সফর, বিদীর্ণ, অনুচ্চারিত, ভীবিত এবং অন্যান্য কবিতা

জয়িতা চট্টোপাধ্যায়
জয়িতা চট্টোপাধ্যায়
2 মিনিটে পড়ুন

সফর

এবার শ্রাবণ আমার কেটেছে পাহাড়ের সাথে
যেখানে বৃষ্টি একদম আলাদা রকম
কত মেঘ ভুলে যায় মেঘেদের কথা
কথা রাখে অসুখ কথা রাখে বন
আমার শহরে তখন বরষা যথারীতি
পুরনো অভ্যেসে কাঁদা, গহিন মনখারাপের তিথি
পাহাড় মানেই বৃষ্টি ভেজা চুল
পাহাড় মানেই তুমি এলোমেলো খুব
আমার শরীর তখন স্বেদবাস্পে ঘেরা
একটুখানি ছুঁলেই, কঠিন বাড়ি ফেরা
এই পাহাড়ে মেঘ অলিতে গলিতে
বিকেল যেমন ফেরে সেভাবেই
বৃষ্টি ফিরেছে একা শহরতলীতে।

সফর, বিদীর্ণ, অনুচ্চারিত, ভীবিত এবং অন্যান্য কবিতা
সফর, বিদীর্ণ, অনুচ্চারিত, ভীবিত এবং অন্যান্য কবিতা 37

বিদীর্ণ

অগ্নিজোড়া তেপান্তরে একলা হাঁটি
একলা একলা কাঁদি
চক্রবালের তৃষ্ণাতে রোজ পা ডুবিয়ে রাখি
বিবশ দুপুর দগ্ধ শরীর
দুপুর বেলার তাপে
গরম হাওয়া বুকের ভেতর
ঘা দিয়ে রোজ ডাকে
অঝোর হয়ে বুকের ভেতর
কে যেন জল ঢালে
সেই ঘাটেতে চোখ দুটি রোজ
একলা হয়ে কাঁদে।

অনুচ্চারিত

সমস্ত ভাবনারা যে ধুলোর মতো ছোটে
তোমায় যেটা বলবো আমি কাঁপতে থাকে ঠোঁটে
বুকের ভেতর আকাশ নামে
গহন গভীর নীচু
আয়না আমার মুখ দেখে না
হয়না বলা কিছু
বেদনারা জমতে থাকে জলে
কাঁপছে আবার দাঁড়িয়ে উঠে
মধুর হাওয়া চলে
মস্তো বড় কালোর ভেতর
স্বপ্ন যে দেয় ডুব
সুখে থাকার চেয়েও কঠিন
বেঁচে থাকা খুব।

ভীবিত

ব্যাকুল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম
তবু খুললো না সে ঘর
মুখ লুকিয়ে কাঁদলো আমার
অন্ধকারের স্বর
দেওয়াল চাপা বাড়ি
সকাল যে তার মুখ দেখে না
করছে বিকেল আড়ি
তাপ আসে রোজ
শুকনো ভাঙা জানলা দিয়ে
বুকের ভেতর কঠিন দোলা
আলগা চোখে ভয়কে নিয়ে
চোখ যেখানে দাঁড়িয়ে থাকে
সেই খানেতেই ক্ষয়
হঠাৎ জোড়ে কাঁপতে থাকে আলো
কাঁপতে থাকে ভয়।

- বিজ্ঞাপন -
সফর, বিদীর্ণ, অনুচ্চারিত, ভীবিত এবং অন্যান্য কবিতা
ভীবিত

ধ্বস্ত দিন

তোমায় বলি আমার এই দৃষ্টি ছেড়ে
তুমি কোথাও যেও না,
ধুলোয় মাখা আমার যে এই দুয়ারহারা পথ
স্নেহের সুরের আলো বাতাস
এখানে কেউ কখনো আসেনা,
আমার সন্ধ্যে আমার যে ভোর,
সোনায় বাঁধা মৃত্যু মনোরথ,
জলের বুকে লুকোয় কথা ঘাসের ঠোঁটে পথ,
শূন্য জট খোলে ধুলো লগ্নের আনন্দেতে
দুঃখ মেঘ গাঁথা আমার পল্লবেতে,
ব্যথার তুলি পরশ করে আমায়
মেঘে ভাঙে তখন প্রেমের নিরবতা

দুঃখ টলে আমার বুকে লেগে,
কান্না জলে সন্ধ্যে দিল এঁকে,
ব্যথায় ভরা বুক যে আমার বনানী হয়,
আমার মতো তোমায় কাছে ডেকে,
তোমার চোখে নিদ্রা টেনে দিলে,
মরণমুখী সূর্য আমার বুকে,
জাগনলোভী চাঁদ মারছে আমায় তিলে তিলে
রাত্রি নামে অনন্ত দীঘির পার,
আমার চোখ মেলতে মেলতে শান্তি কেঁদে মরে,
আর্তনাদের বরষা আসে ছুটে,
চাপচাপ রক্ত চারিদিকে,
চাপরক্ত তুমিও পাবে শীর্ণ করপুটে।

সফর, বিদীর্ণ, অনুচ্চারিত, ভীবিত এবং অন্যান্য কবিতা
সফর, বিদীর্ণ, অনুচ্চারিত, ভীবিত এবং অন্যান্য কবিতা 38

তুমি

এসেছো তুমি সিঁড়িতে রোদের দাগ ফেলে
জানি না আমার শহর গলির ঠিকানা কোথায় পেলে
এখানে ধুলো ও জীবাণু নিয়ে অসুখের ওঠাবসা
তোমার দুচোখ বসন্ত আনে,
দেওয়ালের শরীরে পলেস্তরা খসা।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
কবি। পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!