চাঁদের ফাঁদে মুসলমান: সাহরি ও ইফতার (Muslims are trapped in the moon trap Vigil and Breakfast):
চাঁদের ফাঁদে তারাবিহ, রোজা, ফেতরা ও ঈদ। রোজাদাররাও চাঁদের চাঁদনী খেলায় দিকভ্রান্ত; দলে-উপদলে বিভক্ত। “চাঁদ দেখে রোজা ও ঈদ” করার গোলকধাঁধায় পড়ে তারা কানামাছি ভোঁ ভোঁ খেলছে। যারফলে; কিছু লোক তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করলেও অধিকাংশ মানুষ হয় দুর্ভোগের শিকার। এই প্রবন্ধটি ছয় পর্বে শেষ করা হয়েছে। এই পর্বে সাহরির ও ইফতারের আলোচনা করা হয়েছে। এটি তৃতীয় পর্ব।
সাহারি (سَهَرِىٌ)
ভূমিকা (Introduction):
আরবি সাহরি পরিভাষাটির মাসদার ও অর্থ নিয়ে মুসলমান সমাজের অল্প শিক্ষিত মোল্লা-মুন্সিদের মধ্যে মতভেদের অন্ত নেই। যার মনে যা অনুমান হচ্ছে, সে তাই বলতে ও লেখতে ব্যস্ত। প্রকৃত বিষয় বা প্রকৃত ব্যাপার উদ্ঘাটন করার আগ্রহ কারো নেই।
সেহরি নয় সাহরি (The vigil not magic):
একদল মোল্লা-মুন্সির মতে; আরবি ‘سحري’ সেহরি শব্দটি এসেছে ‘سحر’ (সেহর) থেকে। আরবি ‘سحر’ (সেহর) অর্থ; জাদু, জাদুশক্তি, magic, জাদুবিদ্যা, মায়াবিদ্যা, কুহক, ইন্দ্রজাল, ভেলকি। অতএব; সেহরি অর্থ হলো; ঐন্দ্রজালিক, magician, জাদুকর, জাদুপূর্ণ, জাদুবিদ্যা সংক্রান্ত, ভোজবাজিপূর্ণ, মোহন, মোহিনী, মায়াবী, বাজিকর, কুহকী, মায়াজীব জাদুসংক্রান্ত বিষয়, যাতে জাদুমন্ত্র আছে অথবা যার সঙ্গে জাদুবিদ্যার সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং; সেহরি খাওয়া অর্থ হলো; জাদুর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো কিছু খাওয়া (লিসানুল আরব)।
আবার একদল মোল্লা-মুন্সির মতে; আরবি ‘سَهَرِىٌ’ (সাহরি) পরিভাষাটি ‘سهر’ (সাহর) থেকে উদ্ভূত। ‘سهر’ (সাহর) শব্দের অর্থ হলো; প্রত্যুষ, ভোর, ঊষা, vigil, dawn, daybreak, early morning, রাতের শেষাংশ। আর সাহরি অর্থ হলো; অধিবাস, vigilance, শেষ রাতে জাগরণ, শেষ রাতের খাবার, ভোরের খাবার। মুসলমানরা উপোস পালনের উদ্দেশ্যে শেষ রাতে যে আহার করে তাকে সাহরি বলা হয়।
এখানে বিশেষভাবে স্মরণীয় যে; সাধকগণ পালনকর্তার দর্শন লাভের জন্য বিশেষ অধিবাস করে থাকেন। তাই; উপোস পালন করার উদ্দেশ্যে শেষরাতে পানাহার করাকে প্রত্যুষা বলা হয়। ইসলামী সংস্কার মতে; উপোস করার জন্য শেষরাতে প্রত্যুষা খাওয়া সুন্নত। ইসলামের দৃষ্টিতে তা সুন্নত হলেও প্রকৃত আত্মশুদ্ধি অর্জন এবং আধ্যাত্মিক উন্নয়নের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ; রাসুল (সাঃ) বলেছেন; ‘তোমরা প্রত্যুষা খাও; নিশ্চয় প্রত্যুষা খাওয়ার মধ্যে মঙ্গল নিহিত আছে।’ (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।
হজরত আমর ইব্নুল আস (রাঃ) হতে বর্ণিত; রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন; ‘আমাদের (মুসলমানদের) উপোস আর আহলে কিতাব (ইহুদী-খ্রিস্টান)-এর উপোসের মধ্যে পার্থক্য হলো; কেবল প্রত্যুষা খাওয়া আর না-খাওয়া।’
