ইউক্রেনের রাশিয়ার আক্রমণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ-এর রয়্যাল ক্যাসলে ভাষণ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, কিয়েভ গর্বিত, অটল ও মুক্ত। যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবার ইউক্রেন সফরের একদিন পর তিনি এই ভাষণ দিলেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
পোল্যান্ডে বাইডেন বলেন, এক বছর আগে বিশ্ব কিয়েভের পতনের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু আমি এক দিন আগে কিয়েভ সফর করে এসেছি। আমি বলতে পারি, কিয়েভ দৃঢ়তার সঙ্গে অটল রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণে সময়ের সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে বিশ্ব, ন্যাটো ও সব গণতান্ত্রিক দেশ। এক বছর পরও রাশিয়ার আক্রমণকে অন্যভাবে দেখছে না বিশ্ব।
জো বাইডেন বলেছেন, আমরা গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব, আগ্রাসনমুক্ত মুক্ত জীবনের অধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছি।
বাইডেন আরও বলেছেন, ইউক্রেনে আক্রমণের নির্দেশ দিয়ে পুতিন ভেবেছিলেন আমরা পিছু হটব। তিনি ভুল ছিলেন। গণতন্ত্র অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল। সহজ জয়ের বদলে পুতিন রুশ সেনাবাহিনীকে বিশৃঙ্খলায় ঠেলে দিয়েছেন। পুতিন ভেবেছিলেন ন্যাটোতে ফাটল ও বিভাজন হবে। কিন্তু উল্টো ন্যাটো আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে শক্তিশালী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ন্যাটো বিভক্ত হবে না এবং ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন কমবে না। রাশিয়ার নৃশংসতাকে ছাড় দেওয়া হবে না এবং ইউক্রেন কখনও রাশিয়ার জয়ের ক্ষেত্র হবে না।
রুশ প্রেসিডেন্টকে আক্রমণ করে বাইডেন বলেছেন, পুতিন ভেবেছিলেন পশ্চিমারা রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু উল্টো বিকল্প বাজার খুঁজে পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করে রাশিয়ার জ্বীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনা হয়েছে।
বাইডেন বলেন, তিনি ভেবেছিলেন তার মতো স্বৈরাচারী কেবল কঠোর। কিন্তু গণতান্ত্রিক নেতারা ছিলেন আরও বলিষ্ঠ এবং এরপর তিনি আমেরিকানদের লৌহ সংকল্পের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন।
ভাষণে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাহস ‘আগুন ও ইস্পাতে তৈরি’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি যুক্ত করেন, বিশ্বের গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়েছে, দুর্বল নয়। কিন্তু বিশ্বের স্বৈরাচাররা আরও দুর্বল হয়েছে।
রাশিয়ার মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচার হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাইডেনের ভাষণের আগে পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা ভাষণ দেন। দুদা বলেছেন, তিনি মনে করেন রাশিয়া ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ছেড়ে যাবে এবং কিয়েভ অবশ্যই যুদ্ধ জিতবে।
এর আগে সোমবার অঘোষিত কিয়েভ সফর শেষে সন্ধ্যায় পোল্যান্ড পৌঁছান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।