ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সরবরাহ করা কিছু অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম জব্দ করেছে রাশিয়া। রণক্ষেত্রে জব্দকৃত এসব অস্ত্র ও সরঞ্জাম ইরানে পাঠাচ্ছে রাশিয়া। যাতে করে এসব অস্ত্রের প্রকৌশল ব্যবস্থা উদঘাটন করা যায়। শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন চারটি সূত্রের বরাতে এ খবর জানিয়েছে।
সূত্রগুলো সিএনএনকে জানিয়েছে, গত এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো ও তার মিত্র কর্মকর্তারা লক্ষ্য করেছেন বেশ কয়েকটি ঘটনায় ছোট আকারের, কাঁধে রেখে ছোড়ার মতো অস্ত্র জব্দ করেছে। এগুলোর মধ্যে ট্যাংক বিধ্বংসী মার্কিন জ্যাভেলিন ও বিমানবিধ্বংসী স্টিঞ্জার অস্ত্র রয়েছে।
সূত্রগুলো আরও জানায়, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে জব্দকৃত অস্ত্রগুলো ইরানে পাঠিয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। যাতে করে এগুলো খুলে যন্ত্রাংশ আলাদা করে পর্যালোচনা করতে পারে ইরান। এই জ্ঞান কাজে লাগিয়ে অস্ত্রটির ইরানি সংস্করণ তৈরির জন্য এমনটি করা হচ্ছে।
সূত্র মতে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহযোগিতার জন্য জব্দকৃত অস্ত্র পাঠিয়ে ইরানকে খুশি করছে মস্কো।
অবশ্য মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা, এমন অস্ত্র পাঠানো খুব ব্যাপক বা পরিকল্পিত নয়। যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনের সেনাবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র হারিয়ে বা ধ্বংস হয়ে গেলে সেগুলো সম্পর্কে প্রতিবেদন নিয়মিত পেন্টাগনে পাঠাচ্ছে। এরপরও মার্কিন কর্মকর্তারা স্বীকার করছেন যে, ইরানে পাঠানো অস্ত্রের সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন।
খবরে বলা হয়েছে, ইরান মার্কিন অস্ত্রের নির্মাণ কৌশল জানতে পেরেছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে অতীতে জব্দকৃত মার্কিন অস্ত্র দিয়ে নিজেরা অস্ত্র ব্যবস্থা উন্নয়নে মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছে তেহরান।
ইরানের অস্ত্রভাণ্ডারে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হলো ট্যাংকবিধ্বংসী গাইডেড মিসাইল তুফান। যা ১৯৭০ দশকের মার্কিন অস্ত্র বিজিএম-৭১ টিওডব্লিউ ক্ষেপণাস্ত্রের আদলে তৈরি করা। ২০১১ সালে ইরান মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিনের নির্মিত ড্রোন আরকিউ-১৭০ জব্দ করেছিল। এটির নকশা ও প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ইরান একটি নতুন ড্রোন তৈরি করে। যা ২০১৮ সালে ইসরায়েলের আকাশসীমায় প্রবেশের পর গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
সিএনএন বলছে, এই সহযোগিতা মস্কোর সঙ্গে তেহরানের ক্রমবর্ধমান প্রতিরক্ষা অংশীদারত্বের আরেকটি নমুনা। গত কয়েক বছর ধরে এই সম্পর্ক ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য বাইরের সামরিক সহযোগিতা পেতে মরিয়া হওয়ার পর এই সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এই অংশীদারত্ব শুধু ইউক্রেন নয়, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রতিবেশীদেরও হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলে গত মাসে বলেছিলেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি।