দুবাইয়ে আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিহত ১৬
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৯ জন। শনিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে দুবাইয়ের একটি আবাসিক ভবনের চতুর্থ তলায় অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
রোববার (১৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুবাইয়ের একটি আবাসিক ভবনের চতুর্থ তলায় ব্যাপক অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জন নিহত এবং নয়জন আহত হয়েছেন। দুবাই সিভিল ডিফেন্সের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, শনিবার বিকেলে আল রাসে আগুনের সূত্রপাত হয়।
খালিজ টাইমস বলছে, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর দুবাই সিভিল ডিফেন্স অপারেশন রুমকে প্রথমে আগুনের বিষয়ে অবহিত করা হয়। পরে একটি দল ছয় মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার কাজ শুরু করে।
বন্দর সাইদ এবং হামরিয়াহ ফায়ার স্টেশনের দলগুলো এই অগ্নিনির্বাপণ কর্মকাণ্ডে যোগ দেয়। পরে দুপুর ২টা ৪২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়, এরপর শুরু হয় কুলিং অপারেশন।
অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে দুবাই সিভিল ডিফেন্সের ওই মুখপাত্র বলেছেন, আগুন নেভানোর জন্য দমকলকর্মীরা কাজ করলেও আহতদের জরুরি চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
মুখপাত্র আরও বলেছেন, ভবনের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা মেনে চলার অভাবের কারণে আগুন লাগে বলে প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে। তার ভাষায়, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে একটি বিশদ প্রতিবেদন হাতে পেতে ব্যাপক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’
অগ্নিকাণ্ডের শিকার ওই ভবনের একটি দোকানের শ্রমিকের মতে, তারা ‘বিকট শব্দ’ শুনতে পান। তার ভাষায়, ‘আমরা কয়েক মিনিটের জন্য কী ঘটছে তা বুঝতে পারিনি। কিন্তু পরে আমরা জানলা দিয়ে ধোঁয়া ও আগুন বের হতে দেখেছি।’
অবশ্য কর্মী এবং কয়েকজন লোক অন্যদের সাহায্য করার জন্য ভবনে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ধোঁয়ার কারণে কিছুই করতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘সর্বত্র ধোঁয়া ছিল এবং আমরা কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমরা বিল্ডিং থেকে বের হয়ে পুলিশের জন্য অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিই। দমকলের ইঞ্জিন, দমকলকর্মী এবং পুলিশ কর্মকর্তারা কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। পরে তারা একটি ক্রেন নিয়ে এসে মানুষকে উদ্ধারের কাজ শুরু করে। তাদের দ্রুত পদক্ষেপ অনেকের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছে।’
যোগাযোগ করা হলে সমাজকর্মী নাসির ভাদানাপ্পিলি খালিজ টাইমসকে বলেন, তিনি মর্গে রয়েছেন। তিনি বলেন, কিছু লাশ স্বজনরা শনাক্ত করেছেন। অন্তত তিনজন হাসপাতালে রয়েছেন এবং তাদের অবস্থা স্থিতিশীল।
এদিকে পৃথক এক প্রতিবেদনে খালিজ টাইমস জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের পর নিরাপত্তার স্বার্থে ভবনটি সিলগালা করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে করে আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া বাসিন্দারা রাতারাতি গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
ভবনের ভুক্তভোগী একজন ভাড়াটিয়া বলেন, ‘আমাদের বিকেল ৩টার দিকে সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে আমরা রাস্তায় অবস্থান করছি।’