নওগাঁয় মসজিদের নামে বাড়ি দখল ও একটি পরিবারের উপর হামলা

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
6 মিনিটে পড়ুন

নওগাঁ সদরে কাজীপাড়া এলাকায় মসজিদের নামে বাড়ি দখল করতে গিয়ে একটি পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়েছে মসজিদ কমিটির সদস্যরা। এবিষয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৩রা মে দুপুরবেলা ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী কাজী নাজিয়া মুস্তারী অভিযোগে জানা গেছে, স্থানীয় মসজিদ কমিটি লোকেরা নাজিয়ার বাবার মৃত্যুর পরে মসজিদ কমিটি দাবী করে যে তাদের বাড়ির জায়গা মসজিদের নামে দান করা হয়েছে। মসজিদ সংস্কারের নামে তারা জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এরপরে গত ৩রা মে মসজিদ কমিটির কয়েকজন লোক নাজিয়ার ঘরের ভেতরে ঢুকে নাজিয়া ও তার সন্তানসহ কয়েকজন পিটিয়ে আহত রক্তাক্ত ও জখম করে। প্রতিদিন তাদেরকে হুমকী ও ভয়ভীতি দিয়ে আসছে ঐ মসজিদ কমিটির লোকেরা। এই ঘটনার পরে নাজিয়ার পরিবার স্থানীয় অভিযোগ ও মামলা দায়ের করতে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। এ ব্যাপারে কাজী নাজিয়া মুস্তারী ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সহযোগিতা কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কাজী নাজিয়া মুস্তারীর ফেসবুক ওয়ালে যা লিখেছেন:

নিজে হত্যাকান্ডের শিকার হতে নিয়ে ছিলাম এই ঘটনা লিখতে কেমন লাগবে তা দুঃস্বপ্নেও কখনো চিন্তা করিনি।

- বিজ্ঞাপন -

গত ৩ মে ২০২১ সালে আমি ও আমার আম্মু নওগাঁ কাজী পাড়ায় আমাদের বাড়ির সীমানা প্রাচীর দেয়ার কাজ শুরু করি। মিস্ত্রি সকাল থেকেই এসে কাজ শুরু করেছিল। দুপুরের দিকে কাজী জাহাঙ্গীর এসে প্রথমে প্রাচীরের দুইকোনা লাথি ভেঙ্গে দেয়। এরা আমাদের বাসা সংলগ্ন মসজিদ কমিটি চালায়, এরা আব্বু মারা যাওয়ার পর থেকেই আমাদের বাড়ি ও বাড়ির সামনের জমি দখলের পাঁয়তারা করে আসছিল, আমাদেরকে সবসময় চাপ দিতো যেন আমরা আমাদের বাড়ির জমি মসজিদের নামে লিখে দিই, এবং তারা উচ্চস্বরে সব সময় দাবি করে যে এই মসজিদ নাকি তাদের, এদিকে মসজিদের যায়গাটা আমার দাদার বাবার দান করা যায়গা, এবং কমিটি চালানার নাম করে আসল দলিল এরা লুকায়ে ফেলছে আমার আব্বুদের সাইডের সবাই মারা যাওয়ার পরেই, এবং তারা মসজিদ সংস্কারের নাম করে তারা সামনে ও দুই সাইডে ১০ ফিট করে মসজিদের এরিয়া ঠেলে আমাদের বাড়ির ভিতরে ঢুকায়ে দিচ্ছিল। আমাদের জমির সমস্ত কাগজ পত্র আপ্টুডেট করা এবং জমিতে কোন রকমের দুই নাম্বারি বা ভেজাল নাই। ওদের হাতের সিঙ্গেল কোন কাগজ নাই যেটা দিয়ে ওরা প্রমান করতে পারবে যে মসজিদের যায়গা আমরা নিচ্ছি, বরং উল্টাটা।