সাহরা سَاهَرَةُবি অধিবাস, জাগরণ, উন্নিদ্রা, অপ্রমাদ, সতর্কতা, জাগ্রতবস্থা, বিনিদ্রতা, vigilance বিণ বিনিদ্র, সতর্ক, জাগ্রত, জাগরুক, অতন্দ্র, মনোযোগী, vigil, watchful (ব্য্য) আরবি ‘سهر’ (সাহর) হতে ‘ساهرة’ সাহরা পরিভাষাটির উদ্ভব হয়েছে। ‘سهر’ (সাহার) অর্থ; অধিবাস, জাগরণ, নিদ্রাহীনতা, vigil. এছাড়াও; একে বাংলায় সেহেরি, সাহারি ইত্যাদিও বলা হয় (প্র) ইসলামী রূপক সংস্কার মতে; উপবাস পালনের জন্য সূর্যোদয়ের পূর্বে জাগ্রত হয়ে ‘প্রত্যুষা’ গ্রহণ বা আহার্য গ্রহণ (শ্ববি) পবিত্রতার পরিপূর্ণ সাতাশ (২৭) দিন শুক্রপাতহীন মৈথুন পালনের জন্য ঊষায় বা পবিত্রতার প্রারম্ভে অমৃত মানব জল ভোজন (শ্ববি) উপাস্য, নারায়ণ, নিধি, নিমাই, নিরঞ্জন, স্বরূপ (ইপৌচা) খোদা (ফা.ﺨﺪﺍ), মা’বুদ (আ.ﻤﻌﺑﻭﺪ), মুহাম্মদ (আ.ﻤﺤﻤﺪ), রাসুল (আ.رَسُول) (ইপ) কাওসার (আ.ﻜﻭﺛﺮ), ফুরাত (আ.ﻔﺭﺍﺖ) (ইংপ) God, nectar, elixir (দেপ্র) এটি ‘আরবীয় পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’র ‘পালনকর্তা’ পরিবারের ‘আরবীয় পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ বিশেষ ও আরবীয় পৌরাণিক ‘পালনকর্তা দেবতা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; ইসলামী সংস্কারে উপোস পালনের জন্য গ্রহণকৃত প্রত্যুষাকে রূপকার্থে সাহরা (سَاهَرَةُ) বলা হয় ২. আরবীয় মরমীবাদে ও আরবীয় পুরাণে, জরায়ুর মধ্যে সর্ব জীবের ভ্রূণ লালনপালনে নিয়োজিত সুমিষ্ট ও সুপেয় শ্বেতবর্ণের অমৃতরসকে রূপকার্থে সাহরা (سَاهَرَةُ) বলা হয় (বাপৌছ) ঈশ্বর, উপাস্য, চোর, পতিতপাবন, পরমগুরু, প্রভু, মনের মানুষ ও সুধা (বাপৌচা) ননি, বিষ্ণু, মাণিক, রাজা, রাম, লালন, স্বরূপ ও হরি (বাপৌউ) অমৃতসুধা, গ্রন্থ, চন্দ্র, জল১, তীর্থবারি, পাখি৬, ফল ও ফুল১ (বাপৌরূ) সাঁই (বাপৌমূ) পালনকর্তা {আ. ‘سهر’ (সাহার)>}
সাহরি [ساهري] ⇒ সাহরা [ساهرة]।
উপোসের প্রত্যুষা খাওয়ার নিয়ম (The eating rules of vigil of fasting):
১. ইসলামী সংস্কার মতে; রমজান মাসে উপোস পালনের উদ্দেশ্যে প্রত্যুষা খাওয়া সুন্নত। যদি কেউ এমন অবস্থায় পতিত হয় যে আবশ্যক স্নান করে প্রত্যুষা খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই; তখন হাত-মুখ ধুয়ে আগে প্রত্যুষা খাবে। পরে স্নান করে প্রাতভক্তি করবে। কারণ; প্রত্যুষা খাওয়ার জন্য পবিত্রতা আবশ্যক নয়, বরং সুন্নত। আর তাপন করার জন্য পবিত্রতা আবশ্যক। স্নান আবশ্যক হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা করে নিতে হবে। বিনা কারণে অধিক সময় অপবিত্র অবস্থায় থাকা সমীচীন নয় (আল কুদুরি/ ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি)।
২. কোনো কারণে প্রত্যুষা খাওয়া সম্ভব না হলেও উপোস করতে হবে। কোনো প্রকার অজুহাত উপোস ছাড়ার জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। ইচ্ছাকৃতভাবে; প্রত্যুষা বর্জন করা আদর্শের পরিপন্থী। কারণ; প্রত্যুষা খাওয়া সুন্নত। তাছাড়া; নবী (সাঃ) বলেছেন; প্রত্যুষা ছাড়া উপোস করা ইহুদী-নাসারাদের অভ্যাস। তাই; প্রত্যুষা গ্রহণ করে ইসলামী উপোসের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যকে রক্ষা করা ইসলামী সাম্প্রদায়িক মতবাদের অনুসারীদের একান্ত কর্তব্য।
সাহরির সময় ও পরিমাণ (The time and quantity of vigil):
