ইরান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে সংঘর্ষ, নিহত ৩
ইরান ও আফগানিস্তানের একটি সীমান্ত চৌকির কাছে গোলাগুলিতে দুই ইরানি সীমান্তরক্ষী ও এক তালেবান যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। শনিবার এক তালেবনা মুখপাত্র ও ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
তবে কী নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয় তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পানির অধিকার নিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে চলা উত্তেজনার মাঝে এ ঘটনা ঘটল, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইরানের অভিযোগ, আফগানিস্তানের তালেবান শাসকরা ইরানের শুষ্ক পূর্বাঞ্চলে প্রবেশ করা হেলমান্দ নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে ১৯৭৩ সালে হওয়া চুক্তি লঙ্ঘন করছে। তালেবান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
এক বিবৃতিতে আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল নাফি টাকোর বলেছেন, “আজ নিমরোজ প্রদেশে ইরানি সীমান্তরক্ষীরা আফগানিস্তানের দিকে গুলিবর্ষণ করেছে, পাল্টা পদক্ষেপে এর জবাব দেওয়া হয়েছে।
“পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। ইসলামিক আমিরাত (আফগানিস্তান) প্রতিবেশীদের সঙ্গে লড়াই করতে চায় না।” তিনি জানিয়েছেন, গোলাগুলিতে উভয়পক্ষে একজন করে নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
কিন্তু পরে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ইরনা জানায়, দুই ইরানি সীমান্তরক্ষী নিহত এবং দুই বেসামরিক আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের পর ইরানি কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মিলাক-জারাঞ্জ সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে। তবে এই সীমান্ত ক্রসিংটিতে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেনি।
ইরানি পুলিশের উপপ্রধান কাসেম রেজায়ি এর আগে বলেছেন, “সুপ্রতিবেশী সুলভ আচরণ ও আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে তালেবান বাহিনী সাসোলি চেকপয়েন্ট লক্ষ্য করে গুলি শুরু করে, এর একটি নিষ্পত্তিমূলক প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়।”
এক বিবৃতিতে ইরানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বলেছে, তারা তাদের উন্নত অস্ত্র ব্যবহার করে অপরপক্ষের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে।
আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এনায়েতুল্লাহ খোয়ারাজমি বলেছেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ আবারও নিমরোজ প্রদেশের কং জেলার সীমান্ত এলাকায় ইরানি সেনারা গুলিবর্ষণ করে, এতে সংঘর্ষ শুরু হয়।
“যে কোনো সমস্যার জন্য সংলাপ ও আলোচনাকে যৌক্তিক পথ বিবেচনা করে ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তান। যুদ্ধের এবং নেতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অজুহাত তৈরি করা কারও স্বার্থের পক্ষে যাবে না।”
চলতি মাসের প্রথম দিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ১৯৭৩ সালের চুক্তির অধীনে ইরানের পানির অধিকারকে অবজ্ঞা করার জন্য আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে সতর্ক করেছিলেন। রাইসির এই পরোক্ষ হুমকিকে আমলে নেয়নি তালেবান, বরং গোষ্ঠীটির এক সাবেক কর্মকর্তা রাইসিকে ব্যঙ্গ করে একটি ভিডিও ছাড়লে তা ভাইরাল হয়।