প্রেমিকের সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে প্রেমিককে বিয়ে করার মাত্র ১ বছর পর লাশ হয়ে ফিরলেন সীমা। ভাটরা থানার পুলিশ উত্তর বাড্ডা এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে ফেনীর সোনাগাজীতে গ্রামের বাড়িতে সীমার লাশ দাফন করা হয়। সীমা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
সীমা সোনাগাজী উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের চরগোপালগাঁও গ্রামের ইতালি প্রবাসী ইব্রাহীমের মেয়ে। তার স্বামী বগাদানা ইউনিয়নের মৃত ওবায়দুল হকের ছোট ছেলে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ আকাশ।
জানা গেছে, ফেনীর জয়নাল হাজারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সীমা গতবছর পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের আকাশ নামের একটি ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। এরপর থেকে তারা ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন ভাড়া বাসায় থাকতো। গত বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে আকাশ নিজের মোবাইল থেকে সীমার বাবাকে ফোন করে বলেন তার মেয়ে সীমা আত্মহত্যা করে মারা গেছে। খবর পেয়ে সীমার বাবা ইব্রাহীম ওই বাসায় গিয়ে জানতে পারেন ভাটরা থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ প্রেরণ করেছে। পরে মর্গ থেকে লাশ এনে গতকাল শুক্রবার রাতে গ্রামের বাড়িতে সীমার লাশ দাফন করা হয়।
সীমার বাবা ইব্রাহীম বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি ঢাকার ভাটরা থানায় আকাশকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছি। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় চরমজলিশপুর ইউপি চেয়ারম্যান এমএ হোসেন জানান, বেশ কয়েকবছর যাবত আকাশ নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আইসিটি বিষয়ক কনসালটেন্ট দাবি করে বিভিন্ন সরকারি দফতরে চাকরি দেওয়ার নামে স্থানীয়দের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফায় সালিশ বৈঠক হয়েছে এবং কয়েকজনের টাকা উদ্ধারও করা হয়েছে।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোক্তারুজ্জামান জানান, গত বছরের জুলাই মাসে পরিবারের অমতে তারা ঢাকায় পালিয়ে বিয়ে করে। ছেলেটি সীমাকে বাড়িতে যেতে দিতো না এবং বাড়ির কারো সাথে যোগাযোগ করতে দিতো না। সীমা তার বোনের সাথে যোগাযোগ করতো। পাশাপাশি সীমা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলো। এরপরও সীমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক যন্ত্রণা দিতো ছেলেটি। সে কারণে সীমা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আকাশকে আসামী করে নিহতের বাবা ইব্রাহিম বাদী হয়ে ভাটারা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে আকাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে।