গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মে) রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মডেল থানায় হেফাজত নেতা মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন এক নারী। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে না করেও প্রতারণা করে বিভিন্ন সময়ে ঐ নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযুক্ত করেছেন।
মাওলানা ফয়েজী হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া হামিয়ুচ্ছুন্নাহ মেখল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক মামলার সত্যতা গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ফেসবুকের মাধ্যমে হেফাজত নেতা ফয়েজীর সঙ্গে ঐ নারীর পরিচয় হয়। মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন। পরে বিয়ের করার কথা বলে ওই নারীকে হাটহাজারীতে আসতে বলেন। সে অনুযায়ী ওই নারী হাটহাজারী এলে ওই বছরের নভেম্বরে পৌরসভার ফটিকা গ্রামে কনক বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় বাসা ভাড়া করে দেন হেফাজত নেতা ফয়েজী।
প্রায় এক বছর ধরে ভাড়া বাসায় অবস্থানকালে বিভিন্ন সময় তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ওই নারী হাটহাজারী থেকে চট্টগ্রাম শহরে তার খালার বাসায় চলে আসেন।
এরপরও বিয়ের প্রলোভন দিয়ে সুকৌশলে বিভিন্ন বাসা ও হোটেলে নিয়ে গিয়ে ফয়েজী তাকে ধর্ষণ করেন। অবশেষে তার প্রতারণা বুঝতে পেরে ওই নারী নিজে বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন।
এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করেন। পরে সেটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১) ধারায় রুজু হয়। হাটহাজারী থানার মামলা নং ৯ (তারিখ ০৭/৫/২০২১)। মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয়েছে এসআই মুকিব হাসানকে।
উল্লেখ্য, হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে তার নাম রয়েছে। তার বিরুদ্ধে হাটহাজারী মডেল থানায় গত ২৬ মার্চ তাণ্ডবের ঘটনায় কয়েকটি নাশকতা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া হেফাজতের সাবেক আমির আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পিবিআইর তদন্তেও তার নাম রয়েছে। বুধবার বিকালে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। সেখানকার একটি গ্রামে হেফাজতের এই নেতা আত্মগোপনে ছিলেন। এরপরে ফয়েজীকে আদালতে সোর্পদ করে রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ। আদালত বৃহস্পতিবার তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিনি হাটহাজারী মডেল থানায় রিমান্ডে আছেন।