দুই সপ্তাহ আগে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের লাখ লাখ বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গতকাল সোমবার ক্ষতিগ্রস্ত হাতায় প্রদেশ পরিদর্শনকালে বলেছেন, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চলে দুই লাখ বাড়ি নির্মাণ করা হবে। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে এরদোয়ানের এমন মন্তব্যের পর রাতেই আবার দুই দফা ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে তুরস্কে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল রাত ৮টা ৪ মিনিটে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায় প্রদেশে এ ভূমিকম্প হয়। প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৪। এর ঠিক ৩ মিনিট পরেই ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ছয়জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
গতকাল রাতে নতুন করে ভূমিকম্প আঘাত হানার পরে এরদোয়ানের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে তিনি বলেছেন, স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ১ লাখ ১৮ হাজার ভবন ধসে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভবন ধসের ঘটনা ঘটেছে হাতায়, কাহরামানমারাস ও মালটিয়া প্রদেশে। নতুন করে এসব অঞ্চলে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৯টি ভবন নির্মাণ করা হবে। এসব নির্মাণকাজ মার্চেই শুরু হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তুরস্কে ভবন নির্মাণের সময় বিল্ডিং কোড মানার আইন থাকলেও বেশির ভাগ ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আইন মানে না। ফলে বেশির ভাগ ভবন ভূমিকম্প সহ্য করতে পারে না। তবে এরদোয়ান প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এখন থেকে ভবন নির্মাণ আইনকে আরও কঠোর করা হবে।
নতুন বাড়িগুলো ফন্ট লাইন থেকে দূরে পাহাড়ের কাছাকাছি তৈরি করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এরদোয়ান বলেন, ‘আশা করি আমরা এক বছরের মধ্যেই ঘরহারা মানুষকে নতুন বাড়িতে নিয়ে যেতে পারব।’
এরদোয়ান আরও জানান, উদ্ধারকারীরা এ পর্যন্ত ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৩৪ জনকে উদ্ধার করেছে। ৯টি প্রদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে। তবে হাতায় ও কাহরামানমারাসে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।