এরপর আম্মু থানায় যায় অভিযোগ করতে, এই টাইমে বাসায় আমি ফিডোরা আর আমাদের বাড়ির কেয়ারটেকার রাজ্জাক ভাই ছিলেন আর মিস্ত্রিরা, দুপুর সাড়ে তিনটা নাগাদ কাজী জাহাঙ্গীর তার ছেলে কাজী হাসান, এবং জাহাঙ্গীর এর দুই ভাই কাজী ইকবাল ও কাজী শিরু এবং এদের সাথে বেশ কিছু খুনের মামলার আসামি মৌলবি বাবু, মাইক বাবু এবং অজ্ঞাত নামা সাত আটজন এসে সরাসরি আমাদের বাসায় হামলা চালায়। আমাকে মাটিতে আমার শরীর থেকে ওড়না খুলে নিয়ে গলা পেঁচ দিয়ে দুইজন দুইপাশ থেকে টানতেসিল আর কাজী হাসান আমার মুখে, চোয়ালে, উপর্যুপরি ঘুষি মারছিল, আমার মাথার বাঁ পাশের চুলের গোছা টেনে ছিড়ে ফেলে, ও আমাকে বিবস্ত্র করার চেষ্টা করে, এরপর আমার রেগুলার ইউজের মোবাইল টা ভেঙ্গে গুড়া গুড়া করে, কারন তাদের হামলার শুরুর দিকের কিছু ফুটেজ মোবাইলে আমি ধারন করেছিলাম, এরপর জাহাঙ্গীর, ইকবাল ও হাসান মিলে আমাদের কেয়ারটেকার রাজ্জাক ভাইকে বড় লোহার দরজার সাথে আছড়ে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা করে, আমার মেয়ে ফিডোরা প্রথমে ভয়ে চিৎকার করে কাঁদছিল এরপর যখন ও দেখে এরা বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেছে তখন ও দৌড় দিয়ে কুকুরদের নিয়ে ওদের থাকার ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়, নয়ত ওদের উপরেও হামলা হতো। ( এই টুকু আমি ফিডোরার মুখে শুনে লিখলাম) এই টাইমে আম্মু এসে পৌঁছায় এরপর তারা আম্মুর উপরেও আক্রমণ করে। আম্মুর বয়স ৭০ তাকে তিনবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, তার পিঠে ও হাতে অনবরত কিল ঘুষি মেরে গেছে। এরা আমাদের বাড়ি থেকে নগদ দুইলাখ টাকা, আইফোন ১১ সহ তিন টা স্মার্টফোন নিয়ে গেছে এবং আমার ভেঙ্গে ফেলা ফোনটাও নিয়ে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু আমি ওই আহত অবস্থাতেই ফোনটা তাদের হাত থেকে নিয়ে নিতে সক্ষম হই৷ কিছুক্ষন পরেই পুলিশ আসে আম্মুর অভিযোগ এর ভিত্তিতে, তারা এসে সব দেখে যায় ও ছবি তুলে নিয়ে যায়, এবং হামলাকারীদের বাড়িতে তাদের খুজতে গেলে তাদের গৃহকর্মী বের হয়ে বলে যে বাসায় কেউ নাই। এপর আমি আমার আমার ল ইয়ার আন্টিকে কল দিই উনি উনার ছেলে ও মেয়ের জামাইকে আমাদের এখানে পাঠান আমরা ওদেরকে নিয়েই থানা ও হসপিটাল যাই, যা যা করনীয় সব সম্পন্ন করি৷ কিন্তু থানায় যেয়ে দেখি ওই পক্ষ থেকে ১২/১৫ জন লোক যেয়ে বসে আছে এবং ওইখানেই তারা আমাদের সাথে মিমাংসার আলাপ করতে চায়, কিন্তু আমরা তাদের সাথে কোন কথা বলিনি আমরা কেস ফাইল করার জন্য রাত সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত থানায় বসে ছিলাম কিন্তু কোন মামলা তারা আজ পর্যন্ত নেয়নি৷ আজ কাল পরশু করে ঘুরাচ্ছে। কি হইসে সেটা আমরাও বুঝেছি এবং আপনারাও বুঝে নেন৷ এরপর থেকে কন্টিনিউয়াস তারা আমাদের হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে, এখানে যেকোন সময় আমাদের সাথে যেকোন কিছু ঘটে যেতে পারে৷ বাংলাদেশে দুইজন মেয়ে মানুষের হাতে কেন এত জমিজিরাত থাকবে এটা হয় নাকি? আর এর সাথে যুক্ত হয়েছে উগ্র ধর্ম ব্যবসা।

আমি আমার আম্মু, আমার মেয়ে ও আমার জন্য জাস্টিস চাচ্ছি। প্লিজ হেল্প আস।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!