ইউক্রেনের পূর্ব দিকে যুদ্ধের সম্মুখসারিতে বাখমুত শহরের পরিস্থিতি ‘আরও কঠিন’ হয়ে উঠছে বলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
রাশিয়ার সৈন্যরা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে শহরটি দখলের চেষ্টা করছে। এক বছরেরও বেশি সময় আগে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের বাখমুতে।
জেলেনস্কি বলেন, “আমাদের অবস্থান ধরে রাখতে ব্যবহার করা যেতে পারে এমন সবকিছু ক্রমাগত ধ্বংস করে চলেছে শত্রুরা।”
জেলেনস্কির মন্তব্য এমন সময় এলো যখন সোমবার মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন কিয়েভ সফরের সময় রাশিয়াকে অস্ত্র দেওয়ার বিরুদ্ধে চীনকে হুশিয়ারি দিয়েছেন।
বাখমুতের একটি অংশ রাশিয়া এবং তার বিচ্ছিন্নতাবাদী মিত্রদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সম্প্রতি শিল্প শহরটি দখলে নিতে রুশ বাহিনীর প্রচেষ্টা বেড়েছে এবং রুশ সেনারা অগ্রসরও হচ্ছে।
স্বঘোষিত দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ডেনিস পুশিলিন বলেছেন, “শহরে প্রবেশের প্রায় সব রাস্তা এখন (রাশিয়ার) অস্ত্র সীমার মধ্যে রয়েছে।”
জেলেনস্কি তার রাত্রিকালীন ভাষণে দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, বাখমুতে একটি শক্ত অবস্থান দখলে নিয়ে তার প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা রাশিয়ার নতুন আক্রমণের কারণে হয়ে উঠছে না।
জেলেনস্কি ওই এলাকার ‘প্রতিটি ব্যক্তি যারা বীরত্বের সাথে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে’ তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এদিকে সোমবার কিয়েভে আকস্মিক সফরে আসেন মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন। এ সময় তিনি ইউক্রেনে অর্থনৈতিক ও বাজেট সহায়তার জন্য ১২৫ বিলিয়ন ডলার পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
ইয়েলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, যুদ্ধে জয়ী হতে ইউক্রেনের যতদিন লাগবে ততদিন ওয়াশিংটন কিয়েভের পাশে থাকবে।
সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়েলেন বলেছেন যে, রাশিয়ার অর্থনীতি পশ্চিমা মিত্র শক্তিগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার নিচে এখনো চাপা পড়েনি।
তবে তার আশা, সময়ের সাথে সাথে এটি ‘দুর্বল’ হয়ে পড়বে।
ইয়েলেন বলেছেন যে, ইউক্রেনের আক্রমণে ধ্বংস হওয়া রুশ সামরিক সরঞ্জামগুলো সংগ্রহ করতে রাশিয়ার সক্ষমতা ‘ধীরে ধীরে বিপন্ন’ হচ্ছে। এ ধরণের অস্ত্র চীন রাশিয়াকে সরবরাহ করতে চাইলে তার পরিণতি আরো ‘মারাত্মক’ হবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
তিনি বলেন, “এই যুদ্ধ চালানোর জন্য রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জাম পাওয়ার সক্ষমতাকে সীমিত করা উদ্দেশ্যে আমরা যে নিষেধাজ্ঞাগুলো দিয়েছি, তা যদি কোন দেশ তোয়াক্কা না করে তাহলে সেই পদ্ধতিগত বরখেলাপ আমরা কোনভাবেই সহ্য করবো না”
গত সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, চীন রাশিয়াকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের কথা বিবেচনা করছে। যদিও বেইজিং জোড়ালোভাবে এ দাবি অস্বীকার করেছে।
গত সপ্তাহে মস্কোতে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠককে অনেকেই রাশিয়ার সাথে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত বলে মনে করছেন।