সকালের আগের সময়টাকে ঊষা বলা হয়। মিরকাত শরহে মিশকাত গ্রন্থে মোল্লা আলী কারি (রঃ) বলেছেন; ‘অর্ধরাত্রি থেকে প্রত্যুষার সময় শুরু হয়।’ প্রসিদ্ধ মুফাসসির আল্লামা জামাখ্শারি (রঃ) এবং ফকিহ আবুল লাইছ সমরকন্দি (রঃ) বলেছেন; প্রত্যুষার সময় হলো; রাত্রের শেষ তৃতীয়াংশ। প্রত্যুষা বিলম্বে খাওয়া সুন্নত। তবে; সন্দেহের সময় পর্যন্ত বিলম্ব করা যাবে না। তার আগেই নিরাপদ সময়সীমার মধ্যে পানাহার করা সুন্নত। এতে উপোস পালনও সহজ হয়। হজরত আবু সাইদ খুদরি (রাঃ) বলেছেন; রাসুলে করিম (সাঃ) বলেছেন; ‘তোমরা প্রত্যুষা খাও; যদি তা এক ঢোক জলও হয়।’ অন্যত্র বলেছেন; ‘তোমরা প্রত্যুষা খাও; যদি এক লোকমা খাদ্যও হয়।’ উপরিউক্ত হাদিস দ্বারা প্রত্যুষার গুরুত্ব বোঝা যায়। এক ঢোক জল, এক লোকমা খাদ্য, এক কাপ দুধ, সামান্য ফলমূল বা একটি খেজুরের মতো যত্সামান্য হলেও প্রত্যুষা গ্রহণ করা বরকতময় সুন্নত। এই বরকত ইহকাল ও পরকাল উভয়ের জন্যই।
এছাড়া; প্রত্যুষা খাওয়া সমস্ত দিন উপোস পালন করার জন্য অত্যন্ত সহায়ক, প্রত্যুষার সময় জেগে ওঠা উপোসের প্রতি আগ্রহের যথেষ্ট প্রমাণও বটে। প্রত্যুষার সময় সুখময় নিদ্রা বর্জন করে জেগে ওঠা প্রকৃতপক্ষে এক প্রকারের উপাসনা। এতে শেষ রাতে জেগে ওঠার অভ্যাস হয় এবং নিশির তাপন (তাহাজ্জুদ) করার সুযোগ হয়। প্রত্যুষার সময় জেগে ওঠা এক প্রকারের সাধনাও বটে। এই সময় কাঁইয়ের করুণা বর্ষিত হয়। কাঁই প্রেমীদের কাঁইয়ের নৈকট্য লাভের সর্বাপেক্ষা উত্তম সময়। যাঁরা এই শুভ সময় জেগে উঠে মহান কাঁইয়ের স্মরণ করেন; কাঁই তাঁদের স্বীয় ভালোবাসা ও নৈকট্য দানে ধন্য করেন।
আত্মদর্শন (Introspection):
সাম্প্রদায়িক উপোসের প্রত্যুষার জন্য সর্বদাই পবিত্র অন্ন-পানীয়ের কথা বলা হয়েছে। তাই; স্বভাবতই; প্রশ্ন জাগে যে; সেই পবিত্র অন্ন-পানীয় কি? আর কোথায় তার অবস্থান? এসব প্রশ্নের উত্তর হলো; “যা আছে ব্রহ্মাণ্ডে তাই আছে দেহভাণ্ডে।” অর্থাৎ; সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক বিশ্বে বর্ণিত ও আলোচিত সবকিছুই মানুষে বিদ্যমান। এককথায় মানুষে বিদ্যমান বিষয়বস্তু ও ইন্দ্রিয়াদির রূপক নামে ঈশ্বরায়ন, দেবতায়ন ও মানবায়ন করেই সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক দেবতা, দেবী, স্থান, কাল, সংখ্যা, পরিভাষা সৃষ্টি করা হয়।
আলোচ্য সাহরিও (প্রত্যুষা) তার ব্যতিক্রম নয়। মানুষের মধ্যে অনেক প্রকার রস রয়েছে। এরমধ্যে; ঋতুমতীর প্রতি পবিত্রতার মধ্যে এক প্রকার পবিত্র জলের উদ্ভব হয়। তাকে বাংলায় অমৃত বলা হয়। একেই পবিত্র জল বলা হয়। এছাড়াও; একে আরবিতে কাওসার, জানজাবিল, সালসাবিল ও ফুরাত বলা হয়। অন্যদিকে; একে ইংরেজিতে নেক্টার, এম্ব্রোজিয়া বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় এই জলের অসংখ্য নাম রয়েছে। এখানে এই জলকেই পবিত্র অন্ন-পানীয় বলা হয়েছে। এই জলকেই ‘سَهَرِىٌ’ (সাহরি) বলা হয়।
নয় প্রহরে দেহপঞ্জিকা চলে। যথা; ১. স্রাবণ্য ২. ঊষা ৩. নিসা ৪. ঊর্ধ্বা ৫. শঙ্কা ৬. বিপদ ৭. নীরব ৮. নিরাপদ ও ৯. অর্যমা (তারমধ্যে; রাত; তিন প্রহর। যথা; ১. অর্যমা ২. স্রাবণ্য ও ৩. ঊষা। দিন ছয় প্রহর। যথা; ১. নিশা ২. ঊর্ধ্বা ৩. শঙ্কা ৪. বিপদ ৫. নীরব ও ৬. নিরাপদ)। উল্লেখ্য; দেহ পঞ্জিকায় কয়েক প্রকার রাত রয়েছে। সারাবিশ্বের সব মরমীবাদে ও পুরাণে শক্তিশালী ও দুর্বল প্রেক্ষিতে দিন রাত সৃষ্টি করা হয়।
পৌরাণিক দিন-রাত নির্মাণ সূত্র (Mythological day-night construction formula):
ভূমিকা (প্রলেগমেনন):
আভিধানিকভাবে সূর্য দৃশ্যমান হওয়ার পর হতে অদৃশ্য হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে দিন বলা হয়। অন্যদিকে; সূর্য অদৃশ্য হওয়ার পর হতে দৃশ্যমান হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে রাত বলা হয়। কিন্তু মরমীবাদে ও পুরাণে বড় ও শক্তিশালী বিষয়বস্তুকে দিন এবং ছোট ও দুর্বল বিষয়বস্তুকে রাত বলা হয়।
পৌরাণিক দিন-রাত সূত্র (The mythological day-night formula):
‘প্রবল কোনো সত্তাকে দিন ধরতে হলে অবশ্যই সমগোত্রীয় অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোনো সত্তাকে রাত ধরতে হবে।’
পৌরাণিক দিন-রাত সূত্রের সংজ্ঞা (Definition of mythological day-night formula):
পৌরাণিক কাহিনীর দিন-রাত নির্ধারণ নিয়মকে ‘পৌরাণিক দিন-রাত সূত্র’ বলে।
সারা বিশ্বের সব সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মরমীবাদ, পুরাণ ও গুরুবাদী পুস্তক-পুস্তিকায় বড় ও শক্তিশালী বিষয়বস্তুকে দিন ধরা হয় ও ছোট ও দুর্বল বিষয়বস্তুকে রাত ধরা হয়। আর এগুলোকে ‘পৌরাণিক দিন-রাত’ বলা হয়। এর সূত্রের অধীনে বেশকিছু প্রেক্ষিত রয়েছে।
পৌরাণিক দিন-রাত (Mythological day-night):
দেহ পঞ্জিকার দিন-রাত (The day-night of the body)
দিন (Day) রাত (Night)
১. গুরুকে দিন ধরতে হলে; শিষ্যকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
২. জ্ঞানকে দিন ধরতে হলে; মনকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৩. জ্ঞানীকে দিন ধরতে হলে; মূর্খকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৪. সবলকে দিন ধরতে হলে; দুর্বলকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৫. পবিত্রকালকে দিন ধরতে হলে; রজকালকে (ঋতুমতীর ক্ষেত্রে) অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৬. পবিত্রতাকে দিন ধরতে হলে; অপবিত্রতাকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৭. পিতাকে দিন ধরতে হলে; মাতাকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৮. যৌবনকালকে দিন ধরতে হলে; বার্ধক্যকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৯. সুস্থতাকে দিন ধরতে হলে; অসুস্থতাকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
১০. বিজয়কে দিন ধরতে হলে; পরাজয়কে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
১১. ঋতুমতীর পবিত্রতার ২৭ দিনকে দিন ধরতে হলে; ঋতুমতীর রজকালের সাড়ে তিন দিনকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
১২. ঋতুমতীর পবিত্রতার ২৮ দিনকে দিন ধরতে হলে; ঋতুমতীর রজকালের তিন দিনকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
১৩. ঋতুমতীর পবিত্রকালকে দিনকে দিন ধরতে হলে; ঋতুমতীর রজকালকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
১৪. ঋতুমতীর পবিত্রতার ২১ দিনকে (১. নিশা ২. ঊর্ধ্বা ৩. শঙ্কা ৪. বিপদ ৫. নীরব ও ৬. নিরাপদ এই ছয় প্রহরকে) দিন ধরতে হলে; ঋতুমতীর রজকালের আগের এক প্রহর, রজকাল ও রজকালের পরের এক প্রহরকে (১. অর্যমা ২. স্রাবণ্য ও ৩. ঊষা এই তিন প্রহর) অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
সারাবিশ্বের সব সাম্প্রদায়িক ও পারাম্পরিক উপোসের ক্ষেত্রে ঋতুমতীর পবিত্রকালের ২৭ দিনকে একদিন ধরা হয়। আর ঊষা প্রহরে অমৃতসুধা পান করার দ্বারা সাহরি ও অর্যমায় অমৃত মধু পান করার দ্বারা ইফতারি বুঝানো হয়। ইসলামী সাহরি সংস্কারের ক্ষেত্রেও তাই ধরা হয়েছে। অর্থাৎ; উপোস করতে হলে অবশ্যই ঊষা প্রহরে মানবদেহে প্রাপ্ত সাদা অমৃতসুধা দ্বারা সাহরি গ্রহণ করতে হবে। আর অর্যমা প্রহরে মানবদেহে প্রাপ্ত কালো অমৃত মধু দ্বারা ইফতারি গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো অন্ন-পানীয় দ্বারা সাহরি ও ইফতারি দ্বারা উপোস পালন করা যাবে না।
সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক সমাজে উপোসের নামে যা করা হচ্ছে; তা সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক আনুষ্ঠানিকতা। তাই; এসব উপোস দ্বারা কোনো সাধকের আধ্যাত্মিক ও মানসিক কোনো প্রকার উন্নতি হবে না। সেজন্য; সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক এসব উপোস নিয়ে কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি সমীচীন নয়।
ইফতার (اِفْطَارُ):
ভূমিকা (Introduction):
আরবি ইফতারি পরিভাষাটির মাসদার ও অর্থ নিয়ে মুসলমান সমাজের অল্প শিক্ষিত মোল্লা-মুন্সিদের মধ্যে মতভেদের অন্ত নেই। যার মনে যা অনুমান হচ্ছে, সে তাই বলতে ও লেখতে ব্যস্ত। প্রকৃত বিষয় বা প্রকৃত ব্যাপার উদ্ঘাটন করার আগ্রহ কারো নেই।
ইফতার اِفْطَارُবি ১. নাস্তা, প্রাতরাশ, পারণ, উপবাসভঙ্গ breakfast, breaking of fasting ২. ফাঁড়া, চিরা, বিরতি, breaches ৩. এমন সান্ধ্য অন্ন-পানীয় (food-drinks) যা দ্বারা উপোস ভঙ্গ করা হয় (ভাঅ) ভোজন করা, পানাহার করা, অনশন ভঙ্গ করে কিছু খাওয়া বা পান করা, brekker (ব্য্য) আরবি ‘فطر’ (ফতর) হতে ‘ﺍﻔﻄﺎﺮ’ (ইফতার) পরিভাষাটি এসেছে। যার অর্থ; ভঙ্গ করা, ছিঁড়ে ফেলা (প্র) ইসলামী পুরাণ অনুসারে; প্রভাত হতে উপবাস পালন করে সূর্যাস্তকালে কিছু খেয়ে বা পান করে উপবাস ভঙ্গ করা (শ্ববি) মধু রস পান, ঊষায় সাধনবলে মানবদেহ হতে অমৃতসুধা (মানব জল) আহরণ ও পান দ্বারা উপোস আরম্ভ করা (অটল গমনাগমন সাধন আরম্ভ করা)। আবার অর্যমা প্রহরে সাধনবলে মানবদেহ হতে মধুবৎ মিষ্ট মানবজল আহরণ ও পান দ্বারা উপোস সমাপ্ত করা (শ্ববি) অনন্ত, ঈশ্বর, কালোঈশ্বর, প্রজাপতি, হিরণ্যগর্ভ, বিধাতা, বিবস্বান, বিরিঞ্চি, ব্রহ্মা, স্বায়ম্ভু, ‘শিং বোঙ্গা’, Lord, ‘ﺍﻟﻟﻪ’ (আল্লাহ) (আপ্রশ) নির্মাতা, সৃষ্টিকর্তা, জগৎস্রষ্টা, creator, author, খালিক্ব (আ.ﺨﺎﻟﻖ) (রূপ্রশ) কাজলা, কালা, কালিয়া, কালু, কৃষ্ণ, কেলে, শ্যাম, শ্যামল, শ্যামলা, Swart, Raven, Blackish, Bigwig, Embryonic, ‘مسود’ (মাসুদ), ‘سوارت’ (সোয়ারাত) (ইংপ) maker, designer (ইপৌচা) ইসা (আ.ﻋﻴﺴﻰٰ), মসিহ (আ.ﻤﺴﻴﺢ), শাম (আ.ﺷﺄﻢ), শামস (আ.ﺸﻤﺲ), শিশ (আ.ﺸﻴﺶ) (দেপ্র) এটি ‘আরবীয় পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’র ‘সৃষ্টিকর্তা’ পরিবারের ‘আরবীয় পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; উপোস ভঙ্গ করার জন্য গ্রহণকৃত অন্ন-পানীয়কে ‘ইফতার (اِفْطَارُ)’ বলা হয় ২. আরবীয় মরমীবাদে ও আরবীয় পুরাণে, কালো বর্ণের অমৃত মানব জলকে রূপকার্থে ‘ইফতার (اِفْطَارُ)’ বলা হয় (বাপৌছ) আদি, সূর্য, স্রষ্টা, স্বায়ম্ভু ও হর (বাপৌচা) অসিত, কালা, কালু, কৃষ্ণ ও ব্রহ্মা (বাপৌউ) ঘি, নীর, পীযূষ, মধু ও শস্য (বাপৌরূ) কাঁই (বাপৌমূ) সৃষ্টিকর্তা {আ. فطر (ফতর)>}
