রাজধানীর মিরপুর দুই নম্বর সেকশনে অনেকদিন ধরে গায়েবী কান্নার শব্দ শুনতে পাচ্ছিল এলাকাবাসী। তবে সন্ধান করেও কান্নার উৎস খুঁজে পাচ্ছিল না কেউ। সম্প্রতি কেউ একজন বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করেন। এরপরেই পুলিশ গায়েবি কান্নার রহস্য সন্ধানে মাঠে নামে। অনুসন্ধান করে পুলিশ দেখতে পায়, এক ব্যক্তিকে প্রতিরাতে তার পরিবারে সদস্যদের দড়ি দিয়ে হাতপা বেঁধে পেটায়। পুলিশ ঐ ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা বলেন, মিরপুর থেকে ম্যাসেজে জানানো হল একটি আবাসিক নির্মানাধীন প্রকল্পে রাতের বেলা প্রায়ই গায়েবি কান্নার শব্দ আসে। কয়েকদিন চেষ্টা করেও কেউ বলতে পারেনই কোথা থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে! পরে এক ব্যক্তি পুলিশের পরিচালিত ‘বাংলাদেশ পুলিশ’ ফেসবুক পেজে ইনবক্স করে ঘটনাটি অবহিত করেন।
এরই প্রেক্ষিতে, পুলিশ সদর দফতর থেকে গায়েবি কান্নার রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব দেওয়া হয় মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মোস্তাফিজুর রহমানকে। মিরপুর থানার ওসির নেতৃত্বে সাদা পোশাকের একটি দল ওই নির্মাণাধীন প্রকল্পে যায়। প্রথম দিন কিছু না পেলেও, দলটি পরপর দুদিন রাতের বেলা ওই এলাকায় যায়। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা দেখতে পায়, হাউজিং কমপ্লেক্সের ভেতরে পরিত্যক্ত একটি বিল্ডিংয়ে এক ব্যক্তি তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে। প্রতিদিন রাতে তিনি তার সন্তানদের হাত-পা বেঁধে বেদম মারপিট করে। আর সেই কান্নার চিৎকার দূর থেকে লোকেরা শুনতে পায় এবং এটাকে লোকেরা গায়েবী কান্না বলে ভাবতে শুরু করে। ঐ লোক স্ত্রীকেও শারীরিক নির্যাতন করতো। এরপরেই স্ত্রী ও শিশুদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নির্যাতনকারী ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ আরও জানায়, ওই ব্যক্তির নাম মো. জাহাঙ্গীর। তিনি দুই শিশু ও স্ত্রী নিয়ে বসবাস করছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার চরফ্যাশনে। ঢাকায় থাকার জায়গা না পেয়ে গোপনেই পরিত্যক্ত এই নির্মাণাধীন ভবনে থাকতেন। জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে একটি মামলা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।