তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের ১০টি প্রদেশে ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর লক্ষ্যে আর্মেনিয়ার সাথে সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে সীমান্ত খুলে দেওয়ার এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আর্মেনিয়া থেকে মানবিক সহায়তা বহনকারী পাঁচটি ট্রাক তুরস্কের ইগদির প্রদেশের অ্যালিকান সীমান্ত অতিক্রম করেছে। এর আগে, সর্বশেষ ১৯৮৮ সালে আর্মেনিয়ায় ভয়াবহ এক ভূমিকম্প আঘাত হানার পর এই সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় তুরস্কের রেড ক্রিসেন্ট আর্মেনিয়ায় ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া মানুষকে মানবিক সহায়তা দিতে এই সীমান্ত ব্যবহার করেছিল।
তুরস্কের আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত আইনপ্রণেতা গ্যারো পাইলান এক টুইট বার্তায় বলেছেন, চলুন এই মহাবিপর্যয়ে কিছু ভালো কাজ করি। সংহতি জীবন বাঁচায়!
এদিকে, ভয়াবহ এই ভূমিকম্পের পর বিশ্বের অন্তত ১০০টি দেশ তুরস্ককে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের ত্রাণ তৎপরতায় সহায়তার জন্য বিশ্বের ৯৯টি দেশ তুরস্ককে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।
তবে ইতোমধ্যে বিশ্বের ৬৯টি দেশের অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে। আর এই উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়েছেন এসব দেশের ৮ হাজার ৩২৬ জন উদ্ধারকারী।
গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে শতাধিক আফটারশক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাশ প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।
কয়েক দশকের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে দুই দেশে এখন পর্যন্ত ২৪ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া হাজার হাজার মানুষকে উদ্ধারে ব্যাপক প্রচেষ্টা চললেও এখনও অনেকের কাছে পৌঁছানোই সম্ভব হয়নি।