ইফতারি ﺍﻔﻄﺎﺮﻯ বিণ খণ্ডিত, কর্তিত (প্র) ইসলামী পুরাণ অনুসারে; যে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ দ্বারা অনশন ভঙ্গ করা হয় (শ্ববি) মধু রস, মানবদেহে বিদ্যমান মধুবৎ মিষ্ট রস বিশেষ (ব্য্য) কোন সিদ্ধ সাধকের সুধা রস পানের দ্বারা অটলত্ব অক্ষুন্ন রেখে অর্যমা প্রহরে মুধ রস পানের দ্বারা অটলত্ব ভঙ্গ করা {আ.ইফ্তার. ﺍﻔﻄﺎﺮ+ বাং.ই}
ইফতার করার আনন্দ (The joy of breakfast):
উপবাসী সারা দিন উপোস করে সূর্যাস্তের পরই যেসব খাদ্য-পানীয় গ্রহণ করে উপোস ভঙ্গ করে তাকে ইফতার বলা হয়। সাধারত ইফিতারের আভিধানিক অর্থ উপোস ভঙ্গ করা। আরবি ‘ফুতুর’ শব্দ থেকে ইফতার পরিভাষার উদ্ভূত। ইফতার অর্থ নাশতা করা, হালকা খাদ্য গ্রহণ করা। ইফতার শব্দের অন্য অর্থ বিরতি, ভঙ্গ করা বা দিন ও রাতের মধ্যবর্তী সময়ের হালকা খাবার। শরিয়তের পরিভাষায় সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর উপোস সমাপ্তির জন্য পানাহার করাকে ইফতার বলা হয়। উপোস পালনে ইফতারের গুরুত্ব অপরিসীম। সময়মতো ইফতার করার মধ্যে রয়েছে অশেষ কল্যাণ।
সারা দিন উপোস করে যথাযথভাবে সময়মতো ইফতার করার গুরুত্ব অত্যধিক। সূর্যাস্তের পরপরই ইফতার করা উত্তম। অন্ধকার হওয়ার জন্য বিলম্ব করা উচিত নয়। প্রত্যুষা বিলম্বে করা আর সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা অধিক উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন; ‘তোমরা ইফতারের সময় হওয়ামাত্র ইফতার করো; এতটুকু বিলম্ব কোরো না।’ হাদিস শরিফে বলা হয়েছে; ‘মানুষ তত দিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যত দিন তারা ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করবে।’ (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।
ইফতারের পূর্বমুহূর্তে দোয়ার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। ইফতারের সময় এ দোয়া পড়তে হয়, ‘আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু’ অর্থাৎ ‘হে কাঁই! তোমার জন্যই রোজা পালন করলাম, আর তোমার প্রদত্ত রিজিক দিয়েই ইফতার করছি।’ ইফতারের সময়টি যেমন সুনির্দিষ্ট করা, তেমনি এ সময়ে কাঁইয়ের কাছে উপবাসীর দোয়াও কবুল করার পরম মুহূর্ত। ইফতারের সময় উপবাসীর দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। তাই প্রত্যেকের উচিত ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে দোয়া করা। নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, ‘ইফতার করার সময় উপবাসীর দোয়া কবুল হয়ে থাকে।’ (আবু দাউদ শরিফ)।
