বাখমুতে ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের ৪৩১ সেনা নিহত
ইউক্রেন ও রাশিয়া শনিবার দাবি করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় একে অপরের কয়েকশ’ সেনাকে হত্যা করেছে। কিয়েভ দাবি করেছে, রাশিয়ার নিরবচ্ছিন্ন আক্রমণ তারা প্রতিরোধ করছে। এখন শহরটির একটি ছোট নদী রণাঙ্গনে পরিণত হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র সেরহি চেরেভাতি বলেছেন, বাখমুতে মস্কোপন্থী ২২১ সেনাকে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছে আরও তিন শতাধিক।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বৃহত্তর ডনেস্ক রণাঙ্গনে ২১০ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে।
মস্কোর পক্ষ থেকে বাখমুতে হতাহতের কথা সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। ডনেস্ক অঞ্চলের পূর্বাংশে এই শহরের অবস্থান। দ্বিতীয় বছরে গড়ানো যুদ্ধে এই শহরটি প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পরিণত হয়েছে। এখানেই চলছে যুদ্ধের সবচেয়ে রক্তপাতময় ও দীর্ঘ লড়াই।
বাখমুতে সেনা নিহত ও ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করছে উভয়পক্ষ। তবে স্বতন্ত্রভাবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত করা কঠিন।
শনিবার ব্রিটিশ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা বলেছে, রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধারা বাখমুতের পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এর আগে বুধবার এমন দাবি করেছিলেন গ্রুপটির প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন।
নিয়মিত গোয়েন্দা বুলেটিনে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বাখমুতকা নদীর কাছে শহরের প্রাণকেন্দ্র এখন রণাঙ্গনে পরিণত হয়েছে।
ইউক্রেন জোর দিয়ে দাবি করছে যে, তারা বাখমুত ছেড়ে যাচ্ছে না এবং রুশবাহিনীকে কঠিন প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে। বাখমুতের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা কমান্ডার বলেছে, ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের পর শহরটি সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন।
শনিবার কর্নেল জেনারেল ওলেক্সান্ডার সিরস্কি বলেছে, রিজার্ভের সেনাদের মোতায়েন ও একটি পাল্টা আক্রমণ শুরু করার জন্য সময় নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
মস্কো বলছে, বাখমুত দখল ফলে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষায় ফাঁক তৈরি করবে এবং ডনবার শিল্পাঞ্চল দখলের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটি পদক্ষেপ। কিয়েভ দাবি করেছে, রাশিয়া নিজেদের সেরা সামরিক ইউনিটগুলোকে বাখমুতে মোতায়েন করছে।
প্রিগোজিন দাবি করেছেন, বাখমুতের প্রশাসনিক ভবন থেকে মাত্র ১.২ কিলোমিটার দূরে রয়েছেন তিনি। এই ভবনটি বাখমুতকা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত।
ব্রিটিশ সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা বলেছে, রণাঙ্গন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ওয়াগনার বাহিনীতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে।
তবে পরিস্থিতি ইউক্রেনীয় বাহিনীর জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিটেন বলছে, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ও পশ্চিমে তাদের সরবরাহ লাইন এখনও ঝুঁকিপূর্ণ। উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে রাশিয়া আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।