ইউক্রেন পুনর্গঠনে খরচ হবে ৪১১ বিলিয়ন ডলার
যুদ্ধে বিধ্বস্ত ইউক্রেন পুনর্গঠনে আগামী ১০ বছরে ৪১১ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে বলে ধারণা করছে বিশ্ব ব্যাংক। কেবল বিধ্বস্ত শহর থেকে ধ্বংসস্তূপ সরাতে ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি।
ইউক্রেন সরকার, বিশ্বব্যাংক, ইউরোপীয় কমিশন এবং জাতিসংঘ যৌথভাবে মূল্যায়নটি তৈরি করে। বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, যতদিন যুদ্ধ চলতে থাকবে, ততদিন চাহিদা বাড়তে থাকবে বলে বিবেচনা করা উচিত।
সেপ্টেম্বরে ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আনুমানিক ৩৪৯ বিলিয়ন ডলার লাগবে ইউক্রেন পুনর্গঠনে।
প্রতিবেদনে যুদ্ধের কিছু অর্থনৈতিক ও মানবিক ক্ষতির বিবরণ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০ লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রতি পাঁচটির মধ্যে একটির বেশি জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৬৫০টি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত বা চুরি হয়েছে। এ ছাড়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৪৬১ শিশুসহ অন্তত ৯ হাজার ৬৫৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেনের পুনর্গঠনে কয়েক বছর সময় লাগবে বলে বুধবার বিশ্বব্যাংকের ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট আনা বজেরদে জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে ভবন এবং অবকাঠামোর সরাসরি ক্ষতির জন্য ১৩৫ বিলিয়ন ডলার ধরা হয়েছে। তবে বছরের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে বৃহত্তর অর্থনৈতিক পতনকে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
বজেরদে বলেন, ‘ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রতিরোধ গড়ে না তুললে ক্ষয়ক্ষতি আরও হতে পারত। দোনেৎস্ক, খারকিভ, লুহানস্ক এবং খেরসনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কেবল ২০২৩ সালেই বিনিয়োগ পুনরুদ্ধারের জন্য ১৪ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন কিয়েভের। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল মঙ্গলবার বলেছে, প্রায় ১৫.৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের চার বছরের অর্থায়ন প্যাকেজের জন্য ইউক্রেনের সঙ্গে কর্মী-স্তরের চুক্তিতে পৌঁছেছে তারা।
বিশ্বব্যাংক ফেব্রুয়ারিতে বলেছিল, রাশিয়ার তীব্র আক্রমণ সত্ত্বেও স্কুল ও হাসপাতাল খোলা রাখা, শিক্ষক ও বেসামরিক কর্মচারীদের বেতন পরিশোধের পাশাপাশি পেনশন দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় জনসেবা বজায় রেখেছে ইউক্রেন সরকার।
বজেরদে সে সময়ে বলেছিলেন, এই পরিষেবাগুলোকে টিকিয়ে রাখতে ইউক্রেনের প্রতি মাসে প্রায় ৩-৪ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
রাশিয়ার আক্রমণ লক্ষাধিক ইউক্রেনীয়কে বাস্তুচ্যুত করেছে। যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও শক্তির দামও বেড়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, রাশিয়ার আগ্রাসন ইউক্রেনের ১৫ বছরের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে পূর্বাবস্থায় ফেলেছে। মোট দেশজ উৎপাদন ২৯ শতাংশে নেমে এসেছে। ১৭ লাখ ইউক্রেনীয়কে দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
ইউক্রেনের জ্বালানিখাত যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, গত গ্রীষ্মের তুলনায় জ্বালানিখাতের মোট ক্ষতি এখন পাঁচ গুণ বেশি। সূত্র: আল জাজিরা