যে পর্যন্ত সূর্যাস্ত সম্বন্ধে কিছুমাত্র সন্দেহ থাকে; সে পর্যন্ত ইফতার করা জায়েজ নয়। সূর্যাস্তের ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে ইফতার করতে হবে। যখন নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে সূর্য অস্ত গেছে, তখন আর দেরি না করে তাড়াতাড়ি ইফতার করা উত্তম। হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত আছে যে; ‘মহান প্রতাপশালী কাঁই বলেন; আমার দাসদের মধ্যে যারা দ্রুত ইফতার করে; তারাই আমার কাছে অধিকতর প্রিয়।’ এ সম্পর্কে নবী করিম (সাঃ) বলেছেন; ‘আমি ওই ব্যক্তিকে সর্বাধিক ভালোবাসি; যে ইফতারের সময় হওয়ামাত্র ইফতার করে নেয়।’ (তিরমিজি শরিফ)
ইফতারের সময় হালাল দ্রব্য দিয়ে ইফতার করা মহাপুণ্যের কাজ। খোরমা, খেজুর, কিশমিশ অথবা জল দিয়ে ইফতার করা ভালো। খুরমার অভাবে অন্য কোনো মিষ্টিজাতীয় খাবার যেমন শরবত বা দুধ দিয়ে অথবা জল দিয়ে ইফতার করা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নামাজের আগে কয়েকটি তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেজুর না পেলে শুকনো খেজুর, অর্থাৎ খোরমা দিয়ে ইফতার করতেন। আর যদি তাও না পেতেন, তাহলে কয়েক ঢোক জল পান করে নিতেন। উপবাসী সারা দিন উপোস করে সূর্যাস্তের পর যখন ইফতার করেন, তখন সারা দিনের ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ক্লান্তি, শ্রান্তি ভুলে গিয়ে অনাবিল আনন্দে বিভোর হন। উপোস পালনকারীর জন্য কাঁই পুরস্কারস্বরূপ ইফতারের ব্যবস্থা রেখেছেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন; ‘উপবাসীর জন্য দুটি খুশি। এর একটি হলো; তার ইফতারের সময় আর অপরটি হলো; কাঁইয়ের সঙ্গে তার সাক্ষাতের সময়।’ (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।
কোনো উপবাসীকে ইফতার করানো অতি উত্তম কাজ। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন; ‘যে ব্যক্তি কোনো উপবাসীকে ইফতার করাবে, তা তার জন্য পাপ মুক্তি ও নরক থেকে মুক্তির কারণ হবে এবং সে উপবাসীর সমান পুণ্যের অংশীদার হবে।
রমজান মাসের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে ইফতার। উপবাসী ধনী-নিঃস্ব নির্বিশেষে তার পরিবারের ছোট-বড় সব সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে সাধ্য অনুযায়ী রকমারি ইফতারসামগ্রী সামনে রেখে নির্দিষ্ট সময়ের অর্থাৎ সূর্যাস্তের অপেক্ষায় বসে থাকে। এহেন কঠিন প্রতীক্ষার মধ্যে প্রকৃত উপবাসীর খোদাভীতির পরম শান্তিময় নিদর্শন প্রকাশ পায়। কাঁই তাঁর দাসদের ইফতার মুহূর্তে ফেরেশতাদের ডেকে বলেন; ‘দেখো! আমার দাসদের কাঁই ভীরুতার কী অপূর্ব রূপ।’ এর ভেতরে রয়েছে কাঁইভীতি, ন্যায়নিষ্ঠা, সংযম এবং প্রবৃত্তি দমনের চরম নিদর্শন।
সূর্যাস্তের পর ইফতারের সময় উপবাসীর নিজের সঙ্গে পথিক, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন নির্বিশেষে অসহায় হতদরিদ্রকে সর্বান্তঃকরণে ও সবিনয়ে ইফতারিতে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান করে থাকেন। এতে ইসলামের পারস্পরিক ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধে সবাই উদ্বুদ্ধ হন এবং নিজেদের ইফতারি পরস্পর ভাগাভাগি করে খাওয়ার মধ্যে চরম তৃপ্তি, অশেষ পুণ্য ও কল্যাণ লাভ করেন। উপবাস সাধনার মধ্য দিয়ে মানুষের আত্মশুদ্ধি, সংবেদনশীলতা, পারস্পরিক সহমর্মিতা, ধনী-গরিবের মধ্যকার ভালোবাসার উপলব্ধি ঘটে। এবং ইফতার অনুষ্ঠানে এটি আরও অধিক উজ্জ্বল ও উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। তাই; সূর্যাস্ত সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়ার পর উপবাসীর দ্রুত ইফতার করার মাধ্যমে আনন্দ লাভের জন্য সচেষ্ট হওয়া উচিত।
