বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে আবার হাসপাতালে ভর্তি
চিকিৎসকদের পরামর্শে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক একিউএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘’খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন ধরণের রোগে ভুগছেন। তার সুচিকিৎসা প্রয়োজন। তার নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষার জন্য আজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। কয়েকটি পরীক্ষায় সময় লাগবে, এজন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।‘’
শনিবার সন্ধ্যায় নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। এই সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।
তার লিভার, হার্টের সমস্যা, আথ্রাইটিস, ফুসফুস, ডায়াবেটিস ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে। এর আগে সর্বশেষ গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল।
গত বছরের ২৮শে অগাস্ট খালেদা জিয়াকে সর্বশেষ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। দুইদিন হাসপাতালে থাকার পর ৩১শে অগাস্ট তিনি বাড়ি ফেরেন।
এর আগে জুন মাসে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হার্টে একটি রিং বসানো হয়। সেই সময় চিকিৎসকরা বলেছিলেন, হার্টে আরও দুটি ব্লক রয়ে গেছে। সেই সময় একটানা তের দিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল।
এর আগের বছর ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার তাকে পাঁচ দফায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল।
এরপর নভেম্বর মাসে আবার হাসপাতালে ভর্তি হলে টানা ৮১দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ফেব্রুয়ারিতে বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। সেই সময় চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, লিভার সিরোসিস রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া। তখন তার শরীরে কয়েক দফায় অস্ত্রোপচার করা হয়।
শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর বিদেশে তার উন্নত চিকিৎসার দাবীতে নানা কর্মসূচী পালন করেছে বিএনপি। সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার পরিবার থেকেও আবেদন করা হয়েছে। তবে আইনে সেই সুযোগ নেই বলে সরকার জানিয়েছে।
খালেদা জিয়া পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালের ৮ই জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে কারাবন্দী হয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেই সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে হাইকোর্ট। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাতেও তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
দুই বছর পর ২০২০ সালে তাকে বিদেশে না যাওয়া এবং নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেয়া- এই দুই শর্তে কারাগার থেকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়। পরবর্তীতে কয়েক দফায় সেই মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।