফুট পর্যন্ত গভীরতায় পৌঁছাতে পারে এবং পাঁচজন আরোহীর জন্য ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন ধারণ করতে পারে।

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে আটলান্টিকে নিখোঁজ পর্যটকবাহী ডুবোযান
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে আটলান্টিকে নিখোঁজ পর্যটকবাহী ডুবোযান 37

গতবছর টাইটানে চড়ে ভ্রমণ করার সুযোগ হয়েছিল সিবিএস টেলিভিশনের সাংবাদিক ডেভিড পোগের। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, পানির নিচে জিপিএস বা রেডিও কাজ করে না। ফলে সাবমারসিবল আর জাহাজের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করা একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

“যখন জাহাজটি সরাসরি ডুবোযানের উপরে থাকে, তখন তারা ক্ষুদেবার্তা লেনদেন করতে পারে। এখন সেই যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এর মানে হল, জাহাজ থেকে পাঠানো ক্ষুদেবার্তার কোনো উত্তর ডুবোযান থেকে আসছে না।”

তিনি বলেন, আরোহীদের টাইটানে বসানোর পর বাইরে থেকে বোল্ট লাগিয়ে পুরো ডুবোযান সিল করে দেওয়া হয়। ফলে ভেতরে থাকা আরোহীদের বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। এমনকি সাবমারসিবলটি যদি নিজে নিজে সমুদ্রপৃষ্ঠে উঠে আসতে পরে, বাইরের কারো সাহায্য ছাড়া আরোহীদের পক্ষে বের হওয়া সম্ভব না।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!