গাজীপুর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমতউল্লাহকে হারিয়ে জায়েদা খাতুনের জয়

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
5 মিনিটে পড়ুন

গাজীপুর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমতউল্লাহকে হারিয়ে জায়েদা খাতুনের জয়

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লার সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শেষে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন তিনি।

৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট আর স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। এবারের নির্বাচনে মোট মেয়র প্রার্থী ছিলেন আটজন।

মাঝরাতে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও জায়েদা খাতুনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন যে এই নির্বাচনে ‘নৌকা জিতেছে আর ব্যক্তি হেরেছে।’

“আমি এর আগে মেয়রের দ্বায়িত্ব পালন করেছি। আমি আমার সকল অভিজ্ঞতা দিয়ে নগরবাসীর জন্য ভালো কাজগুলো করতে সহায়তা করতে চাই।”

- বিজ্ঞাপন -

গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও সাবেক আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন এবারের নির্বাচনের আগে হঠাৎই আলোচনায় আসেন তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাওয়ার পর।

ফলাফলে এগিয়ে থাকার খবর পেয়ে জায়েদা খাতুনের সমর্থকরা ভিড় করেন বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামের সামনে। ভোট গ্রহণ শেষ হবার পর প্রাথমিক ফলাফল থেকে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। নির্বাচনে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

গাজীপুর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমতউল্লাহকে হারিয়ে জায়েদা খাতুনের জয়
ফলাফলে এগিয়ে থাকার খবর পেয়ে জায়েদা খাতুনের সমর্থকরা ভিড় করেন বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামের সামনে। ছবি সংগৃহীত

এর আগে নির্বাচনের পরিবেশে নিয়ে ভোটারদের মধ্যে কোনও অভিযোগ না থাকলেও ইভিএম নিয়ে বেশ ক্ষোভ দেখা যায় কেন্দ্রগুলোতে। অনেকেই বলেছেন ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে অনেকের আঙুলের ছাপ মিলতে দেরি হয়েছে।

ভোটকেন্দ্রে থাকা প্রিজাইডিং অফিসাররাও কিছু কেন্দ্রে টেকনিক্যাল সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া যারা ভোটার তাদের অনেককে বিশেষ করে বয়স্কদের ইভিএম এর ব্যবহার বুঝাতেও সময় লেগেছে বলে ভোট গ্রহণে ধীরগতি ছিল বলে জানান কর্মকর্তারা।

আর ভোটগ্রহণ ধীরগতিতে এগুনোর কারণে অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। যদিও ভোটকেন্দ্রে থাকা ভোটাররা বিকাল চারটার মধ্যে ভোট দিতে পারেননি- তবে তাদের সবাই ভোট নেওয়ো হয়েছে বলে জানা গেছে।

- বিজ্ঞাপন -

গাজীপুরে এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি। তবে বিএনপির বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

গাজীপুর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমতউল্লাহকে হারিয়ে জায়েদা খাতুনের জয়
ফলাফলের একটি সময়। ছবি সংগৃহীত

এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মেয়র প্রার্থী শাহনুর ইসলাম রনি।

“তারা রীতিমতো এমন ভয় পেয়ে গেছেন। একজন রাত্রিবেলা বাসা থেকে বের হয়ে গেছে, তার স্ত্রী-সন্তান আছে ঘরে। উনি অন্য মাধ্যমে আমাকে জানিয়েছেন যে নিরাপদে আছেন কিন্তু এজেন্ট আর থাকতে পারছেন না”- বলেন শাহনুর ইসলাম।

- বিজ্ঞাপন -

টঙ্গিসহ গাজীপুরের অধিকাংশ জায়গায় এজেন্টদের ভয় দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

অন্যদিকে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, যার মা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। মি. আলম ভোট দেয়া শেষে বলেছেন তিনি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকবেন।

“অনেকেই গোপনে হুমকি দেয়ার চেষ্টা করেছে তাতে কিছু আসে যায় না। সরকার ও নির্বাচন কমিশন বলেছে তারা এই ভোটটা সুষ্ঠু করবে -শেষ পর্যন্ত দেখবো”।

ইভিএমে ভোটগ্রহণে ধীরগতির প্রসঙ্গে মি.আলম বলেন “অনেকে হয়তো কৌশল অবলম্বন করবে, ভোটতো চারটায় শেষ। আমরা মনে করি তারা এটা তাড়াতাড়ি রেজাল্ট দিতে পারে। আমরা দেখবো এটা কি তারা রাতে দেয় নাকি দিনে দেয়। সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করবো”।

এর আগে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, এই নির্বাচনে ৪৮০টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে প্রায় ৩৫১টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। পরে সেগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পুলিশের পাশাপাশি আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। একইসাথে সিসিটিভি ক্যামেরাও লাগানো হয়।

গাজীপুর নির্বাচনে মোট আট জন প্রার্থী মেয়র পদের জন্য প্রতিযোগিতা করছেন।

গাজীপুর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমতউল্লাহকে হারিয়ে জায়েদা খাতুনের জয়
কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ছবি সংগৃহীত

এই নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজারের বেশি। নির্বাচন পরিচালনায় থাকছেন ৪৭৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, প্রায় সাড়ে তিন হাজার সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, প্রায় সাত হাজার পোলিং অফিসার এবং প্রায় ১২ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা।

এদিকে গাজীপুরে এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি। দলটি বলছে, ২০১৮ সালের অভিজ্ঞতা থেকে তারা এ সরকারের অধীনে সব ধরনের নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের ৫টি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে বলেই মনে করেন অনেকে।

তফসিল অনুযায়ী দেশের ৫টি সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে গাজীপুরের নির্বাচনের পর আগামী ১২ই জুন খুলনাবরিশাল এবং ২১ শে জুন সিলেটরাজশাহী সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!