বাংলাদেশের রামপাল কেন্দ্রে ফের জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে। কয়লা সংকটে টানা এক মাস ধরে বন্ধ থাকার পর বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টা থেকে উৎপাদন শুরু হয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে। প্রথম ইউনিট থেকে প্রথমে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের সরবরাহ করা হয়।
বৃহস্পতিবার বাগেরহাটের রামপালে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সুপার থার্মাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিআইএফপিসিএল প্রকল্প পরিচালক সুভাষ চন্দ্র পান্ডে।
তিনি বলেন, “কয়লা সংকটের কারণে রামপাল বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি ৩০ হাজার টন কয়লা নিয়ে একটি বিদেশি জাহাজ মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছায়। ওই ৩০ হাজার টন কয়লা দিয়েই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট বুধবার রাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়।
উৎপাদিত ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রাত সাড়ে ১১টা থেকে জাতীয় গ্রিডের সরবরাহ করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে উৎপাদন বাড়িয়ে এ মাসের মধ্যে প্রথম ইউনিটটি পুরো মাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, “আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে আরও ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে একটি বিদেশি জাহাজ মোংলা বন্দরে পৌঁছাবে। প্রতিদিন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট চালু রাখতে প্রয়োজন হয় ৫ হাজার টন কয়লার। এখন ইন্দোনেশিয়া থেকে নিয়মিত কয়লা আমদানির নিশ্চায়তা পাওয়ায় রামপাল কেন্দ্রটি বিদ্যুৎ উৎপাদনে আর কোনও প্রতিবন্ধকতা নেই।”
সুভাষ চন্দ্র পান্ডে জানান, একইসঙ্গে ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রেটির দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন আগামী জুন মাসে শুরু হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হলে দেশে চলমান লোডশেডিং বন্ধ হবে।
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈগর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ শুরু হবার ১০ বছর পর গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে। কিন্তু কয়লার অভাবে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির।