ইয়েমেনে ত্রাণ নিতে এসে পদদলিত হয়ে নিহত ৭৮
ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি স্কুলে রমজান উপলক্ষে সাহায্য নিতে জড়ো হওয়া মানুষের মধ্যে হুড়োহুড়িতে পিষ্ট হয়ে অন্তত ৭৮ জন মারা গেছে।
শহরের বাব-আল-ইয়েমেন এলাকায় ওই দুর্ঘটনার পরের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির দৃশ্য সম্বলিত ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছেন শত শত মানুষ সেখানকার একটি স্কুলে সমবেত হয়েছিলো অনুদান সংগ্রহের জন্য, যার পরিমাণ জনপ্রতি নয় ডলার।
২০১৫ সালে ইয়েমেনের সরকারকে উৎখাতের পর থেকে হুতি বিদ্রোহীরা শহরটির নিয়ন্ত্রণ করছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যারা সেখানে সাহায্য বিতরণ করছিলো তাদের আটক করা হয়েছে এবং ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সানার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন যে এ ঘটনায় আরও অনেকে আহত হয়েছে এবং এর মধ্যে তের জনের অবস্থা গুরুতর।
একজন হুতি নিরাপত্তা কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন যে নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও আছে।
বার্তা সংস্থা দ্যা এসোসিয়েটেড প্রেস দুজন প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করেছে। তারা বলেছে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য হুতি যোদ্ধারা খোলা আকাশে গুলি ছুঁড়ে যা কার্যত বিদ্যুতের তারে আঘাত করলে একটি বিস্ফোরণ হয়। এ থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে বলে তারা জানান।
এক মাস পানাহার থেকে বিরত থেকে রোজা পালনের পর রমজান মাসের শেষ দিনগুলোতে এসে এ ঘটনা ঘটলো।
২০১৫ সাল থেকেই সংঘাতে জর্জরিত ইয়েমেন। হুতি বিদ্রোহীরা তখন দেশটি পশ্চিমের বড় অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছিলো।
প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি বিদেশে পালিয়ে যান। পরে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটে তাকে ক্ষমতায় পুনর্বহালের জন্য হস্তক্ষেপ করে। তারপর থেকে সামরিক সংঘাত চলছেই বছরের পর বছর ধরে।
উভয় পক্ষের লড়াইয়ে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর দেশটির প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষেরই এখন সাহায্য দরকার হয়ে পড়েছে।
তবে গত সপ্তাহে লড়াইরত দু পক্ষের মধ্যে বন্দি বিনিময় শুরু হয়েছে। এটিকে আট বছরের সংঘাত অবসানের একটি উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
হুতি সুপ্রিম ইভলিইশ্যুনারি কমিটির প্রধান মোহাম্মেদ আলী আল হুতি এ দুর্ঘটনার জন্য দেশটির চরম মানবিক সংকটকেই দায়ী করেছেন।
“যা ঘটেছে সেজন্য আমরা যেসব দেশ আগ্রাসন চালাচ্ছে তাদেরই দায়ী করছি। আগ্রাসন ও অবরোধের কারণেই ইয়েমেনের মানুষ এই তিক্ত বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে,” এক টুইট বার্তায় বলেছেন তিনি।