নাটোরের বিভিন্ন এলাকার লিচু বাগানের গাছ থেকে এখন লিচু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। বৈরি আবহাওয়ার কারনে ফলন কিছুটা কম হলেও ভালো দাম পেয়ে খুঁশি কৃষক। আর করনায় কৃষি পন্য লিচু বাজারজাত করণের সবধরনের সহযোগিতার কথা জানান প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।
লিচু গ্রাম খ্যাত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুরের বাগানগুলোর গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে থোকা থোকা লাল লিচু। টসটসে লিচুর ভারে নুয়ে পড়েছে গাছগুলো। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে টসটসে লিচু। তবে চলতি বছর অতি খরা ও বৈরী আবহাওয়ার কারনে গত মৌসুমের তুলানায় লিচুর ফলন অনেক কম হওয়ার আশংকা করছেন চাষীরা।
একই কারণে লিচুর আকার ও স্বাদের পরিবর্তন হয়েছে বলে জানান চাষীরা। কোন কোন বাগানে লিচু পাকা ও হলুদ রং ধারনের আগেই ফেটে যাচ্ছে । ফলে লিচুর বাজারজাতকরণ নিয়ে শঙ্কিত অনেক চাষী ও লিচু ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে লিচুর দাম ভালো থাকায় ফলনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে চাষীরা।
কৃষক মো. রমিজ উদ্দিন জানান, চলতি বছরে আবহাওয়ার কারণে লিচুর ফলন কম হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছরে দাম বেশি। তাই ফলন কম হলেও লাভের মুখ দেখতে পাবেন বলে তিনি জানালেন।
কৃষক মো. আলমাস আলী জানান, গত বছরে পর্যাপ্ত পরিমাণে নীচু হয়েছিল। দাম ছিল বারোশো টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৬০০ শত টাকা। তবে এ বছরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রচন্ড খড়ায় নিচু ফেটে গেছে এবং পরিমাণে কম হয়েছে। তবুও বাজারে দাম বেশির থাকার কারণে লোকসান পুষিয়ে যাবে বলে তিনি জানালেন।
ঢাকার পাইকার মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে নাটোরের এই আড়তে নিচু কিনতে হচ্ছে ২০০০ হাজার থেকে ২২০০ শত টাকায়।পথ খরছ দিয়ে এই পণ্য ঢাকা পৌঁছাতে ব্যয় হবে প্রায় ২৫০০ শত টাকা। ঢাকা শহরেই যদি ২৫০০ শত টাকা দাম বলে তাহলে ব্যবসায় লোকসান হবে। ২৮০০ শত টাকা বিক্রি করলে লাভের মুখ দেখতে পাবেন বলে জানালেন তিনি।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তমাল হোসেন জানান, কৃষি পন্য লিচু বাজারজাত করনের সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে কৃষক যাতে বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়ে দেখভাল করা হচ্ছে বলে জানালেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, এ বছরে লিচুর ফুলের সময় কিছুটা বৈরি তাপমাত্রার কারনে কিছু কিছু বাগানে সমস্যা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ বাগানে প্রচুর ফল আছে বলে জানান তিনি।
চলতি বছর জেলায় ৯৮৩ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে সারে আট হাজার মেট্রিকটন। যা বাজার মূল্যে কয়েক শত কোটি টাকা।