আত্মদর্শন (Introspection):
সাম্প্রদায়িক উপোস ভঙ্গের জন্য সর্বদাই পবিত্র অন্ন-পানীয়ের কথা বলা হয়েছে। তাই; স্বভাবতই; প্রশ্ন জাগে যে; সেই পবিত্র অন্ন-পানীয় কী? আর কোথায় তার অবস্থান? এসব প্রশ্নের উত্তর হলো; “যা আছে ব্রহ্মাণ্ডে তাই আছে দেহভাণ্ডে।” অর্থাৎ; সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক বিশ্বে বর্ণিত ও আলোচিত সবকিছুই মানুষে বিদ্যমান। এককথায় মানুষে বিদ্যমান বিষয়বস্তু ও ইন্দ্রিয়াদির রূপক নামে ঈশ্বরায়ন, দেবতায়ন ও মানবায়ন করেই সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক দেবতা, দেবী, স্থান, কাল, সংখ্যা, পরিভাষা সৃষ্টি করা হয়।
আলোচ্য ইফতারিও এর ব্যতিক্রম নয়। মানবদেহে প্রাপ্ত কালো অমৃত মধু দ্বারা উপোস ভঙ্গ করা উত্তম। অর্থাৎ; মানবদেহে প্রাপ্ত সুধা দ্বারা উপোসের প্রত্যুষা গ্রহণ করা ও মানবদেহে প্রাপ্ত অমৃত মধু দ্বারা উপোস ভঙ্গ করাই সঠিক নিয়ম। কিন্তু সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক ঠাক-পুরুৎ ও মোল্লা-মুন্সিরা দেহতত্ত্ব না জানা ও না বুঝার কারণে কেবল সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক সংস্কারের আনুষ্ঠানিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
কুরানে পরিষ্কারভাবে বর্ণিত হয়েছে যে; “বিরতির রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। নিশ্চয়; কাঁই জেনেছিলেন যে; তোমরা নিজদের ক্ষতি করছিলে। অতঃপর; তিনি তোমাদের সন্ত্বাপ স্বীকৃতি করেছেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। অতএব; এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং কাঁই তোমাদের জন্য; যা লেখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান করো। আহার করো ও পান করো; যতক্ষণ না কালোরেখা থেকে ঊষার সাদারেখা স্পষ্ট হয়। অতঃপর; রাত পর্যন্ত বিরতি পূর্ণ করো। তোমরা মন্দিরে অবস্থানরত সময়ে স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা কাঁইয়ের সীমারেখা। সুতরাং; তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই; কাঁই তাঁর নিদর্শনগুলো মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন; যাতে তারা সাবধানতা অবলম্বন করে।” (কুরান; ২ নং সুরা বাকারা; আয়াত- ১৮৭)।
“তুমি কি দেখ নি কাঁই আকাশ থেকে জল বর্ষণ করেন, তারপর; তা দিয়ে আমরা বিচিত্র বর্ণের ফলমূল উৎপাদন করি, পাহাড়ের মধ্যে রয়েছে নানা বর্ণের শুভ্র ও লাল পথ এবং (কিছু) মিশকালো।” (কুরান; ৩৫ নং সুরা ফাতির; আয়াত- ২৭)।
উপরোক্ত আয়াত হতে পরিষ্কারভাবে জানা যায় যে; মানবদেহের মধ্যে সাদা ও কালো রঙের সাধনীয় জল বিদ্যমান। সাধনবলে আহরণ করে সাদা জল দ্বারা প্রত্যুষা এবং কালো জল দ্বারা উপোস ভঙ্গের কথা বলা হয়েছে। এসব আলোচনার পুরোটাই করা হয়েছে দেহ পঞ্জিকা অনুসারে। আমাদের আলোচ্য সাহরি ও ইফতারিও দেহ পঞ্জিকা দ্বারা আলোচনা করা হয়েছে। তাই; কোন চাঁদ দ্বারা তারাবিহ, রোজা, ফেতরা, ঈদ, সাহরি ও ইফতার করবেন সিদ্ধান্ত আপনার।