করোনার কারনে অর্ধেকদামে বরিশাল অঞ্চল থেকে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে মৌসুমী ফল জামরুল। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় ফল চাষীরা তাই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তারা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিতের জন্য বাজার সুবিধা সহ ,সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতার দাবী জানিয়েছে।
বরিশালে আমড়া ও পেয়ারা চাষের জন্য বিখ্যাত পিরোজপুর জেলার আটঘর- কুড়িয়ানা ইউনিয়নের জিন্দাকাঠী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমন জামরুল ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় ৪০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এখানের ব্যবসায়ীরা জানান এখন ১০- টাকা কেজি দরে দিতে পালেও ঈদের আগের ৩ দিন ও পরের ৩ দিন তারা মাল ঢাকায় পাঠাতে পারবেন না। এর ফলে তাদের বাগানের ফল পচে যাবে। বৃষ্টির পরিমান বাড়লে জামরুল একবারে পেকে যায়, তখন দাম আরও পরে যাবে।
আদাবাড়ি থেকে নৌকায় সাড়ে ৬মন জামরুল নিয়ে এসেছে সুমন মন্ডল তিনি জানান ‘ফলের দাম নাই আমরা কি খামু? আমাদের গলায় দড়ি দেয়া ছাড়া আর পথ নাই।’
জিন্দাকাঠী নিজ বাড়ি থেকে ৫মণ জামরুল নিয়ে এসেছে নেপাল মন্ডল। তিনি জানান কৃষকরা দাম পাচ্ছে না অথচ ঢাকায় বেশী দামে ফল কিনতে হচ্ছে মানুষদের । এজন্য যদি ন্যায্য মূল্যে বাজার থাকত, তা হলে কৃষকরা সহজে পচনশীল এই ফল বিক্রি করতে পারতো।
জিন্দাকাঠী ও আটঘর এলাকার পাইকারী ফল কিনে ঢাকায় পাঠিয়ে থাকেনস্থানীয় যুবক উজ্ঝল সিকদার। তিনি জানান তিনি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাাইকারী বিভিন্ন ফল পাঠিয়ে থাকেন। এখন জামরুলের সিজন, তাই জামরুল পাঠাচ্ছেন। প্রতিদিন ৭০/৮০ মন জামরুল তিনি এই অঞ্চল থেকে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে থাকেন। তিনি জানান, চাষীদের কাছ থেকে তিনি ১০ টাকা কেজি, ৪০০ টাকা মন দরে জামরুল কিনে, ৮০০ টাকা মন দরে ঢাকায় পাঠিয়ে থাকেন। জামরুল ছাড়াও বিভিন্ন ফল , বোম্বাই মরিচও তিনি ঢাকায় পাঠিয়ে থাকেন।
তিনি স্বীকার করেন করোনার প্রভাবে চাষীরা ঠিকমত দাম পাওযা যাচ্ছে না। করোনা না হলে এর চেয়ে দ্বিগুণ পরিমানে ফল ঢাকা যেতো বলে তিনি জানান।
চাষীরা জানান করোনার মধ্যেও তারা পরিশ্রম করে উৎপাদন ব্যবস্থা টিকেয়ে রেখেছেন, অথচ তাদের কেউ দেখার নেই।
কুড়িয়ানা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখর সিকদার জানান, এই অঞ্চল কৃষি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। করোনাকালীন সময়ে তারা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত, এ দর বিষয়ে সরকারী তরফে প্রণেদনা থাকা উচিত।
বরিশাল ফল ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপিত কার্তিক দত্ত জানান, বরিশালের বাজারে পাইকারী জামরুল ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে যা খুচরা পর্যায়ে ৫০/৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে।