সোমাবার রাতে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। সোমবার রাতে শাহবাগ থানায় মামলাটি করা হয়ে।
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু নথির ছবি তোলার অভিযোগ এনে শাহবাগ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী।
রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৮৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে বিকেল তিনটার দিকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাকে একটি কক্ষে আটক করেন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রোজিনা ইসলামকে ৯টার দিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই ভবনে যান। এসময় গণমাধ্যমকর্মীরা দীর্ঘ সময় ধরে রোজিনাকে আটকে রাখার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানাননি। এরপরে বিকেলে সাংবাদিকেরা সচিবালয়ের বাইরে জড়ো হয়ে রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও আটকে রাখার প্রতিবাদ করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন প্রথম আলোকে বলেন, রোজিনা ইসলাম অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় অনন্য। আন্তর্জাতিকভাবে তাঁর স্বীকৃতি আছে। এমন একজন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে তাঁকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা অন্যায়, অনভিপ্রেত। কী কারণে এভাবে আটকে রাখা হয়েছে, অসুস্থ হওয়ার পরও তাঁকে হাসপাতালে না নেওয়ার বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। রোজিনাকে হেনস্তা করার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে হবে।
পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার প্রতিবাদ, মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে থানার সামনে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা। তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের পদত্যাগও দাবি করেন।
এছাড়াও সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা নিউইয়র্কভিত্তিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র সহ আরও কয়েকটি সংগঠন।